সাবেক বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার উইন্সটন চার্চিল মুসলমান হয়ে যেতে চেয়েছিলেন কি? ইসলাম ধর্মের প্রতি তার গাঢ় অনুভ’তির কথা তিনি নিজেই প্রকাশ্যে বলতেন। আবার ধর্মটির সমালোচনাও করেছেন। কিন্তু ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার কথা তিনি গভীরভাবে ভেবেছিলেন কি? এমন প্রশ্ন উঠছে তার কাছে লেখা এক চিঠি আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে। তার পরিবার তাকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার ইচ্ছার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়েছিল। সম্প্রতি উদ্ধার হওয়া একটি চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের খবরে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী চার্চিল ইসলামের প্রতি প্রচ- আকৃষ্ট হয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বৃটেনকে নেতৃত্ব দেয়া চার্চিল পূর্বের সংস্কৃতির প্রতিও অনুরক্ত হয়ে উঠেছিলেন। এক পর্যায়ে তার পরিবার তাকে মুসলিম হওয়া থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করে।
১৯০৭ সালের একটি চিঠিতে চার্চিলকে তার হবু শ্যালিকা একটি চিঠি লিখেন। সেখানে তার প্রতি মিনতি জানিয়ে বলা হয়, দয়া করে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ো না। তোমার মধ্যে প্রাচ্যের স্বভাব দেখতে পেয়েছি আমি। তুমি যদি ইসলামের সং¯পর্শে আসো, তবে তোমার ধর্মান্তর তোমার চিন্তার চেয়েও বেশি প্রভাব ফেলবে। তোমাকে হত্যার আহ্বান আসতে পারে। তুমি কি জানো না আমি কি বোঝাতে চাইছি? এর বিরুদ্ধে লড়াই করো।
ক্যাম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন রিসার্চ ফেলো ওয়ারেন ডকটার এ চিঠি আবিষ্কার করেন। ল্যাডি গুইয়েন্ডোলাইন এ চিঠিটি লিখেছিলেন। তিনি পরে চার্চিলের ভাই জ্যাককে বিয়ে করেন।
তবে ড. ডকটার বলেন, চার্চিল কখনই অত সিরিয়াসভাবে ধর্মান্তরের কথা বিবেচনা করেননি। সে সময় কমবেশি নাস্তিকই ছিলেন তিনি। তবে তিনি ইসলামি সংস্কৃতির প্রতি অনুরক্ত ছিলেন। ভিক্টোরিয়ার সময়কালে এ প্রবণতা স্বাভাবিক ছিল। সুদানে বৃটিশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা হিসেবে ইসলামি সমাজ ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণের সুযোগ ছিল তার। ১৯০৭ সালে লেডি লাইটনের কাছে লেখা এক চিঠিতে চার্চিল লিখেছিলেন যে, তার ইচ্ছা তিনি যদি একজন পাশা হতে পারতেন! তৎকালীন অটোম্যান বা ওসমানীয় সাম্রাজ্যে ‘পাশা’ ছিল একটি বিশেষ পদবী। এমনকি গোপনে আরব পোশাক পরিধান করতেন তিনি। ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও কবি উইলফ্রেড এস. ব্লান্টের কাছে এ কথা তিনি প্রকাশও করেছিলেন।