আরিফ উদ্দিন, গাইবান্ধা থেকেঃ গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলায় চতুর্থ

ধাপে ৭ মে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১১ ইউনিয়নের মধ্যে ৭ ইউনিয়নে

ক্ষমতাসীনদল আওয়ামীলীগের ৮জন বিদ্রোহী প্রাার্থী নির্বাচনী মাঠে

নেমেছেন। দলীয় প্রার্থী থাকা সত্বেও এসব বিদ্রোহী প্রার্থীরা নিজেদের

ইমেজে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সোমবার

মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও এসব বিদ্রোহী প্রার্থীর কেউ তাদের

মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। তবে উপজেলার ১১ ইউনিয়নে বিএনপি,

জাতীয়পার্টি ও ওয়ার্কাস পার্টির একক প্রার্থী মাঠে রয়েছেন।

উপজেলার ১নং রসুলপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ইউনিয়ন

আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুল গফুর মিয়া। তার বিপরীতে ওই ইউনিয়নে

আ’লীগের দু’জন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন ইউনিয়ন যুবলীগের

সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আলী সৈয়ব ও আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক ইউপি

চেয়ারম্যান রবিউল করিম দুলা। এছাড়া ওই ইউনিয়নে বিএনপি’র প্রার্থী

মেহেদী হাসান ও ওয়ার্কাসপার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে শ্যামল

সরকার প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।

২নং নলডাঙ্গা ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ

সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম নয়ন। এখানে আ’লীগের কোন বিদ্রোহী

প্রার্থী নেই। এছাড়া এ ইউনিয়নে বিএনপি’র ডা. নুরুন্নবী আহম্মেদ

লিটু, জাতীয় পার্টির নেতা বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান নুর আলম নান্টু,

স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল গফুর ও মোহাম্মদ রেজাউল করিম প্রতিদ্বন্ধিতা

করছেন।

৩নং দামোদরপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রাার্থী সাদুল্যাপুর

উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এজেডএম সাজেদুল ইসলাম স্বাধীন।

তার বিপরীতে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন উপজেলা

যুবলীগের সহ-সভাপতি ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মনোয়ারুল হাসান

জীম মন্ডল। এছাড়া এ ইউনিয়নে বিএনপির সোহরাব হোসেন সরকার ও

জাতীয়পার্টি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সাবেক চেয়ারম্যান

নুরুন্নবী আকন্দ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে ওই ইউনিয়নের বিদ্রোহী

প্রার্থী মনোয়ারুল হাসান জীম মন্ডল বলেন, ‘জনসাধারণের দাবীর মূখে

তিনি নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন। এবারের নির্বাচনেও তিনি জয়ের

ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।’

৪নং জামালপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক ইউপি

চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান মন্ডল। বিএনপি’র প্রার্থী নুরুল ইসলাম মন্ডল ও

জাতীয়পার্টির প্রার্থী বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রেজা।

৫নং ফরিদপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী হয়েছেন ইউনিয়ন

আওয়ামীলীগ সভাপতি ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান নুর আজম মন্ডল নীরব। তার

বিপরিতে বিদ্রোাহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন সাদুল্যাপুর

উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি কাহার আহম্মেদ শাহিন মিয়া।

তবে শাহীন মিয়া দল থেকে স্ব-ইচ্ছায় পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী

হয়েছেন। এছাড়া ওই ইউনিয়নে বিএনপি’র আইয়ুব আলী সরকার সাদা ও

সফিকুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।

৬নং ধাপেরহাট ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী হয়েছেন

ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক শফিকুল কবির মিন্টু। তার

বিপরিতে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাবেক

সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম (নওশা)। এখানে বিএনপি’র সাদুল্যাপুর

উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল

ইসলাম শিপন, জাতীয়পার্টির শহিদুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী লাঞ্জু ও শাহ

মোস্তাফিজুর রহমান (আল-আমিন) প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। ওই ইউনিয়নের

বিদ্রোহী প্রার্থী রফিকুল ইসলাম (নওশা) নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে

আশাবাদী বলে জানান।

৭নং ইদিলপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী হয়েছেন

ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুর রহমান। তার বিপরিতে বিদ্রোহী

প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন কৃষকলীগ নেতা জহুরুল ইসলাম মন্ডল।

এখানে বিএনপি’র সামছুল আলম, জাতীয়পার্টির রাব্বী আব্দুল্যা, স্বতন্ত্র

প্রার্থী আব্দুর রহমান সরকার, আশরাফুন নবী মন্ডল ও এটিএম

মোস্তাফিজুর রহমান প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। তবে বিদ্রোহী প্রার্থী

হিসেবে জহুরুল ইসলাম মন্ডল এ নির্বাচনে বিজয়ী হবেন বলে আশা প্রকাশ

করেছেন।

৮নং ভাতগ্রাম ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ইউনিয়ন

আওয়ামীলীগ সভাপতি নাজমুল হাসান সুমন। বিএনপি’র প্রার্থী

মাহবুবুর রহমান, জাতীয়পার্টির নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর

রশিদ খান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এটিএম রেজানুল ইসলাম বাবু প্রতিদ্বন্ধিতা

করছেন।

৯নং বনগ্রাম ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ইউনিয়ন

আওয়ামীলীগ সভাপতি এটিএম রেজাউল করিম প্রামাণিক রেজা।

বিএনপি’র প্রার্থী শাহজাহান সরকার, জাতীয়পার্টির শাহীন সরকার,

জাসদের আকমল হোসেন খাঁন, ওয়ার্কাসপার্টির কামরুল ইসলাম, স্বতন্ত্র

প্রার্থী এটিএম শরিফুল আলম মিয়া, বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল

কাইয়ুম হুদা ও সৈয়দ জাকির ইমাম প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।

১০নং কামারপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী হয়েছেন

আওয়ামীলীগ নেতা ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল গণি সরকার তারা।

তার বিপরীতে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন আওয়ামীলীগ

নেতা সামছুল আলম। এখানে বিএনপি’র প্রার্থী শাহ শওকত আলী মানিক,

জাতীয়পার্টির আমিরুল ইসলাম, জাসদের তাজুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী

হাফিজুল ইসলাম প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।

১১নং খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী রেহেনা

আক্তার। তার বিপরিতে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন

আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নজল হোসেন। এছাড়া এ

ইউনিয়নে বিএনপি’র শামছুজোহা সরকার, জাতীয় পার্টির কাওছার শাহ

মাহামুদ আল হাসান সাগর মিয়া, স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুর রহমান

চৌধুরী, বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আলম প্রধান, ওসমান গণি ও নজরুল

ইসলাম প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।

দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে সাদুল্যাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ

সম্পাদক শাহরিয়া খাঁন বিপ্লব বলেন, ‘যারা দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে

বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন তারা বড় মাপের নেতা নন। এরপরও আমরা কেন্দ্রীয়

নির্দেশনা মোতাবেক এসব বিদ্রোহী প্রার্থীদের দল থেকে বহিস্কার করা

হবে। তবে বহিস্কারের বিষয়টি প্রেস বিফ্রিংয়ের মাধ্যমে জানানো হবে।

সাদুল্যাপুর উপজেলার ১১ ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লক্ষ ১৯ হাজার

১শ’৪৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ৭ হাজার ২শ’১২ ও মহিলা ভোটার ১ লক্ষ

১১ হাজার ৯’শ ৩৪ জন। আগামী ৭ মে উপজেলার ১১ ইউনিয়নে নির্বাচন

অনুষ্ঠিত হবে।