ঝিনাইদহে প্রায় সাড়ে তিন হজার চাতালে কর্মরত প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক বিভিন্ন
ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত বাঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। মজুরি কম পাবার পাশাপাশি এসব পরিবারে না
আছে শিশু ও বয়স্ক শিক্ষা, জন্মনিবন্ধন ও প্রাপ্ত বয়স্কদের ভোটাধিকার ক্ষমতা। রাষ্ট্রের সব
সুযোগ-সুবিধা থেকেও এরা বঞ্চিত। এদের একটাই কাজ হাড়ভাঙা খাটুনি আর
খাটুনি। আর এই ভাবেই এক সময় শেষ হয় ওদের জীবন।
ঝিনাইদহ জেলা খাদ্য অধিদফতরের দেয়া তথ্য মতে, ডাকবাংলা, বিষয়খালী, ভাটইবাজার,
গাড়াগঞ্জ ও শৈলকুপা অঞ্চলে চাতালের সংখ্যা বেশি। প্রতিটি চাতালে ৫ থেকে ১০ জন করে
শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করছে। চাতাল পল্লীগুলোতে স্বাক্ষর জ্ঞান আছে সামান্য। শ্রমিকদের
সন্তানরাও ছোট থেকেই জড়িয়ে পড়ে এই পেশায়।
মানবাধিকার কর্মী নাসরিন সুলতানা জানান, যাদের ঘর্মাক্ত শরীর আর বিন্দু বিন্দু রক্তের
ফোঁটায় তিল তিল করে গড়ে ওঠে মালিকের সম্পদের পাহাড়, সেই চাতাল শ্রমিকদের
দুরাবস্থার কথা যেন শোনার কেউ নেই।
চাতাল শ্রমিক আম্বিয়া খাতুন জানান,
রাত ২টা থেকে থেকে ধান ভেজানো, সিদ্ধ করা, সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধ ধান
শুকাতে দেয়া, দিনভর ধান নাড়াচাড়া শেষে শুকিয়ে মিল পর্যন্ত পৌঁছে দিতে বিকেল
গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে। দিনরাত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টাই তাদের কাজ করতে হয়।
অথচ মজুরি খুবই সামান্য। কমপক্ষে ১৮ ঘণ্টা কাজ করে মহিলা শ্রমিকদের পারিশ্রমিক
সর্বসাকুল্যে ৩৫০ টাকা।
চাতাল শ্রমিক মনজুরা বেগম জানান, চাতালের মধ্যেই তাদের জীবন সীমাবদ্ধ।
নির্দিষ্টভাবে চাতাল শ্রমিক ও তাদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য কোনো কর্মসূচি নেই।
সরকারি ভাবে যদি আমাদের কাজের সময় ও মজুরি নির্ধারিত থকতো তবে আমাদের কষ্ট
কিছুটা হলেও কমতো।
ঝিনাইদহ চাতাল মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন জানান,
একমাত্র সরকারি পৃষ্ঠপোষকতাই দেশের চাতাল মালিক ও শ্রমিকদের টিকিয়ে রাখতে পারে।
ব্যবসা লসের কারণে আমরাও ইচ্ছা করলেই শ্রমিকদের বেতন বাড়াতে পারি না। ব্যাংক ঋণ
৪% হলে আমাদেরও কিছু থাকে, আবার কর্মরত শ্রমিকদেরও ন্যায্য মজুরি সঠিকভাবে