সাদিয়া আফরোজ ,স্বাদেশনিউজ২৪ঃ
উদ্বিগ্নতা একধরণের নার্ভাস ডিসর্ডার যা অতিরিক্ত অস্বস্তি এবং আশংকাবোধ থেকে তৈরি হয়। মানুষ যখন কোন বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে, অস্বস্তিবোধ করতে থাকে, কী করবে বুঝতে না পারে তখন সে উদ্বিগ্ন বোধ করে। উদ্বিগ্নতা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে প্যানিক এটাক হতে পারে। তখন এটি মানসিক ব্যাধির পর্যায়ে পড়ে।
একজন ব্যাক্তির ক্ষেত্রে উদ্বিগ্নতা যখন মানসিক ব্যাধি হয়ে দাঁড়ায় তখন সে নিত্যদিনের ছোট ছোট কাজেও উদ্বিগ্ন হতে থাকে। সহজ কাজগুলো করতেও তাকে সমস্যায় পড়তে হয়। এই সমস্যা আপনারও থাকতে পারে। সব সময় উদ্বিগ্ন থাকার প্রবণতা আপনার কাজ, ব্যক্তিজীবন, সামাজিক সম্পর্ক সব কিছুতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
ঔষধ এই সমস্যার সমাধান নয়। ঔষধ সেবনের বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। ঔষধ ছাড়াই নিজেকে সুস্থ্য করে তুলতে পারেন আপনি। জানুন এই সমাধানগুলো-
শারীরিক ব্যায়াম শুধু যে আপনার উদ্বিগ্নতাই দূর করবে তা নয়, বরং দীর্ঘ সময় আপনাকে রাখবে আবেগ সংক্রান্ত যাবতীয় সংকট থেকে মুক্ত। নিয়মিত শরীরচর্চা আমাদের মুড ভাল রাখে, ঘুমে সহায়তা করে, স্ট্রেস কমায় এমনকি আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে অন্তত ১০ মিনিট হাটাও উদ্বিগ্নতা কমানোর জন্য ভাল। তাই যখনই আপনি অস্বস্তি বোধ করছেন একটু বিরতি নিন। হেটে আসুন। ১০ মিনিটেই অনেক স্বস্তি বোধ করবেন।
ধ্যান মনে আনে শান্তি। নিয়মিত ধ্যান করা বাড়াবে আপনার ধৈর্য্যশক্তি। এর সাথে বাড়বে মনের সচেতনতা, কমবে স্ট্রেস, খাওয়া এবং ঘুমের অভ্যাস ভাল হবে। ধ্যানের বিভিন্ন লেভেল রয়েছে। নিরব পরিবেশে বসে থাকা, নিজেকে নিয়ে ভাবা, নিজের চিন্তার পরিবর্তন না করা ইত্যাদি নানান রকম হতে পারে আপনার ধ্যান। আপনার যেমন ভাল লাগে তেমন শুরু করুন। ধীরে ধীরে কমে আসবে আপনার উদ্বিগ্নতা।
কমিয়ে দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় বিচরণ
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম ব্যবহার করা মানুষেরা বেশী উদ্বিগ্নতায় ভোগেন। কারণ তারা সারাক্ষণ অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা করতে থাকেন। বন্ধুর নিয়মিত হাসিখুশী ছবি দেখে তারা ভাবতে থাকেন, অন্যেরা তাদের তুলনায় ভাল আছেন। েই সমস্যা আপনার আমার সবার মাঝেই আছে। তাই যতটা সম্ভব সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকুন। প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করুন, নেশাগ্রস্থের মত নয়।
কফি পান করা যদিও অনেক সময়ই ভাল। কিন্তু ক্যাফেইন গ্রহণ আপনার উদ্বিগ্নতা বাড়াতে পারে। যখন হয়ত আপনার উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন কারণ নেই তখনো আপনি উদ্বিগ্ন বোধ করতে পারেন ক্যাফেইনের প্রভাবে। ক্যাফেইন যেভাবে ইনসোমনিয়ায় প্রভাব বিস্তার করে, ঠিক একই ভাবে প্রভাব বিস্তার করে চিন্তাশক্তির উপর। তাই আপনি যদি প্যানিক এটাক থেকে বাঁচতে চান তাহলে অবশ্যই ত্যাগ করুন ক্যাফেইন গ্রহণ।
আপনি কি আসলেই তাৎক্ষণিক পরিস্থিতির কারণে উদ্বিগ্ন? নাকি আপনার অভ্যন্তরে কোন কষ্ট, কোন অনিশ্চয়তা লুকিয়ে আছে যা আপনাকে সব সময় চিন্তিত করে রাখছে। এমন হতেই পারে। ধরুন, আপনার প্রয়োজন চাকরি। আর্থিক অনিশ্চয়তা থেকে আপনি ভেতরে ভেতরে হয়ত খুব হীনমন্য বোধ করছেন। তখন অর্থ সংক্রান্ত অনেক ছোট বিষয়ও আপনাকে ডিস্টার্ব করবে, অস্বস্তিতে ফেলবে। কারণ খুঁজে বের করুন। দুশ্চিন্তা কোন সমস্যার সমাধান নয়। সচেতনভাবে কারণ জানলে আপনি নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।