তারা সবাই ছিল আমেরিকান স্কুলে একে অন্যের সহপাঠী।
রাত দশটা নাগাদ তারিশির বাবা সঞ্জীব জৈনের কাছে মেয়ের মোবাইল থেকে ফোন আসে, রেস্তোরাঁয় বন্দুকধারী জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছে।
প্রাণ বাঁচাতে তারা তিনজনই আশ্রয় নিয়েছে একটি ওয়াশরুমের ভেতর।
উদভ্রান্তর মতো মি জৈন সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন ওই ক্যাফের সামনে।
সারা রাত আটক মানুষজনদের উদ্বিগ্ন আরও নানা আত্মীয়স্বজনের সাথে তিনি পায়চারি করতে থাকেন – মাঝে দু’একবার মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথাও হয়।
শনিবার সকাল ছ’টার একটু আগে পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে যায় তারিশির ফোন। তার পর আর মেয়ের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ হয়নি সঞ্জীব জৈনের।
শনিবার পৌনে আটটা নাগাদ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন থান্ডারবোল্টে’র পর যখন ক্যাফের ভেতর থেকে উদ্ধার হয় কুড়িটি দেহ, তার মধ্যে ছিল তারিশি জৈনের দেহও।
বিকেলে তারিশির আত্মীয়পরিজনরা তাকে শনাক্ত করেন।
এদিকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ঘটনার পর থেকেই ফিরোজাবাদে তারিশির কাকা রাকেশ জৈন ও পরিবারের অন্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলছিলেন।
তিনি তাদের দ্রুত বাংলাদেশ যাওয়ার জন্য ভিসারও ব্যবস্থা করে দেন।
পরিবারের অনুমতি নিয়ে সুষমা স্বরাজই শনিবার বিকেলে প্রথম টুইটারে জানান যে নিহতদের মেধ্য তারিশি জৈন নামে এক ভারতীয় তরুণীও আছে।
এদিকে তারিশির পরিবারের কোনও কোনও সদস্য ভারতের সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শুধু গলা চিরে হত্যাই নয়, হত্যার আগে তার ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়েছিল বলে তারা আশঙ্কা করছেন।
তারিশির যে দেহ তার পরিবারের সদস্যরা শনাক্ত করেছেন, সেখানে শরীরের বিভিন্ন জায়গাতেই আঘাত বা ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে যা থেকে তার পরিবারের মধ্যে এই আশঙ্কা জোরালো হয়েছে।