অবশেষে হাসলো ইউনুস খানের ব্যাট। আর এতে ৩৮ বছরের ইউনুস খান আরও একবার দেখালেন ‘বুড়ো’ হাড়ের জোর। ওভাল টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকালেন ইউনুস খান। ওভালে গতকাল নিজের উইকেট দেয়ার আগে ইউনুস খান খেলেন ২১৮ রানের ঝলমলে ইনিংস। ক্যারিয়ারে ইউনুস খানের এটি পঞ্চম দ্বিশতক। আর ইউনুস তার তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকালেন বয়স ৩৫ পার করে। টেস্ট ইতিহাসে এমন নজির রয়েছে আর কেবল লঙ্কান ব্যাটসম্যান কুমার সাঙ্গাকাকার। এবারের ইংল্যান্ড সফরে প্রথমবারের মতো বড় ইনিংস খেলতে দেখা গেল এ পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানকে। ৩০৮ বলের ম্যারাথন ইনিংসে ইউনুস হাঁকান ৩১টি চার ও চারটি ছক্কা। ব্যক্তিগত ২০০ রান পূর্ণ করেন তিনি ইংল্যান্ডের পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত স্পিনার মঈন আলীকে ছক্কা হাঁকিয়ে। টেস্টে পাকিস্তানি পাঁচ নম্বর ব্যাটসম্যানের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এটি। এতে ইউনুস ছাড়িয়ে গেলেন কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান জহির আব্বাসকে। গতকাল ওভালে ইউনুস খানের বিদায়ে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫৩১/৯-এ। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের সংগ্রহ পৌঁছে ৫৪২ রানে। এতে প্রথম ইনিংসে ২১৪ রানে এগিয়ে যায় পাকিস্তান। ইংল্যান্ডের মাটিতে পাকিস্তানের এটি চতুর্থ সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। এর তিনটিই দেখা গেল লন্ডনের ওভাল মাঠে। ওভালে ১৯৮৭ সালে পাকিস্তানের সংগ্রহ পৌঁছে ৭০৮ রানে। আর ইংল্যান্ডের মাটিতে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ তিন স্কোরের ম্যাচ শেষ হয় ড্রতে। ওভাল টেস্টে শুক্রবার জোড়া সেঞ্চুরিতে ১২ রানের লিড নিয়ে ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করে সফরকারী পাকিস্তান। ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি হাঁকান আসাদ শফিকও। এতে দিন শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ পৌঁছে ৩৪০/৬-এ। দিন শেষে ১০১ রানে অপরাজিত থাকেন ইউনুস। নিজের উইকেট দেয়ার আগে আসাদ শফিক খেলেন ১০৯ রানের ইনিংস। এতে শফিক হাঁকান ১২ চার ও দু’টি ছক্কা। সিরিজে আগের টেস্টের উভয় ইনিংসে ‘০’ রানে উইকেট খোয়ান আসাদ শফিক। আগের ম্যাচে ‘পেয়ার’ নিয়ে এটি পাকিস্তানের কোনো ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরির প্রথম ঘটনা। তাও দেখা গেল ৫৮ বছর পর। সর্বশেষ ১৯৫৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এমন নৈপুণ্য দেখান পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান ওয়াজির মোহাম্মদ। আর ১৩৯ বছরের টেস্ট ইতিহাসে এমন ঘটনার এটি মাত্র ১২তম নজির। ওভালে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক। আর সাত নম্বর ব্যাটসম্যান মঈন আলীর ১০৮ রানের সুবাদে প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ পৌঁছে ৩২৮ রানে। শুক্রবার ব্যাট হাতে ১৫টি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান ইউনুস খান। ইনিংসে তার চতুর্থ বাউন্ডারিটি ছিল তার ক্যারিয়ারে ১০০০তম চার। ওভালে ব্যক্তিগত ১৫ রানে উইকেট দেন পাক অধিনায়ক মিসবাহ-উল হক। এতে গর্বের এক রেকর্ডে জেমস অ্যান্ডারসনকে ছাড়িয়ে যান ইংলিশ পেসার ক্রিস ওকস। গতকাল আরও দুউ উইকেট যোগ হয় সিরিজে তার সংগ্রহে। চলতি সিরিজে ওকসের শিকার ২৬ উইকেট। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে সর্বাধিক ২৩ উইকেটের রেকর্ড ছিল অ্যান্ডারসনের।
৫ নম্বরে পাক ব্যাটসম্যানের দ্বিশতক
ব্যাটসম্যান রান ভেন্যু সাল
ইউনুস খান ২১৮ ওভাল ২০১৬
জহির আব্বাস ২১৫ লাহোর ১৯৮২
মোহাম্মদ ইউসুফ ২০৪* চট্টগ্রাম ২০০২
শোয়েব মোহাম্মদ ২০৩* লাহোর ১৯৮৯
মোহাম্মদ ইউসুফ ২০৩ ক্রাইস্টচার্চ ২০০১