ফ্রান্সে বুরকিনি নিষিদ্ধ করায় এ পোশাকের অস্ট্রেলিয়ান ডিজাইনার আহেদা জানেত্তি ব্যবসায় লাভবান হয়েছেন। তার বিক্রি বেড়ে গেছে। তিনি বলেছেন, বুরকিনি নিষিদ্ধ করায় সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করছেন বেশি সংখ্যক মানুষ। নিষেধাজ্ঞা দেয়া মানেই এই নয় যে, নারীরা বুরকিনি পরা ছেড়ে দেবেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়, ফ্রান্সের কান, ভিলেনুভে-লুবেত, করসিকান সৈকতের সিসকো সহ বেশ কিছু স্থানে গত সপ্তাহে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বুরকিনি। এ পোশাকটি পরে থাকেন মুসলিম নারীরা। এতে তাদের পুরো শরীর ঢাকা থাকে। বোরকার থেকে ব্যতিক্রমী এ পোশাক। এটা পরলে শুধু মুখ, হাত ও পা বাইরে থাকে। শরীরের বাকি অংশগুলো ঢাকা থাকে। কিন্তু এ পোশাক নাকি ফ্রান্সের ধর্মনিরপেক্ষ আইনের লঙ্ঘন। সিডনিতে এ পোশাকটির ডিজাইন করেন আহেদা জানেত্তি। তিনি রয়টার্সকে বলেছেন, আমাদের বিক্রি বেড়ে গেছে। যতই এ পোশাকটি বেশি করে নিষিদ্ধ করা হবে, যতই কর্তৃপক্ষ এ পোশাক প্রত্যাখ্যান করুক না কেন, তার মানে এটা নয় যে, মুসলিম নারীরা এ পোশাক পরা বাদ দেবেন। আমি মনে করি কর্তৃপক্ষ ভুল করছেন। আমি মনে করি, যখন আমরা সাঁতারের জন্য এ পোশাকটি তৈরি করি তখন সব রকম সংস্কৃতির সন্নিবেশ ঘটানোর চেষ্টা করেছি এতে। ওদিকে বুরকিনি নিষিদ্ধ করায় ফ্রান্সে এ নিয়ে এক বড় ধরনের বিতর্ক শুরু হয়েছে। এর আগে ২০১০ সালে দেশটি পুরো মুখ ঢাকা নেকাব ও বোরকা নিষিদ্ধ করে। সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে বেশ কয়েকটি জঙ্গি হামলার পর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত মাসে তুরস্কের এক ব্যক্তি নিস শহরে জনতার সমাবেশে ট্রাক উঠিয়ে দিয়ে হত্যা করে কমপক্ষে ৮৫ জনকে। একজন ধর্মযাজককে গলা কেটে হত্যা করে দু’ফরাসি মুসলিম। পরে তাদেরকে হত্যা করে পুলিশ। নভেম্বরে প্যারিসে ভয়াবহ বোমা হামলা ও গুলি করে জঙ্গিরা হত্যা করে কমপক্ষে ১৩০ জনকে। এ সব হামলায় জড়িত ইসলামপন্থি জঙ্গিরা। ডিজাইনার আহেদা জানেত্তির জন্মভূমি লেবানন। সেখান থেকে ৪০ বছরেরও বেশি সময় আগে তিনি চলে গেছেন অস্ট্রেলিয়ায়। মুসলিম নারীদের স্পোর্টিং পোশাক কেমন হবে তা নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন কাজ করেন। অবশেষে ২০০৪ সালে ডিজাইন করেন বুরকিনির। তিনি বলেন, বোরকার দিয়ে মুখমন্ডল ঢেকে রাখার চেয়ে বুরকিনি দিয়ে শুধু মাথা ঢেকে রাখার এ পোশাকটি অমুসলিম নারীদের কাছেও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তিনি বলেন, বুরকিনির ক্রেতাদের মধ্যে শতকরা ৪০ ভাগই হলেন অমুসলিম। এর মধ্যে রয়েছেন ক্যান্সার আক্রান্তরা। যেসব নারী সূর্য্যরে ক্ষতিকর আলোকরশ্মি থেকে ত্বক রক্ষা করতে চান তারাও এ পোশাকটি কিনে নিচ্ছেন।