দীর্ঘদিন ধরে আবাসিক হলগুলো শিবিরের দখলে থাকার সুযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনগুলোর বিস্তার ঘটেছে। শুধু শিক্ষার্থী নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও জড়িয়ে পড়ছে এর সঙ্গে। এমন অভিযোগ খোদ উপাচার্যের।
এ অবস্থায় জঙ্গিবাদ দমনে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে নিয়মিত তল্লাশির পাশাপাশি সন্দেহভাজনদের ওপর নজরদারি শুরু হয়েছে।
তবে নানা জটিলতার কারণে জঙ্গিবাদে উস্কানি দেয়া এসব শিক্ষক কিংবা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছেনা। এ অবস্থায় জঙ্গিবাদ দমনে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে নিয়মিত তল্লাশির পাশাপাশি সন্দেহভাজনদের ওপর নজরদারি শুরু হয়েছে।
দেশে জঙ্গিবাদ বিস্তারে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির পর আলোচিত নাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। এক দশক আগেও এখানে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীর ব্যাপক আধিপত্য ছিল। বর্তমানে এর সাথে যুক্ত হয়েছে জঙ্গি সংগঠন জেএমবি এবং আনসার উল্লাহ বাংলা টিমের নাম।
গত ছয় মাস আগেও এ জঙ্গি সংগঠনের চট্টগ্রামের সামরিক কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারদিন। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি গুলশান হামলার ঘটনায় সমন্বয়কারী হিসেবে বের হয়ে এসেছে এখানকার সাবেক শিক্ষার্থী নুরুল ইসলাম ওরফে মারজানের তথ্য।
এখানেই শেষ নয়। গত ছয় মাসে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা বলেন, ছাত্রশিবির এবং জামায়াতের যারা বিপ্লবীর তারাই এর সাথে সংযুক্ত হয়ে যাচ্ছে।
২০০১ সালের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হলে আধিপত্য কায়েম করে শিবির। আর এ সুযোগেই এখানে জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটেছে বলে মনে করেন বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আগে কোনো না কোনো কর্মচারী ছিল তারা কোনো না কোনোভাবে তাদের সহযোগিতা করেছেন বলে আজকে তারা এত বিশাল মহিরহে পরিণত হয়েছে।’
এ অবস্থায় আবাসিক হলগুলোতে তল্লাশির পাশাপাশি সন্দেহভাজনদের ওপর নজরদারি শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে আইনগত জটিলতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জঙ্গিবাদে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
চবি’র উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী সরাসরি ব্যবস্থা নেয়ার নিয়ম নাই যদি না তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে যথেষ্ট প্রমাণ না থাকে।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ছেলেদের ছয়টি এবং মেয়েদের তিনটি হল রয়েছে। আর ৮টি অনুষদে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২২ হাজার।