অজয় কুন্ডু, মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুরে মস্তফাপুর এলাকার শিকি নওহাটা গ্রামের মৃত: আবদুল কাদের মাতুব্বরের নির্ধারিত মালিকানাধীন জমি তার বড় ছেলে বাচ্চু মাতুব্বর তার নিকটবর্তী রেজাউল মৃধা নামক এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রয় করে নির্ধারিত মূল্য না পেয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন ওই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
ভুক্তভোগী বাচ্চু মাতুব্বরকে নানা ভাবে এ বিষয়ে চুপচাপ করে রাখার জন্য প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে চলছে প্রভাবশালী ভুমি দখলকারী একটি চক্র। এতে বিপাকে পড়ে অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েছেন অসহায় এ পরিবারটি।
অভিযোগের সূত্র অনুসারে জানা যায়, গত রমজানে মাসে পারিবারিক অভাব অনটনের কারণে বাচ্চু মাতুব্বর তার পিতার নির্ধারিত জমির এক অংশ বিক্রয় করার সিদ্ধান্ত নেয়। নওহাটা গ্রামের রেজাউল মৃধা তার জমি ক্রয় করতে সম্মতি দিলে, মৃত: আবদুল কাদের মাতুব্বরের বড় ছেলে বাচ্চু মাতুব্বর এ জমি বিক্রয় করতে রাজি হন। সে জমির পরিমান ছিল ৮ শতাংশ। যার বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৪লাখ টাকা। কিন্তু ভুক্তভোগী বাচ্চু মাতুব্বর তার খপ্পরে পরে এবং তাকে বিশ্বাস করে জমির দলিল আগে দিয়ে দেয় এবং রেজাউল মৃধার নামে জমির দলিল রেজিস্টি করার জন্য জেলা রেজিস্টি অফিসে আসেন। সেখানে তার পাওনা ৪লাখ টাকা দেয়ার কথা থাকলেও তাকে তৎ¶ণাৎ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয় বিদায় দেয় এবং বলে বাকি টাকা এখানে নিয়ে আসিনি। বাড়িতে গিয়ে টাকা দেয়ার কথা বলে একদিনের সময় নেয়। কিন্তু শিকি নওহাটা গ্রামের মনাত মৃধার ছেলে রেজাউল মৃধা জমির পাওনা টাকা দিয় জালিয়াতি শুরু করে। এছাড়াও তাকে টাকা না পাওয়ার কথা বলে অ¯^ীকার করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দন্ড শুরু হলে এক পর্যায়ে ওই এলাকার কিছু গণ্যমাণ্য ব্যক্তি তাদের মিমাংশা করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু রেজাউল মৃধা তার কথা ও সিদ্ধান্তে আটল থাকায় বিরোধ নিষ্পিত্তি হয়নি। এছাড়াও এ নিয়ে ৩ বার মিমাংশা করার জন্য বসলেও কোন লাভ হয়নি। বরং এ নিয়ে যদি বারাবারি করা হয় তাহলে বাচ্চু মাতুব্বরকে হত্যার হুমকি-ধামকি দিয়ে চলেছে।
এছাড়া বাচ্চু মাতুব্বরের দাবী, তিনি তার পৈতিক সম্পত্তির অংশ বিক্রি করেছেন এমনভাবে যে যেখানে ভাই-বোনসহ ১১ অংশীদারের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা সম্পূর্ণ হওয়ার পর জমি নেয়ার কথা সেখানে ওই জমির মধ্যে তার ভাইয়ের একটি হ্যাচারির অংশ যেখানে পশ্চিম দিকে সেখানে দিয়ে দাগ কেটে নিয়েছে দলিলে। এক্ষেত্রেও দলিলের সময় তাকে না জানিয়ে প্রতারণা করা হয়।
এ বিষয়ে মস্তফাপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বর, বাবুল মাতুব্বর জানান, ২৯ই আগস্ট সোমবার সন্ধ্যা আমার এ বিষয় নিয়ে মিমাংশাতে বসেছি এবং দু’পক্ষের কথোপকথন শুনে আমরা একটা ডিসিশনে এসেছি। আমরা মিমাংশাতে বাচ্চু মাতুব্বরকে বলেছি রেজাউল করিমকে তার টাকা বুঝিয়া না পাওয়ার আগে কেন সে দলির রেজাউল মৃধার কাছে হস্তান্তর করল। এটা তার বড় ধরণের ভুল। তাই সবকিছু বিবেচনা করে আমরা দু’পক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি। বাচ্চু মাতুব্বরের বিক্রিত জমির পাশে রেজাউল মৃধার কয়েক শতাংশ জমি আছে। তার জমি সাথে বাচ্চু মাতুব্বরের জমি সংযুক্ত হওয়াতে ও রেজাউল মৃধা তার জমিসহ বাচ্চু মাতুব্বরকে তার জমি ফিরেয়ে দিতে রাজি। তবে এখানে তার জমির বিক্রয় মূল্য বাবদ বাচ্চু মাতুব্বরকে ১১লখ ৭৫ হাজার টাকা দিতে হবে। তবে এ মিমাংশাতে বাচ্চু মাতুব্বর দ্বিমত প্রকাশ করে। তাই এ সমস্যার মিমাংশা না হওয়াতে আমরা বলে দিয়েছি এটা এখন তোমাদের ব্যাপার এবার তোমরা তোমাদের মতো করে মিটিয়ে নেও।
ভুক্তভোগী বাচ্চু মাতুব্বর বলেন, আমি টাকা-পয়সার সমস্যার কারণে জমি বিক্রি করেছি। কিন্তু আমাকে জমির মূল্য না দিয়ে এখন আবার যদি পাশের তার জমিসহ কিনে নিতে বলে তাহলে আমি কী করবো। আর্থিক সংকটে নিজের জমি যে বিক্রি করে তার পক্ষে আবার অন্যেও জমিসহ কিনে নেয়া কি সম্ভব।
জমি সংক্রান্তু বিষয় নিয়ে অভিযুক্ত রেজাউল মৃধার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটা ভিত্তিহীন। আমি তার কাছ থেকে দলিল নেয়ার সময় সব টাকা দিয়ে মিটিয়ে দিয়েছি। তবে জমি বিক্রি শেষে বাচ্চু মাতুব্বর তার জমির আরও টাকা মূল্য দিতে হবে বলে আমার কাছে আরও টাকা দাবি করে আসছে।