যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে অবমাননা করার মূল্য দিতে হচ্ছে ফিলিপাইনের অর্থ বাজারকে। দেশটির প্রেসিডেন্ট রড্রিগো দুতের্তে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ‘সান অব এ বিচ’ বলে মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে তিনি জাতিসংঘ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করার হুমকি দেন। এর প্রেক্ষিতে ফিলিপাইনে বিদেশী যেসব বিনিয়োগকারী রয়েছেন তাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তারা বুধবার দেশটির অর্থবাজার থেকে তাদের কমপক্ষে ৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার বিনিয়োগ তুলে নিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। এতে বলা হয়েছে, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে যে, প্রেসিডেন্ট রড্রিগো দুতের্তের লাগামছাড়া মন্তব্যে তাদের বিনিয়োগের ওপর প্রভাব পড়বে। এ কারণে ফিলিপাইন স্টক এক্সচেঞ্জের সূচকের পতন হয়েছে শতকরা ১.৩ ভাগ। ৫ সপ্তাহের মধ্যে সূচকের এটা সর্বোচ্চ পতন। শতকরা ১.৩ শতাংশ কমে সূচক দাঁড়ায় ৭৬১৯.১০। বছরের এই চতুর্ভাগে এসে সূচক পড়েছে শতকরা ২.৩ ভাগ। এশিয়ার অর্থবাজারের মধ্যে এটাই হলো একমাত্র বাজার যেখানে এমন এক ঘটনায় সূচকের পতন হয়েছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের রাজকোষ কেলেঙ্কারি নিয়ে ফিলিপাইন সহ সারাবিশ্ব যখন তোলপাড় তখনই সেখানে প্রেডিডেন্ট নির্বাচন ঘনিয়ে আসে। সেই নির্বাচনে নির্বাচিত হন দুতের্তে। নির্বাচিত হয়েই তিনি মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এর সঙ্গে জড়িত এমন যেকোন ব্যক্তিকে গুলি করে মেরে ফেলার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশের পর এখন পর্যন্ত এভাবে কমপক্ষে ২৪০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এমন এক পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট ওবামা যোগ দেন চীনে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে। সেখান থেকে ফিরে যান লাওসের ভিয়েনতিনে। সেখানে আসিয়ানের একটি সম্মেলন ছিল। সেখানে সম্মেলনের পাশাপাশি দুতের্তের সঙ্গে তার একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট দুতের্তে আভাষ পান যে, প্রস্তাবিত ওই বৈঠকে তার মাদক বিরোধী অভিযানের সমালোচনা করতে পারেন ওবামা। তাই তিনি ওবামাকে ‘সান অব এ বিচ’ বলে আখ্যায়িত করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় দুতের্তের সঙ্গে বারাক ওবামার বৈঠক বাতিল করা হয়। পরে অবশ্য ওই মন্তব্যের কারণে দুঃখ প্রকাশ করেছেন দুতের্তে। কিন্তু ততক্ষণে জল অনেকটা গড়িয়ে গেছে। কিন্তু তাতে কি, দুতের্তেকে প্রয়োজন যুক্তরাষ্ট্রের। কারণ, চীন যেভাবে তার প্রভাব বিস্তার করছে তার মোকাবিলা করতে হলে এ অঞ্চলে একজন মিত্রের প্রয়োজন তাদের। তাই আপত্তিকর ওই মন্তব্য করার পরও ফিলিপাইনের সম্পর্ক বলা যায় স্বাভাবিক রয়েছে। কিন্তু ম্যানিলায় সেই রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং গ্রুপের একজন ম্যানেজার রাফায়েল পালমা গিল বলেছেন, প্রেসিডেন্টের ওই মন্তব্য ও দু’নেতার মধ্যকার বৈঠক বাতিলের বিষয়টিকে বিনিয়োগকারীরা ভালভাবে নেন নি।