একটি সময় গেছে, এক বিলিয়ন ডলার ঋণ পাওয়া ছিল স্বপ্ন, আবার ঐ ঋণ ব্যবহারের সক্ষমতাও ছিলনা। আজ ভারতের ২ বিলিয়ন, জাপানের ৬ বিলিয়ন ডলারের পরেও আসছে চীনের ২৬ বিলিয়ন ডলার। যা বিগত ৪০ বছরের ঋণের সমপরিমাণ। অর্থাৎ বাংলাদেশ ঋণ গ্রহন ও ব্যবহারে সক্ষম হয়ে উঠেছে, দিগন্তে আলোর রেখা স্পষ্ট। এছাড়া ঋণ পরিশোধে আমাদের সুনামও বিশ্বব্যাপী।
আমাদের মহান স্বাধীনতা অর্জনে বৃহৎ প্রতিবেশী ভারতের অবদান নতশিরে স্মরন করি। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তর এ ঋণ থাকবে অপরিশোধ্য। সে লড়াইয়ে চীন ছিল বিরোধী শিবিরে, পাকিস্তানের পক্ষে তাদের অবস্থান ছিল সুস্পষ্ট। কিন্তু এরপর সময় গড়িয়েছে অনেক। পদ্মা-মেঘনায় বয়ে গেছে কত কত কিউসেক জলরাশি। সময়ের হাত ধরে চীন আজ পরাশক্তির দৌড়ে সামনের সারিতে। আমেরিকাকে অগ্রাহ্য করা যায়নি তবে চীনকে কেন অগ্রাহ্য করবো?
অনেক সন্দেহবাতিক মানুষের প্রশ্ন ভারত নাখোশ হতে পারে। না, তা হবার সুযোগ নেই, কারন চীনের সাথে আমাদের যে সব চুক্তি ও সমঝতা হয়েছে সেগুলোর কোথাও কোনো সামরিক চুক্তি নামগন্ধও নেই। কেবলই অবকাঠামো উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি আর অগ্রগতির চুক্তি। সবচেয়ে বড় কথা কৌশলগত অংশীদারিত্ব, অর্থাৎ উন্নয়ন থেকে শুরু করে কানেকটিভিটি, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড বিনিময়ের ধারনাও এ চুক্তির আওতায়।
ভারতের কোন প্রকার প্রতিক্রিয়া ছাড়াই কিছু কু-তর্কের জন্ম দিচ্ছে অতি-উৎসাহীরা। ভুল ব্যাখ্যা নিয়ে ভুল মানুষের কু-তর্ক থাকবেই। ভুল মানুষের ভুল যুক্তি শুনে বিচ্ছিন্ন পৃথিবীর বাসিন্দা হওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারেনা। অসৎ মানুষেরা এই ঋণ প্রাপ্তির বিষয়টি সরকারের সাফল্য হিসাবে দেখবে না, এটাই স্বাভাবিক। তারা অতি সুক্ষ্মভাবে ভারতের নাখোশ হবার খবরটি সামনে অানতে চাইছে। অথচ এ নিয়ে ভারত বিন্দুমাত্র প্রতিক্রিয়াও দেয়নি অদ্যাবধি।
একটি কথা নির্দ্ধিধায় বলা যায়, দেশী-বিদেশি প্রকল্প বাস্তবায়নে আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখের নয়। এমনকি আমাদের বার্ষিক উন্নয়নের চিত্রও অত্যন্ত নেতিবাচক তথ্য প্রদান করে। সে ক্ষেত্রে এত বিশাল মাপের ঋণের যদি যথাযথ বাস্তবায়ন না হয় তবে এর চেয়ে দুঃখের অার কি হতে পারে? এ জন্য এখনই সঠিক লক্ষমাত্রা নিয়ে আমাদের এগুতে হবে। তবেই বাংলাদেশ রূপকল্প-৪১ বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবে। সেই সোনালী দিনেরই প্রত্যাশায় বুক বাঁধি।।
জয়বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।।