প্রথম টেস্টের দল তো ঘোষণা হলো। কিন্তু প্রশ্ন, কেমন হয়েছে দলটি? আধুনিক ক্রিকেটে মাঠের লড়াইয়ের আগে, খাতা-কলমেই হিসেব-নিকেশ হয় ঢের বেশি। প্রতিপক্ষ বিবেচনায় নিয়ে স্কোয়াড সাজাতে খুব সতর্ক থাকেন নির্বাচকরা। কিন্তু, দুই পেসার আর একজন বিশেষজ্ঞ স্পিনার নিয়ে সাজানো ১৪ সদস্যের বাংলাদেশ স্কোয়াড চট্টগ্রাম টেস্টের জন্য কতটা ভারসাম্যপূর্ণ হলো? প্রশ্নটা থেকেই যায়।
এ পর্যন্ত ৯৩ টেস্টে ৭১ হারের বিপরীতে মাত্র ৭ জয় বাংলাদেশের। বিরাট বাক্সে যেন সামান্য কিছু উপকরণ। কিন্তু, গেলো ক’বছর টাইগারদের ওয়ানডে সাফল্য যে হাওয়া বদলের বিশ্বাস জুগিয়েছে সমর্থকদের মনে, তাতে সওয়ার হয়ে টেস্ট ফরম্যাটেও দারুণ কিছু আশা করছেন সবাই। তাই শক্তিশালী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে একটু বাড়তি নজর সবার। অ্যালিস্টার কুক-জো রুটদের নিয়ে গড়া ব্যাটিং স্তম্ভ, আর গতির ঝড় তোলা স্টুয়ার্ট ব্রড-স্টিভেন ফিনদের পাশাপাশি উপমহাদেশীয় কন্ডিশনে সাফল্য পেতে ইংলিশদের স্পিন অ্যাটাকে আছেন গ্যারেথ ব্যাটি-জাফর আনসারিরা। আছেন হাসিব হামিদের মতো নতুনরাও।
ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত রান করার পুরস্কার স্বরূপ ইংলিশ ব্যাটসম্যান বেন ডাকেট সুযোগ পেয়েছেন বাংলাদেশ সফরে। এ বছর প্রথম শ্রেণিতে ২৭০৬ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। ক্যারিয়ারে মোট ১০ সেঞ্চুরি ও ১৪ ফিফটি। সর্বোচ্চ অপরাজিত ২৮২। কাকতালীয় ভাবে প্রথম শ্রেণিতে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ইনিংস সর্বোচ্চ রান’ও ২৮২। ১৮ ম্যাচে তার গড় ৭০ দশমিক ৮৯। আছে ৭টি সেঞ্চুরি ও ৬ ফিফটি। ইংল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে ২টি প্রস্তুতি ম্যাচেই খেলেছেন এই অলরাউন্ডার। ক’দিন আগেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকটাও হয়ে গেছে। অথচ টেস্ট স্কোয়াডে ঠাঁই মেলেনি তার। কিন্তু, আন্তর্জাতিক অভিষেক না হলেও, স্কোয়াডে আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
তবে, সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, বাংলাদেশের ১৪ সদস্যের স্কোয়াডে পেসার মাত্র ২জন। একজন ২০১৪ সালে সবশেষ টেস্ট জার্সিতে মাঠে নামা শফিউল। আর আরেক পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বির এখনো অভিষেকই হয়নি। বলতেই হয়, থ্রি লায়নদের বিপক্ষে অনেকটা দুঃসাহসী সিদ্ধান্ত নির্বাচকদের। ইংলিশদের টপ অর্ডারে কুক, রুটদের পরিসংখ্যান দেখলেই ভ্রু কুঁচকে যায় সবার। কিন্তু, উপমহাদেশে চিরায়ত স্পিন ভীতি আছে তাদেরও। ২০১২ সালে সবশেষ উপমহাদেশে খেলা ৪ টেস্টের ৫ ইনিংসেই ভারতীয় স্পিনার অশ্বিনের কাছে ধরাশয়ী হয়েছিলেন কুক। ঐ সফরে ২ ইনিংসে রুটের উইকেট নেন আরেক স্পিনার চাওলা। তাই সংশয়, চট্টগ্রামে কি বিশেষজ্ঞ স্পিনারদের মিস করবে বাংলাদেশ? নাকি সাকিব-তাইজুলদের সঙ্গে পার্ট-টাইমারদের দিয়েই কাজ হবে শতভাগ।
টেস্টে আগের চেয়ে পরিণত দল হিসেবে আবির্ভূত হবার পথটা, এই স্কোয়াড নিয়ে কি সাবলীল হবে? নাকি সে চ্যালেঞ্জটা আরো খানিকটা বাড়িয়ে দিলেন নির্বাচকরা