এক সপ্তাহ আগের ও এক সপ্তাহ পরের বাংলাদেশ সম্পুর্ন ভিন্ন। চীনা প্রেসিডেন্টকে বিদায় দিতেই এলেন বিশ্বব্যাংক প্রধান। দেখতে এলেন বাংলাদেশ কিভাবে অতিদরিদ্র ৪৯% থেকে ১২.৯% এ নামিয়ে আনলো। এই সাফল্যই রোলমডেল হবে দরিদ্র দেশের জন্য। কি আশ্চর্য, এই সেদিনও বিশ্বব্যাংক বিনা কারনে পদ্মাসেতুর ঋন বাতিল করেছিল। আজ কি-না তারাই এলো ১ বিলিয়ন ডলার নিয়ে?
আমাদের মতো দেশ তো বটেই, বিশ্বের পরাশক্তিও বিশ্বব্যাংকের ঋণ নিয়ে তাদের বড় বড় প্রকল্পের আর্থিক ঘাটতি মেটায়। এটি কোনো দোষের ব্যাপার নয়। প্রতিটি দেশ তার রিজার্ভের অর্থে আমদানি-রফতানি ব্যয় নির্বাহ করে, আর স্বল্প সুদের বিভিন্ন সংস্থার ঋণ নিয়ে অবকাঠামো নির্মান করে থাকে। আমাদের সরকারও সে লক্ষে পদ্মাসেতুর জন্য বিশ্বব্যাংকের ঋণ চেয়েছিল এবং যথারীতি চুক্তিও হয়েছিল।
প্রমত্তা পদ্মায় সেতু হবে সেই স্বপ্নে পুরো জাতি যখন অধীর আগ্রহে প্রহন গুনছে ঠিক তখনই বজ্রপাত হয়ে এলো বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন স্থগিতাদেশ। দেশে-বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি দারুন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ভেঙ্গে পড়েননি ভিন্ন ধাতুতে গড়া শেখ হাসিনা। তিনি বিশ্বব্যাংকের আরোপিত সব অভিযোগ এক ফুঁয়ে উড়িয়ে দিয়ে উল্টো অভিযোগ প্রমাণের চ্যালেঞ্জ করেন, এবং এক সময় বিশ্বব্যাংকের ঋণ প্রত্যাখান করে নিজস্ব অর্থে পদ্মাসেতু করার দৃপ্ত ঘোষনা দেন।
শেখ হাসিনা তাঁর অনমনীয় ও দৃঢ় সিদ্ধান্তের মাধ্যমে প্রমান করেন;
বাঙালী মাথা নোয়াবার জাতি নয়। নিজেদের টাকায় পদ্মায় সেতুর ঘোষনা জাতি হিসাবে আমাদের কয়েক ধাপ উচ্চতায় নিয়ে যায় তখনই। অান্তর্জাতিক দুনিয়া সেদিন অাড়ালে হেসেছিল আমাদের সক্ষমতা নিয়ে। তারা ভেবেছিল, কেউই পদ্মাসেতুর টেন্ডারে অংশ নিবেনা। দেশের বিরোধিরা তো সরকারকে চোরই ঠাউরে বসেছিল। অথচ গর্বের পদ্মাসেতু আজ পদ্মার উত্তাল ঢেউয়ের মধ্যে দৃশ্যমান।
বিশ্বব্যাংক সব সময় পশ্চিমা স্বার্থের পুজারি। ইউরোপ-আমেরিকার ইঙ্গিতে গরীব দেশে ঋণ দেয় তাদের পছন্দের সরকারকে। সেই অর্থে শেখ হাসিনার সরকার কখনোই তাদের পছন্দের নয়। পদ্মাসেতুর অর্থায়ন বাতিল করে সরকার পতনের নোংরা প্ল্যান করেছিল। বঙ্গবন্ধুর বেলায়ও খাদ্যসামগ্রী পাঠানোর খেলা খেলেছিল আমেরিকা। যার চূড়ান্ত পরিনতি ১৫ অাগস্ট। সেখান থেকে ঘুরে দাড়িয়েছে দেশ, তলাবিহীন ঝুড়িটি আজ অনেক ক্ষেত্রেই সক্ষমতার প্রতীক।।
জয়বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।।