জাগৃতি প্রকাশনীর মালিক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় গ্রেফতার দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও এক বছরে জমা পড়েনি চার্জশিট। একই অবস্থা শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর মালিক আহমেদুর রশীদ টুটুল হত্যা চেষ্টা মামলার।
পুলিশ বলছে, আরো কয়েকজন আসামিকে গ্রেফতার করতে পারলেই চার্জশিট দেয়া সম্ভব হবে। এদিকে দীপনের পরিবার বলছে, সুষ্ঠু বিচারের ভার রাষ্ট্রের উপর ছেড়ে দিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশের প্রকাশনা জগৎকে বদলে দেয়ার স্বপ্ন, অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ভাস্বর সমাজ গড়ার ব্রত নিয়ে কাজ করছিলেন যে গুটিকয়েক তরুণ তাদেরই একজন ফয়সাল আরেফিন দীপন। মুক্তচিন্তার বই প্রকাশনার দায়ে গেলো বছরের এইদিনে শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে নিজ প্রতিষ্ঠানে কুপিয়ে হত্যা করা হয় তাকে।
একই দিন লালমাটিয়ার নিজ কার্যালয়ে নৃশংস হামলার শিকার হন শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর সত্ত্বাধিকারী আহমেদুর রশিদ টুটুল ও লেখক ব্লগার রনদীপম বসু ও তারেক রহিম। পরের তিনজন ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও দীপনের ফেরা হয়নি জীবনের জয়গানে। তবে দীপনের জীবন থমকে গেলেও থমকে যায়নি তার স্বপ্ন। তার প্রিয় প্রতিষ্ঠান জাগৃতিকে জাগিয়ে রেখেছেন তার স্ত্রী। চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতো সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী পেশা থেকে এসেও পরিচালনা করছেন প্রকাশনা সংস্থা।দিপনের স্ত্রী বলেন, বই মেলায় স্টল করাটায় সাহসের ব্যাপার ছিল।পরে তিনি বুঝতে পারেন, স্টল না হলেই বরং ক্ষতি হতো। যে আঘাত তাদের উপর নেমে এসেছে তা সামলানোটাই বড় ব্যাপার ছিলো বলে মনে করেন তিনি। আর বিচারের প্রক্রিয়া তদন্তাধীন রয়েছে। সেটি দেখার দায়িত্ব সরকারের বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে পুলিশ বলছে, দীপন হত্যার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে আনসার আল ইসলামের দুই কর্মীকে গ্রেফতার করেছেন তারা। আসামিরা আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছে। এছাড়া হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী শরিফ ও ওরফে মুকুল রানা মারা গেছে বন্দুকযুদ্ধে। দীপন হত্যা রহস্যের জট খুলেছে বলে পুলিশ দাবি করলেও প্রশ্ন ছিলো এক বছরেও চার্জশিট জমা পড়েনি কেন?
তারা বলেন, এই হত্যাকাণ্ডে আরো যারা জড়িত রয়েছে। তাদের গ্রেফতার করে সহসাই চার্জশিট দেয়া হবে বলে আশা করেন তারা।
এছাড়া আহমেদুর রশিদ টুটুল হত্যা চেষ্টা মামলায় গ্রেফতার চারজনের মধ্যে দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তবে এই মামলারও অভিযোগপত্র জমা পড়েনি এখনো।