সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধ্বংস হতে বসেছে নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী হাজীগঞ্জ দুর্গ। আর নজরদারীর অভাবে মোঘল আমলের অন্যতম এ স্থাপত্য নিদর্শনটি এখন পরিণত হয়েছে মাদকসেবীদের আড্ডার স্থল হিসেবে। এতে দিনদিন আগ্রহ হারাচ্ছেন পর্যটকরা। জেলা প্রশাসনের মতে,এ ব্যাপারে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের এগিয়ে আসা উচিত।
মোঘল আমলের অন্যতম নিদর্শন নারায়ণগঞ্জের হাজীগঞ্জ দুর্গটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আওতায় নিয়ে সংস্কার করা হয় ১৯৫০ সালে। এরপর দীর্ঘদিন আর কোন সংস্কারের ছোঁয়া লাগেনি দুর্গটিতে। এরই মধ্যে দুর্গটির মূল ফটক এবং ওয়াচ টাওয়ার ভেঙ্গে গেছে। দুর্গের বাইরের বেশ কয়েকটি নকশা করা পিলার ও নির্মাণ শৈলীও নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। খসে পড়েছে দেয়ালের ইট ও পলেস্তারা।
এ অবস্থায় দুর্গটি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়েছেন দর্শনার্থীরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের যথাযথ তদারকি না থাকায় দুর্গের ভেতরে অবাধে চলে মাদকসেবীদের আড্ডা। এছাড়া ভূমিদুস্যরা দখল করে নিচ্ছে দুর্গের আশপাশের অনেক জমি।
স্থানীয় এক নারী জানান, এখানে অনেক সময় খোলামেলা ভাবে মাদক সেবন করা হয়। ছিনতাইয়ের মতো ঘটনাও ঘটে তাই সন্তানদের নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে দুর্গটিতে মাদকসেবীদের আড্ডা বন্ধ করে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা স্কাউটকে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপনের অনুমতি দিলেও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর অনুমোদন না দেয়ায় তা বাস্তবায়ন হয়নি।
নারায়ণগঞ্জ বাংলাদেশ স্কাউট সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক ভুঁইয়া বলেন, ‘লিখিত কোন অনুমোদন আমরা পাইনি। জেলা প্রশাসক আমাদের এটা দিয়েছেন। সেটার ওপর ভিত্তি করে আমরা অস্থায়ীভাবে বিভিন্ন সময় স্কাউটিং প্রোগ্রাম করে থাকি।’
অবশ্য ঐতিহ্যবাহী এ দুর্গটির সংস্কারে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগিতা কামনা করেছেন জেলা প্রশাসক।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান মিঞা বলেন, ‘মাদকসেবীরা যাতে আড্ডা দিতে না পারে এবং সেখানে যাতে ভালো মানুষরা যেতে পারে পরিদর্শনের জন্য সে করণেই আসলে স্কাউটকে দেওয়া। তবে আমার অনুরোধ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর যেনো আর একটু এগিয়ে আসে।’
প্রায় সাড়ে ৩ শ’ বছর আগে ঈশা খাঁর আমলে গড়ে তোলা হয় ঐতিহ্যবাহী হাজীগঞ্জ দুর্গটি।