প্রার্থীরা যখন নগরবাসীর জন্য প্রতিশ্রুতির লাল ডালা সাজাচ্ছেন, তখন এ প্রজন্মের নতুন ভোটাররা তাতে না ভুলে, ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আগে বিচার বিশ্লেষণ করতে চান প্রার্থীর অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে।
বিশেষ করে সন্ত্রাস নির্মুলের পাশাপাশি যারা নারায়ণগঞ্জকে মনোরম ও শিক্ষা বান্ধব নগরী হিসেবে গড়ে তুলবেন তাদেরকেই অগ্রাধিকার দিতে চান দেড় লাখ তরুণ ভোটার। ভোটকে কেন্দ্র করে কোন অস্থিতিশীল পরিবেশ দেখতে চান না নতুনরা।
প্রায় ৭৩ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। যেখানে বর্তমানে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ ৭৫ হাজার।
২০১১ সালে প্রথম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় নারায়ণগঞ্জে ভোটার সংখ্যা ছিলো ৪ লাখ চার হাজারের মত। সে হিসেবে এবারের নির্বাচনে নতুন ভোটার বেড়েছে ৭০ হাজারেরও বেশী। সব প্রার্থীই যে এই বিপুল সংখ্যক তরুণ ভোটারকে নিজের দিকে টানার চেষ্টা করবেন তা স্পষ্ট।
তবে নতুন প্রজন্মের তরুণরা বলছেন, প্রার্থীদের বিগত দিনের কাজের হিসাবনিকাশ করেই তারা ভোট কেন্দ্রে যাবেন। যে প্রার্থী মাদক নির্মূল করে শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেবেন, তাকেই পছন্দ করবেন তরুণরা।
‘আমরা চাচ্ছি এমন একজন মেয়র যে তরুণদের খেয়াল রাখবে। আমাদের জন্য মাঠের ব্যবস্থা করবে।’ বলছিলেন নারয়ণগঞ্জের এক তরুণ।
তাদের দাবি, দুই তিনটা ওয়ার্ড মিলে একটা জিমনেশিয়াম, সুইমিং পুল, খেলার মাঠের ব্যবস্থা করা যাতে তরুণরা অন্য কোন খারাপ দিকে ঝুঁকে না পড়ে।’
তবে রাজনীতি বিমুখ অনেক তরুণ বলছেন, জীবনে প্রথমবার হলেও সহিংসতার কোনো আলামত পেলে তারা ঝুঁকি নিয়ে ভোট কেন্দ্রে যাবেন না।
এদিকে প্রায় পৌনে এক লাখ নতুন ভোটারসহ দেড় লাখ তরুণের মন জয় করতে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থী।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সেলিনা হায়াত আইভী বলেন, ‘পর্যাপ্ত মাঠ করে দেওয়া এবং সাংস্কৃতি বান্ধব একটা নগরী গড়ে তুলতে চাই নতুন প্রজন্মের জন্য। ডিজিটাল বাংলাদেশে বসে অ্যানালগ চিন্তা করতে চাই না। ফলে তাদের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়েই এ শহরকে গড়তে চাই।’
বিএনপি প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ‘তরুণদের মাদক, সন্ত্রাস থেকে দূরে রাখার জন্য যে পরিবেশ দরকার চেষ্টা করবো সেটা তৈরি করার।’
সবকিছু মিলিয়ে ২২শে ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে তরুণরাই জয় পরাজয়ের নিয়ামক হতে যাচ্ছেন বলে মনে করছেন নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা।