প্রস্তাব নিয়ে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে বঙ্গভবনে যান।
রাষ্ট্রপতির সহকারী প্রেস সচিব মাহমুদুল হাসান বলেন, “বিএনপির প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতির সহাকারী সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইনুর রহমানের কাছে তাদের মহাসচিবের সই করা চিঠি এবং প্রস্তাবের মুদ্রিত কপি হস্তান্তর করেন।”
বিএনপি প্রতিনিধিদল যাওয়ার আগেই সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে বঙ্গবভবন ত্যাগ করেন।
বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিকট হস্তান্তরের জন্য দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশন গঠন ও শক্তিশালীকরণে দেশনেত্রীর উপস্থাপিত ১৩ দফা প্রস্তাবাবলীর মুদ্রিত কপি ও দলের মহাসচিব স্বাক্ষরিত একটি আবেদন তার সহকারী সামরিক সচিবের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। তিনি সেটা অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করেছেন।
“তিনি জানিয়েছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি শারীরিক অসুস্থতার কারণে বিদেশে গিয়েছেন। তিনি ১১ ডিসেম্বর দেশে ফিরে আসবেন। এরপর ধারাবাহিকতাভাবে বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করবেন।”
রাষ্ট্রপতির সহকারী সামরিক সচিবের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় নির্ধারিতই ছিল বলে জানান রিজভী।
কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদপূর্তি হচ্ছে আগামী ফেব্রুয়ারিতে। এরপর যে কমিশন দায়িত্ব নেবে, তাদের অধীনেই ২০১৯ সালে একাদশ জাতীয় নির্বাচন হবে। নতুন কমিশনই বাছাই কমিটির মাধ্যমে করা হবে- এমন আভাস আগেই দিয়েছেন আইনমন্ত্রী।
তিনি নির্বাচন কমিশন নিয়োগে বাছাই কমিটি গঠনের রূপরেখা, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা এবং ‘সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ’ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ ১৩টি প্রস্তাব দেন।
এসব প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছাতে গত ২১ নভেম্বর খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব আবদুস সাত্তার টেলিফোনে রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিবের সঙ্গে কথা বলেন। কোনো জবাব না পেয়ে ২৩ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ চায় বিএনপি। এতেও সাড়া না পেয়ে প্রস্তাবসহ একটি চিঠি বঙ্গভবনে পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত নেয় দলটি।
বিজয় দিবসের পরপরই রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে বর্তমান কমিশন ও নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসতে পারেন বলে এরই মধ্যে আভাস দিয়েছেন রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন।
প্রেস সচিব কোনো তারিখ না বললেও বঙ্গভবনের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ১৮ ডিসেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করার কথা ভাবা হচ্ছে। আর প্রথমদিনই বিএনপিকে ডাকা হতে পারে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, “আমরা প্রত্যাশা করি, মহামান্য রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে এদেশের মানুষের যে আকাঙ্খা- নির্বাচন কমিশন কেমন হওয়া উচিৎ, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন কমিশন গঠনে কার্য্কর উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।”