বিজয়ের ছেচল্লিশে, আরেকটি বিজয়ের অপেক্ষায় বাংলাদেশ। দেশের সীমানা পেরিয়ে, বাংলা ভাষা যখন পৌঁছে গেছে বিশ্ব দরবারে তখন, সেই ভাষার বর্ণশিক্ষার শিক্ষক কেনো নয়? শাহানাজ পারভীন; অর্থের অভাবে প্রাথমিকের গন্ডি না পেরুনো শিশুদের আলোর বাতিঘর তিনি।
বগুড়া শেরপুর উপজেলার সদর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই শিক্ষক মনোনীত হয়েছেন বিশ্বসেরা শিক্ষক পুরষ্কারের ৫০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকায়।
অভাবের সংসারে, যখন তিনবেলা দু’মুঠো খাবার জোটেনা, শিক্ষা তখন দূরের বাতিঘর। সেই বাতিঘরের আলোকবর্তিকা, একজন নারী। নাম শাহানাজ পারভীন। তিনি শিক্ষার ফেরিওয়ালা।
অনটনের টানাটানিতে ছিন্নমুল শিশুদের কাছে, বর্ণ পরিচয় যখন রুপকথা, তখন ভালোবাসা দিয়েই খুব পরিচিত সেই গল্পগুলোকেই, পাল্টে দিচ্ছেন তিনি। ছড়িয়ে দিচ্ছেন জ্ঞানের আলো সুবিধা-বঞ্চিত, কুসুম-কলিদের মাঝে।
গড়ে তুলেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়। নিজের টাকায় রেখেছেন দুইজন শিক্ষক, একজন দপ্তরি। শিশুদের কিনে দেন, সকল শিক্ষা উপকরণ। পড়াশোনার পাশাপাশি, প্রায় ৫০ জন শিশুর মনের বিকাশ ঘটাচ্ছেন শুদ্ধ সংস্কৃতির চর্চায়।
শুরু করেছেন প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাও। এছাড়াও, নতুন শিক্ষকদের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মশালার পাশাপাশি শাহনাজ পারভীন গবেষণাও করছেন, ঝরে পড়া শিশুদের নিয়ে।
অর্থ যে সবসময় অনর্থের ডাক দিয়ে যায় তা নয়, কখনো তা দেশ গড়ার কথাও বলে যে আহবান পৌঁছে গেছে বিশ্ব মানচিত্রে। তাইতো, সম্প্রতি ভারকি ফাউন্ডেশনের বিশ্ব সেরা শিক্ষকদের ৫০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় শাহনাজ পারভীন। যেখানে ছিলো ১৭৯টি দেশ আর ২০ হাজার শিক্ষক।
বিজয়ের মাসে এ যেনো আরেকটি বিজয়গাঁথা গল্প, যে আলো রঙ ছড়াবে স্বাধীনতার মাসে। ১৯ মার্চ, ২০১৭ দুবাইতে ঘোষণা করা হবে সেরা শিক্ষকের নাম।