২০০১ সালে বোকা জুনিয়র্সে সিনিয়র পর্যায়ে ক্লাব ফুটবল শুরু করেন কার্লোস তেভেজ। আর সর্বশেষ এক মৌসুম খেললেন বাল্যকালের সেই ক্লাবে। এর মাঝে আর্জেন্টিনার এ স্ট্রাইকার খেলেন করিন্থিয়ান্স, ওয়েস্ট হ্যাম, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার সিটি ও জুভেন্টাসে। অনেকে মনে করছিলেন, বাল্যকালের ক্লাব বোকা জুনিয়র্সে ক্যারিয়ার শেষ করবেন তেভেজ। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। কাড়িকাড়ি টাকার হাতছানি উপেক্ষা করতে পারেন না কেউ। তেভেজও পারলেন না। তিনি যোগ দিচ্ছেন চীনের ক্লাব শাংহাই শেনহুয়াতে। কয়েকটি বৃটিশ সংবামাধ্যম মনে করছে, তলেতলে তেভেজকে নিশ্চিত করে ফেলেছে চীনের ক্লাবটি। চায়নিজ সুপার লীগের এ ক্লাবটির সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি করবেন তিনি। সাপ্তাহিক বেতনে বিশ্বরেকর্ড গড়বেন তেভেজ। ক্লাবটিকে তাকে সপ্তাহে ৬১৫,০০০ পাউন্ড বেতন দিবে বলে জানাচ্ছে বৃটিশ ট্যাবলয়েড ‘ডেইলি মেইল’। এই তথ্য সত্যি হলে তেভেজ হবেন বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বেতন পাওয়া ফুটবাল। বর্তমানে রিয়াল মাদ্রিদের ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও বার্সেলোনার লিওনেল মেসি সপ্তাহে সর্বোচ্চ ৩৬৫,০০০ পাউন্ড। কিন্তু তাদেরকে টপকে বিশ্বরেকর্ড গড়ার পথে তেভেজ। চায়নিজ সুপার লীগ চলতি মৌসুমে ইউরোপের বড় ক্লাবগুলোকে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে। তারা বিশ্বের নামিদামি খেলোয়াড়দের সামনে প্রচুর অর্থের প্রস্তাব দিয়ে প্রলুদ্ধ করছে। এই তালিকায় লিওনেল মেসিও আছেন বলে ক’দিন আগে জানায় বৃটিশ গণমাধ্যম। তবে এবার যে চায়নিজ লীগে বেশ কিছু নামি খেরোয়াড় যাচ্ছেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। চেলসির ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার অস্কারকে দলে নিচ্ছে শাংহাই এসআইপিজি। তারা অস্কারকে সপ্তাহে ৪০০,০০০ পাউন্ড বেতন দিবে বলে জানা যাচ্ছে। এই চক্তি যদি বাস্তবায়ন হয় তাহলে মেসি-রোনালদোকে টপকে তেভেজের পরেই তিনি হবেন বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেতন পাওয়া খেলোয়াড়। চীনে যাওয়ার ব্যাপারে তেখেন এখনও আনুষ্ঠাতিক ঘোষণা না দিলেও পরিস্থিতি বলে দিচ্ছে তিনি বোকা জুনিয়র্স ছাড়ছেন। আর্জেন্টিনার লীগে সোমবার কোনোলের বিপক্ষে মাঠে নামে তেভেজের বোকা জুনিয়র্স। ম্যাচটি বোকা জুনিয়র্স জেতে ৪-১ গোলে। দলের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন ৩২ বছর বয়সী তেভেজ। ওই গোলটি করে আলাদা আবেগ দেখান তিনি। মাঠের সব দর্শকদের হাত উঁচু করে বিদায় জানানোর ভঙ্গি করেন। ম্যাচ শেষেও একই কাজ করেন। আর গ্যালারিতে দর্শকরা তেভেজকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্লাকার্ড নিয়ে যায়। সেখানে লেখা ছিল, ‘তেভেজ তোমায় ভুলবো না’, ‘তেভেজ তুমি যেও না’- এই ধরনের বাক্য। এছাড়া ম্যাচ চলাকালে এক তরুণ দর্শকদের মাঠের মধ্যে ঢুকে পড়েন। তিনি গিয়ে তেভেজকে জড়িয়ে ধরেন। এতে তেভেজ যে ক্লাবটি ছেড়ে যাচ্ছেন সেটা স্পষ্ট হয়। আর ম্যাচ শেষে বোকা জুনিয়র্সের টুইটার পেজে তেভেজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায় তারা। সবকিছুর জন্য তারা ধন্যবাদ জানিয়েছে।