জঙ্গিদের আত্মঘাতী হওয়ার প্রবণতাকে উদ্বেগজনক বলছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। তাদের মতে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর জঙ্গি বিরোধী শক্ত অবস্থান ও ধারাবাহিক অভিযানে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও আত্মঘাতী প্রবণতা রোধ করা কঠিন। বিশ্লেষকরা বলছেন শুধু আইন প্রয়োগের মাধ্যমে এটি রোধ করা সম্ভব নয়। এর জন্য নানা উদ্বুদ্ধ করণ কর্মসূচি নেয়া উচিৎ।
১৯৯৯ সালে কবি শামসুর রাহমানের উপর হামলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার শুরু। এরপর একে একে যশোরে উদীচীর অনুষ্ঠানে, রমনা বটমূলে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে হামলা, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা কিংবা দেশের ৬৩টি জেলায় একযোগে হামলার মধ্য দিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব ও শক্তিমত্তার কথা জানান দিয়েছে জঙ্গি সংগঠনগুলো।
তবে দেশের ইতিহাসে নৃশংসতা বিবেচনায় সবচেয়ে বড় হামলার ঘটনাটি ঘটে গুলশানে হলি আর্টিজানে। এরপর থেকেই দেশজুড়ে জঙ্গি বিরোধী হামলা জোরদার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। সেই ধারাবাহিকতায় গত ছয়মাসে ঢাকা ও এর আশপাশে ৬টি বড় ধরণের অভিযানে নিহত হয় ২৮ জঙ্গি।
পুলিশ বলছে, এসব অভিযানে বিভিন্ন সময় আত্মঘাতী হামলা কিংবা বোমা মেরে নিজেদের ধ্বংস করার হুমকি দিয়েছে জঙ্গিরা। কিন্তু আশকোনা অভিযানে প্রথমবারের মতো আত্মসমর্পণের ভাণ করে আত্মঘাতী হয়েছে এক নারীসহ দুজন। এমনকি নিজেদের রক্ষায় ব্যবহার করছে শিশু সন্তানদেরও। আত্মঘাতী হওয়ার এই প্রবণতাকে উদ্বেগজনক বলছে পুলিশ।
পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘তারা মনে করে জিহাদ করে যদি তারা মৃত্যু বরণ করে তাহলে তারা জান্নাতে চলে যাবে। আমি মনে করি এটা আমাদের জন্য চিন্তার বিষয়।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, নানাভাবে চাপে থাকা জঙ্গিরা ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া চেষ্টা থেকেই আত্মঘাতী স্কোয়াড তৈরি করছে।
অপরাধ বিজ্ঞানী শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহীনিকে অভিযান পরিচালনা করে এর সমাধান পৃথিবীতে কোথাও হয়নি। আমরাও মনে করি না যে এটা সঠিক পথ।’
অপরাধ বিশ্লেষকদের মতে, সম্প্রতি যেসব তরুণ স্বেচ্ছা নিখোঁজ হয়েছেন তাদের হদিস এখনো বের করতে পারেনি পুলিশ। তাদের মতে নিখোঁজের আলামত থেকে বোঝা যায় জঙ্গিরা আবারো সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে।