টাঙ্গাইল প্রতিনিধি ॥ টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলবে। এই নির্বাচনে তিনজন প্রার্থী অংশ নিয়েছে। এরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারি (নৌকা), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) মনোনীত প্রার্থী আতাউর রহমান খান (টেলিভিশন) এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) মনোনীত প্রার্থী ইমরুল কায়েস (আম) প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
সকালে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম হলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে উপস্থিতি বাড়ার আশা করা হচ্ছে। নির্বাচনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ভোটারদের মাঝে নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ কম। ফলে ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম হতে পারে ধারণা করছেন ভোটারসহ সংশ্লিষ্টরা।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপনির্বাচনের সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. তাজুল ইসলাম জানান, কালিহাতী উপজেলার দুইটি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই আসনে মোট ভোটার রয়েছে তিন লাখ ৭ হাজার ৭০০জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে এক লাখ ৫২ হাজার ৮৩৩ জন এবং মহিলা ভোটার এক লাখ ৫৪ হাজার ৮৬৭ জন। ১০৭টি কেন্দ্রের ৬৬১টি কক্ষে ভোট গ্রহণ হচ্ছে। নির্বাচনে ১০৭ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ৬৬১ জন সহকারি প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এবং এক হাজার ৩৮৮ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন। নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, এই আসনের সাবেক এমপি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ২০১৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের একটি সংবর্ধনা সভায় হজ্জ ও তাবলীগ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করলে সারা দেশে মুসলিম সম্প্রদায়ের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে তিনি দেশে ফিরলে গ্রেফতার হন। জামিনে মুক্ত হয়ে প্রথমে মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর দল থেকে বহিস্কার ও ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর তিনি সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে ৩ সেপ্টেম্বর আসনটি শুন্য ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে সংসদ সচিবালয়। এরপর লতিফ সিদ্দিকীর ছোট ভাই আব্দুল কাদের সিদ্দিকী এই আসনে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিলে ঋণ খেলাপির জন্য তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। পরবর্তিতে তিনি নির্বাচন কমিশন ও হাইকোর্টে আপীল করলে সেখানেও তার আবেদন খারিজ হয়ে যায়। সর্বশেষ তিনি লিভ টু আপীল করলে গত ১৮ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ আপীল বেঞ্চ শুনানী শেষে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে কাদের সিদ্দিকীর লিভ টু আপীল খারিজ করে দেন। এরপর উপনির্বাচন সম্পন্ন করতে আর কোন বাঁধা না থাকায় গত ২৪ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন ৩১ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের দিন ধার্য্য করে।