আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত মারা গেছেন। রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৪টা ২৪ মিনিটে মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিলো ৭০ বছর।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সকালে ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে তাঁকে ল্যাব এইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল সন্ধ্যায় তাঁর অবস্থার অবনতি হলে রাত ৯টার দিকে তাঁকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। পরে ভোরে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
খবর পেয়ে তাকে দেখতে হাসপাতালে যান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ অনেকে। তার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে গিয়েছেন সুনামগঞ্জ পাঁচ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক। তিনি জানিয়েছেন, এখন মরদেহ দ্রুত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের গুলশানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত ছাত্র জীবন থেকেই ছিলেন রাজনীতিতে সক্রিয়। বাংলাদেশের প্রবীন সংসদ সদস্যদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ হিসেবেও তার বিশেষ পরিচিত ছিলো। সুনামগঞ্জ ২ আসনে সাত বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জন্ম ১৯৪৬ সালে সুনামগঞ্জের আনোয়ারাপুরে। প্রথম জীবনেই বামপন্থি আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন তিনি। সত্তরের প্রাদেশিক পরিষদে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ছিলেন অন্যতম কনিষ্ঠ সদস্য। স্বাধীন দেশে সুরঞ্জিত দ্বিতীয়, তৃতীয়, পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম জাতীয় সংসদসহ মোট সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
তিনি ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর তিনি রেলমন্ত্রী হন।
তবে সহকারীর অর্থ কেলেঙ্কারির দায় মাথায় নিয়ে তিনি পদত্যাগ করলেও তা গ্রহণ না করে সে সময় তাকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হিসাবে রাখেন শেখ হাসিনা।
সুরঞ্জিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন। সেন্ট্রাল ল’ কলেজ থেকে এলএলবি করার পর আইন পেশায় যুক্ত হন তিনি।
আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সুপ্রিম কোর্ট বার কাউন্সিলেরও সদস্য। ষাটের দশকের উত্তাল রাজনীতি থেকে উঠে আসা বামপন্থি এই নেতা সবশেষ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন।