‘ডুব’ নিয়ে অনেকটা নির্ভার হয়েই পথ চলছিলেন নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। কিন্তু ছবিটি নিয়ে একের পর এক কারণে জল ঘোলা হচ্ছেই। এবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের বাধার মুখে পড়ল তার নতুন এ ছবিটি। তবে কী কারণে তথ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশক্রমে গতকাল ইস্যু করা অনাপত্তিপত্র স্থগিত করা হয়েছে তা ব্যাখা করা হয়নি।
এ বিষয়ে ফারুকী তার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘কার্যত আমাদের ছবিটি এখন আটকে গেল। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, এই সাসপেনশন সাময়িক। এবং এটা বেআইনি কাজ হয়েছে । যে বা যাহারা সরকারের কাঁধে বন্দুক রেখে নিজের ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটানোর চেষ্টা করেছেন, তারা কেবল সরকারকে বিব্রতই করছেন। সরকারের প্রতি আমাদের আস্থা আছে।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমরা কোনো ধরনের কপি রাইট লঙ্ঘন বা কোনো বেআইনি কাজ করিনি। সুতরাং আমরা তথ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চাইবো এই আদেশের পেছনে কী কারণ আছে। আমরা বিশ্বাস করি এই আদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হবে। এবং আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশনকে শ্রদ্ধা করা হবে। নতুবা বাংলাদেশের আদালতের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে।’
‘ডুব’ এ অভিনয় করেছেন বলিউডের অভিনেতা ইরফান খান, বাংলাদেশের তিশা, রোকেয়া প্রাচী ও ভারতের পার্নো মিত্র। গত বছর ছবির শুটিং শেষে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ বেরিয়েছিল, ছবিটি এ দেশের জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জীবনীনির্ভর।
প্রসঙ্গত এই আশঙ্কা থেকে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সেন্সর বোর্ডে একটি চিঠি দিয়েছেন হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। তাতে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন যে, ‘ডুব’ ছবিটি তার প্রয়াত স্বামী কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জীবনীনির্ভর কিনা, তা বিবেচনায় রাখার জন্য। কারণ, গত বছর ভারত ও বাংলাদেশের কিছু সংবাদমাধ্যমকে এ ছবিরই কয়েকজন শিল্পী এমন তথ্য দিয়েছিলেন।
তবে ছবিটি কেনো নিষিদ্ধ করা হলো? এ বিষয়ে বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন কুমার ঘোষ গণমাধ্যম’কে বলেন, ‘এটা বিএফডিসির বিষয় নয়। বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ড বিষয়টি তত্বাবধান করেন।’
তবে এ বিষয়ে গণমাধ্যমে ইরফান খানের বক্তব্য পাওয়া গেছে এমন,-‘ছবিটি নিষিদ্ধ করায় আমি সত্যি বিস্মিত। ছবিটি মূলত একজন নারী ও পুরুষের জটিল সম্পর্ক ও একটি মানবিক বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত। এতে সমাজের কী ক্ষতি হতে পারে?’
গত বছরের ১৭ মার্চ ‘ডুব’ ছবির শুটিংয়ে অংশ নিতে অভিনয়শিল্পী ইরফান খান ঢাকায় আসেন। ছবির ইংরেজি নাম ‘নো বেড অব রোজেস’। এটি বাংলাদেশে জাজ মাল্টিমিডিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে ভারতের এসকে মুভিজ ও ইরফান খানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ।