অবশেষে ২৫ শে মার্চকে গণহত্যা দিবস ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার। একইসঙ্গে সরকার আন্তর্জাতিকভাবেও এ দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ে কাজ করবে।
শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের উপর আলোচনা শেষে আজই সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক। সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত: জানিয়ে শহীদ পরিবারের সন্তানরা বলছেন, এ পদক্ষেপে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণে নতুন একটি অর্জন যুক্ত হবে।
সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে শহীদ পরিবারের সন্তানরা বলছেন, এ পদক্ষেপে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণে নতুন একটি অর্জন যুক্ত হবে।
২৫শে মার্চ, ১৯৭১। ইতিহাসের এক নৃশংসতা হত্যাযজ্ঞের কালরাত। পরে অবশ্য এই কালরাতের পথ ধরেই বাংলার আকাশে এসেছে স্বাধীনতার সূর্য। তবে স্বাধীন দেশে ২৬শে মার্চকে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করা হলেও ২৫শে মার্চের কালরতকে দেয়া হয়নি কোন আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি।
এমন অবস্থায় স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর এসে দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষণার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এ বিষয়ে শনিবারই সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ এর আওতায় একটি প্রস্তাবের উপর বিস্তারিত আলোচনায় অংশ নেয়ার কথা রয়েছে সংসদ সদস্যদের। যেখানে ২৫শে মার্চকে গণহত্যা দিবস ঘোষণা করে আন্তর্জাতিকভাবেও এ দিবসের স্বীকৃতি আদায়ের কথা বলা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী জানিয়েছেন, ইতিহাসের প্রতি দায়বদ্ধতায় আগামী ২৫শে মার্চ থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘অতিতে করা হয়নি এখনো হবে না, এমনটা হতে পারে না। এ বছরই ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের জন্য সরকারিভাবে ঘোষণা আসবে। একইভাবে আন্তর্জাতিকভাবে গণহত্যা দিবস পালনের জন্য সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
এদিকে সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে শহীদ পরিবারের সন্তানরা বলছেন, বিলম্ব হলেও ইতিহাসের দায় মোচনে ভূমিকা রাখবে সরকারের এ পদক্ষেপ।
শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর সন্তান আসিফ মুনীর বলেন, ‘আমরা ২৬ মার্চ পালন করতে গিয়ে আমরা তরুণ প্রজন্মকে অত বেশি বুঝতে দেখি না যে ২৫ মার্চ রাতে কি হয়েছিলো। এখন আমরা যদি গণহত্যা দিবস পালন করতে পারি তাহলে কিছুটা সম্পূরক হয়। ইতিহাসকে মানুষের সামনে নিয়ে আসার ক্ষেত্রেও কিছুটা ভূমিকা রাখবে।’
১৯৭১ এর ২৫শে মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাক বাহিনীর হাতে যেসব শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন তাদের অনেকের নামই লেখা রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতিফলকে। এতদিন ২৫শে মার্চের কালো রাতে এসে ব্যক্তিগত উদ্যোগে শ্রদ্ধা জানাতো সাধারণ মানুষ। তবে স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৫ বছর পর রাষ্ট্রীয়ভাবে দিবসটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের সরকারি উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।