পঞ্চাশ বছরের গবেষণা। তারপর বিস্ময়কর এক আবিষ্কার ধরা দিয়েছে। বৃটেনের ইউনিভার্সিটি অব অ্যাবারডিনের গবেষকরা বের করেছেন গর্ভনিরোধী একটি পিল। এই পিল ডিম্বাশয়, গর্ভাশয় ও অন্ত্রের ক্যান্সার থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত সুরক্ষা দিতে পারে নারীদের। এর ফলে অনেক নারীর মধ্যে নতুন করে আশা জেগে উঠেছে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য মিরর। এতে বলা হয়, এই পিলটি সেবন করলে ৩০ বছর পর্যন্ত নারীদের দেহে কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ করে প্রজনন তন্ত্রে ক্যান্সার বাসা বাঁধার আশঙ্কা অনেক কমে যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও কমে যায়। এ আবিষ্কারের মাধ্যমে কোটি কোটি নারীকে সুস্থভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখানো হচ্ছে বা পথ দেখিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ জন্য গবেষকদের ভূয়সী প্রশংসা করছেন চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত পেশাদাররা। এ গবেষণার সঙ্গে জড়িত ডাক্তার লিসা ইভারসেন। তারা প্রায় ৫০ বছরে ৪৬ হাজার নারীর কাছ থেকে ডাটা নিয়ে তা গবেষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, এই পিল ব্যবহারকারীরা তাদের জীবদ্দশায় সার্বিকভাবে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে না। কিছু কিছু ক্যান্সারের প্রতিরোধ হিসেবে কমপক্ষে ৩০ বছর পর্যন্ত কার্যকর থাকে এর প্রভাব। এই পিল ব্যবহারকারী নারীদের কলোরেক্টাল বা অন্ত্র, ডিম্বাশয় ও গর্ভাশয়ের ক্যান্সার থেকে মুক্ত রাখে। দীর্ঘমেয়াদে যাতে এটা কার্যকর থাকে সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করেছি। একবার এ পিল সেবন করলে তার কার্যকারিতা দীর্ঘস্থায়ী হয়। ফলে তার নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আমরা গবেষণায় পাই নি। তাই নারীর বয়স যতই বাড়তে থাকে ততই তিনি নিরাপদ থাকেন। রয়েল কলেজ অব জিপিএস-এর চেয়ার প্রফেসর হেলেন স্টোকস-ল্যাম্পার্ড বলেছেন, বিশ্বে কোটি কোটি নারী মুখে গর্ভনিরোধী পিল সেবন করেন। তারা এই গবেষণায় আস্থা রাখতে পারেন। ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে’র এমা শিল্ড বলেন, এর আগে বিশাল আকারে যেসব গবেষণা হয়েছে তাতে দেখা গেছে উদ্ভাবিত পিল নারীদের ডিম্বানু ও গর্ভাশয় ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমায়। কিন্তু কার্ভিক্যাল বা গ্রীবা সংক্রান্ত ও স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। তবে এবার উদ্ভাবিত পিল সেবন করলে ডিমান্বু ও গর্ভাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে আনার পাশাপাশি এসব ঝুঁকিও কমিয়ে দেয়। যেসব নারী এ পিল সেবন বন্ধ করে দেয়ার কথা ভাবছেন তাদেরকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে।