কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মুক্তিযোদ্ধা আবৃত্তিশিল্পী কাজী আরিফের মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা এবং গার্ড অব অনার প্রদান শেষ হয়েছে গতকাল। আজ বেলা ৩টায় তাকে দাফন করা হবে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধা কবরস্থানে। দাফনের আগ পর্যন্ত তার মরদেহ বিশেষ ব্যবস্থায় রাখা হবে ধানমন্ডিতে মেয়ের বাসায়। এর আগে কাজী আরিফের মরদেহবাহী বিমান গতকাল সকাল পৌনে ৯টায় ঢাকার হজরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামে। সেখানে তার মরদেহ গ্রহণ করে পরিবারের সদস্যরা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কাজী আরিফের মরদেহ দুপুর ১টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয়। এখানে মুক্তিযোদ্ধা কাজী আরিফকে রাষ্ট্রীয়ভাবে শ্রদ্ধা জানান ঢাকা জেলার জ্যেষ্ঠ ম্যাজিস্ট্রেট রবীন্দ্র চাকমা। এদিকে কাজী আরিফকে শেষবারের মতো বিদায় জানাতে শহীদ মিনারে উপস্থিত হয়েছিলেন সংস্কৃতি বিষয়কমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন
ইউসুফ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ, গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর, আবৃত্তিকার শিমুল মুস্তাফা, স্থপতি ও লেখক শাকুর মজিদ প্রমুখ। এ ছাড়া বিভিন্ন আবৃত্তি সংগঠনের সদস্যরাও ছিলেন শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে। শেষ শ্রদ্ধা জানানোর আয়োজনটি সমন্বয় করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস। সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জামে মসজিদে কাজী আরিফের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নেয়া হয় মেয়ের বাসায়। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের মাউন্ট সিনাই সেন্ট লুকাস হাসপাতালে গত শনিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে চিকিৎসকরা লাইফ সাপোর্ট খুলে নিয়ে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে কাজী আরিফ হাসপাতালে ‘ক্লিনিক্যালি ডেথ’ ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। কাজী আরিফ ১৯৫২ সালের ৩১শে অক্টোবর তৎকালীন বৃহত্তর ফরিদপুরের রাজবাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার শিক্ষা ও বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে। উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে। পেশায় স্থপতি এই গুণী একাধারে আবৃত্তিশিল্পী, লেখক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক।