যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত পত্রিকা দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের পাকিস্তান সংস্করণে দেশটির ক্ষমতাধর সেনাবাহিনীর সমালোচনামূলক একটি মতামত নিবন্ধ মুছে দেয়া হয়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের পাকিস্তান সংস্করণের স্থানীয় প্রকাশক ওই লেখা সেন্সর করেন। ওই লেখার স্থলটি খালি রাখা হয়। এ খবর দিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। খবরে বলা হয়, পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কথা বলাটা বিপজ্জনক ভাবা হয়। তবে নিউ ইয়র্ক টাইমসের ছাপা সংস্করণে ওই লেখা উধাও হয়ে গেলেও, অনলাইন সংস্করণের লেখাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। মোহাম্মদ হানিফ নামে একজন জনপ্রিয় ব্যাঙ্গরচয়িতা ও উপন্যাসিক ওই নিবন্ধটি লিখেছিলেন। পাকিস্তানি সমাজের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মোহাম্মদ হানিফের সমালোচনামূলক নিবন্ধ নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত হয়। ‘পাকিস্তান’স ট্রায়াঙ্গল অব হেইট’ (পাকিস্তানের ঘৃণার ত্রিভুজ) শিরোনামে ওই নিবন্ধে তিনি কড়া ভাষায় সামরিক বাহিনীর সমালোচনা করেন। সাবেক পাকিস্তানি তালেবানের এক মুখপাত্রকে সম্প্রতি সেনাবাহিনী টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে হাজির করে। তখন ওই মুখপাত্র দাবি করেন, তাদেরকে অর্থ সহায়তা দেয় পাকিস্তানের প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। এরই প্রতিক্রিয়ায় হানিফ ওই নিবন্ধে লিখেন, ‘তার (তালেবান মুখপাত্রের) উপস্থিতির মধ্য দিয়ে মনে হচ্ছিল যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদেরই বার্তা প্রকাশ করছে। যেন অনেকটা এমন যে, আপনি হাজারো পাকিস্তানিকে হত্যা করতে পারেন। কিন্তু পরে যদি সাক্ষ্য দিন যে, আপনি ভারতকে অতটাই ঘৃণা করেন যতটা আমরা করি, তাহলে সবকিছুই মাফ।’ হানিফ বলেন, ‘আমাদের শিশুদের যারা হত্যা করেছে, তাদেরকে ভারতের বিরুদ্ধে প্রচারে ব্যবহার করা কি আমাদের জন্য এতই জরুরি?’ নিউ ইয়র্ক টাইমসের পাকিস্তান সংস্করণে এই নিবন্ধটি মুছে সেখানে প্রকাশকের একটি মন্তব্য প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, এই নিবন্ধ সেন্সরের সিদ্ধান্ত পাকিস্তানে নেয়া হয়েছে। তবে নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকা কর্তৃপক্ষের এতে কোনো ভূমিকা নেই। এদিকে নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা বুঝি যে মাঝেমাঝে আমাদের প্রকাশনা অংশীদাররা স্থানীয়ভাবে চাপের সম্মুখীন হন, তবে আমরা আমাদের সাংবাদিকতার যে কোনো ধরনের সেন্সরশিপের নিন্দা জানাই।’