পেস-স্পিনে সমান ধারালো নৈপুণ্য দেখালেন টাইগার বোলাররা। ঝড়ো বোলিংয়ে ৬ ও স্পিন আক্রমণে উইকেট খোয়ালো ৪ আইরিশ ব্যাটসম্যান। এতে ১৮১ রানে খতম স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডের ইনিংস। ত্রিদেশীয় সিরিজে গতকাল বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৮১ রানে অলআউট হয় আয়ারল্যান্ড। ব্যাট হাতে অর্ধশতকের মুখ দেখেননি আয়ারল্যান্ড দলের কেউই। বাংলাদেশের বল হাতে সবচেয়ে ঝকঝকে ছবিটা ছিল পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের। ৯ ওভারের স্পেলে মাত্র ২৩ রানে চার উইকেট নেন বাংলাদেশের কাটার মাস্টার মোস্তাফিজ। আইরিশদের একে একে স্পিন ভেলকি দেখান মোসাদ্দেক হোসেন, সাকিব আল হাসান, সানজামুল ইসলাম। আর শেষে এক ওভারে জোড়া আঘাত হেনে আইরিশ ইনিংস থমকে দেন পেসার মাশরাফি। এদিনও বাংলাদেশকে বল হাতে প্রথম ব্রেক থ্রো এনে দেন মোস্তাফিজুর রহমান।
ত্রিদেশীয় সিরিজে টানা দুই ম্যাচে টসে হার দেখেন মাশরাফি। আর দুই ম্যাচেই ইনিংসের শুরুতে ব্যাট হাতে ক্রিজে যায় বাংলাদেশ। ডাবলিনের সবুজ পিচে গতকাল টস জিতে আয়ারল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠান বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। আর স্কোর বোর্ডে কোনো রান জমা না করেই সাঝঘরে ফেরেন আয়ারর্যান্ডের অভিজ্ঞ ওপেনার পল স্টারলিং। বল হাতে আয়ারল্যান্ড ইনিংসের প্রথম ওভারটি মেডেন নেন পেসার রুবেল হোসেন। আর দ্বিতীয় ওভারে দুই ডট বলের পর আইরিশ ওপেনার পল স্টারলিংকে সাজঘরের পথ দেখান মোস্তাফিজুর রহমান। এতে ১.৩ ওভার শেষে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ০/১। দ্বিতীয় উইকেটে এড জয়েস-পোর্টারফিল্ড গড়েন ৩৭ রানের জুটি। আর বাংলাদেশের বল হাতে এবার দায়িত্ব নেন স্পিনাররা। ব্যক্তিগত ২২ রানে আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডকে সাজঘরে ফেরান অফস্পিনার মোসাদ্দেক হোসেন। আর ১৪.২তম ওভারে দলীয় ৬১ রানে আইরিশ ব্যাটসম্যান অ্যান্ডি বালবায়ারনির স্টাম্প ভেঙে দেন বাঁ-হাতি স্পিন তারকা সাকিব আল হাসান। চতুর্থ উইকেটে প্রতিরোধ দেখান আইরিশরা। ৫৫ রানের জুটি গড়েন ওপেনার এড জয়েস ও নায়লা ও’ব্রায়ান। তবে টাইগারদের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠা জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমানই। ব্যক্তিগত ৩০ রানে মোস্তাফিজের ডেলিভারিতে সীমানা দড়ির কাছে তামিম ইকবালের হাতে ক্যাচ দেন চলতি সিরিজে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে সেঞ্চুরির কৃতিত্ব দেখানো আইরিশ ব্যাটসম্যান নায়াল ও’ব্রায়ান। ২৪.৩তম ওভারে দলীয় ১০০ রানের কোঠা স্পর্শ করে আয়ারল্যান্ড। আর নায়ালের বিদায়ে ২৮ ওভার শেষে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১১৬/৪-এ। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই ওপেনার এড জয়েসকে সাজঘরের পথ দেখান বাংলাদেশের অভিষিক্ত বাঁ-হাতি স্পিনার সানজামুল ইসলাম।
তামিম ইকবালর হাতে ক্রাচ দেয়ার আগে ৭৪ বলে ৪৬ রান করেন এড জয়েস। সংযত ইনিংসে জয়েস হাঁকান সাকুল্যে তিনটি বাউন্ডারি। এতে ২৯তম ওভার শেষে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১২৬/৫-এ। আর নিজের পরপর দুই ওভারে দুই উইকেট তুলে নিয়ে আয়ারল্যান্ডকে বড় লজ্জার মুখে ঠেলে দেন মোস্তাফিজ। একে একে সাজঘরে ফেরেন আয়ারল্যান্ডের ২০১১ বিশ্বকাপের ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ের নায়ক কেভিন ও’ব্রায়ান ও গ্যারি উইলসনকে। ব্যক্তিগত ১০ রানে মোসাদ্দেক হোসেনের দারুণ ক্যাচে সাজঘরের পথ ধরেন আয়ারল্যান্ডের মারকুটে এ ব্যাটসম্যান কেভিন ও’ব্রায়ান। আর উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহীমের হাতে ক্যাচ দেন উইলসন। ৩৩.১ ওভার শেষে ১৩৬/৭ সংগ্রহ নিয়ে তখন বড় শঙ্কায় আইরিশরা। আট নম্বরে ব্যাট হাতে জর্জ ডকরেলের ব্যাটে আশা জাগে আইরিশদের। ৫০ বলের ধৈর্যশীল ইনিংসে ২৫ রান করেন ডকরেল। তবে নিজের শেষ ওভারে বল হাতে জোড়া আঘাত হেনে দলীয় ২০০’র আগেই আইরিশ ইনিংস গুঁড়িয়ে দেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তার আগে আয়ারল্যান্ড ইনিংসের অষ্টম উইকেটটি নিজের ঝুলিতে ভরেন সানজামুল ইসলাম। অভিষেক ইনিংসে ৫ ওভারের স্পেলে ২২ রানের দুই উইকেট নেন ২৭ বছর বয়সী সানজামুল। গতকাল অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের বদলে একাদশে জায়গা নেন বাঁ-হাতি স্পিনার সানজামুল ইসলাম।
বাংলাদেশের বোলিং
খেলোয়াড় ও. মে. রান উই.
রুবের হোসেন ৮ ১ ৪১ ০
মোস্তাফিজুর রহমান ৯ ২ ২৩ ৪
মাশরাফি বিন মুর্তজা ৬.৩ ১ ১৮ ২
মোসাদ্দেক হোসেন ৬ ০ ২১ ১
সাকিব আল হাসান ৯ ০ ৩৮ ১
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৩ ০ ১৩ ০
সানজামুল ইসলাম ৫ ০ ২২ ২