দেশের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী-সংগীত পরিচালক হাবিব ওয়াহিদ। ২০০০ সালের শুরুতে ‘মায়া’ অ্যালবামের মধ্য দিয়ে সংগীতে রাজকীয় অভিষেক হয় তার। সেই অ্যালবামের মাধ্যমেই নতুন ধারার সংগীতের সঙ্গে শ্রোতাদের পরিচয় করিয়ে দেন হাবিব। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। অ্যালবাম ও চলচ্চিত্রে ধারাবাহিকভাবে অনেক শ্রোতাপ্রিয় গান উপহার দিয়ে গেছেন। তার পথ ধরে পরে অনেক সংগীত পরিচালকের আবির্ভাব হয়েছে। তাছাড়া হাবিবের সুরে গান গেয়ে ন্যান্সি ও শিরিনের মতো তারকার জন্ম হয়েছে। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে হাবিব এখন পর্যন্ত নিজের সফলতার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন। মধ্যে কয়েক বছর কেবল চলচ্চিত্রের গানই করেছেন এ তারকা। কোনো অডিও অ্যালবামে সে সময় তাকে পাওয়া যায়নি। তবে গত দুই বছর ধরে চলচ্চিত্রের গান কমিয়ে একক গানের ক্যারিয়ারে মনোযোগী হয়েছেন হাবিব। তারই ধারাবাহিকতায় এই সময়ে তার সুর, সংগীত ও কণ্ঠে ‘হারিয়ে ফেলা ভালোবাসা’, ‘মন ঘুমায়রে’, ‘বেপরোয়া মন’, ‘মনের ঠিকানা’, ‘মিথ্যা নয়’, ‘ঘুম’ এর মতো শ্রোতাপ্রিয় গানের জন্ম হয়েছে। সব মিলিয়ে চলতি সময়টা কেমন যাচ্ছে? উত্তরে হাবিব বলেন, অনেক ভালো। আমি সব সময় ভালো থাকার চেষ্টা করি। কারণ জীবনতো একটাই। যতটুকু ভালো থাকা যায় ততই ভালো। কদিন আগেই আপনার ‘ঘুম’ গানটি প্রকাশ হয়েছে। সাড়া কেমন মিলছে? হাবিব বলেন, সাড়া শুরু থেকেই ভালো। গানের বাইরেও এর ভিডিওতে আমার লুকেও পরিবর্তন এসেছে। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে লুকে ফিরে গেছি আমি। সঙ্গে ছিল মিথিলা। আমাদের কেমিস্ট্রি উপভোগ করছেন সবাই। এরই মধ্যে গানটি ইউটিউবে দেখেছেন ২৪ লাখেরও বেশি দর্শক। এতেই বোঝা যাচ্ছে এটি শ্রোতারা কতটা গ্রহণ করেছেন। এরপর নতুন কি আসছে? হাবিব বলেন, বেশ কিছু কাজ এগিয়ে নিচ্ছি। ট্র্যাক রেডি করেছি। ঈদে ভিডিওসহ গান প্রকাশ করতে পারবো কিনা এখনও বলতে পারছি না। দেখা যাক কি হয়। এখনতো সবাই ইউটিউব ভিউ-এর পেছনে ছুটছেন। সংগীতের এ পর্যায়ে এসে আপনি বিষয়টি কিভাবে দেখছেন? হাবিব বলেন, এটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। কারণ যখন ক্যাসেট ছিল তখন লাখ লাখ ক্যাসেট বিক্রি হতো। এরপর হাজার হাজার সিডি কিনেছেন শ্রোতারা। এখন সিডি মাধ্যমও নেই বললেই চলে। সুতরাং গান উপভোগের একমাত্র জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ইউটিউব। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। সামনে ইউটিউব আরো জনপ্রিয় হবে। শহর ছাড়িয়ে গ্রামে-গঞ্জে মানুষ ইউটিউবে গান শুনছে ও দেখছে। সুতরাং ইউটিউব ভিউও গানের জনপ্রিয়তা বিচারের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। এই সময়ে আমাদের সংগীত ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা কেমন বলে মনে হয়? হাবিব বলেন, বেশ ভালো। অনেক মেধাবী মিউজিসিয়ান কাজ করছেন এখন। ভালো ভালো নতুন শিল্পীর আবির্ভাব হয়েছে। তারা নিজেদের মতো করে কাজ করছে। যারা
ভালো কাজ করছে তাদের গান গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে। আর গান প্রকাশের পাশাপাশি শোনাটাও আগের থেকে সহজ হয়েছে। এভাবেই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। কয়েকদিন আগেই কলকাতায় টেলিসিনে পুরস্কার পেলেন। কেমন লাগছে? হাবিব বলেন, যেকোনো পুরস্কারই আনন্দের। কাজের স্বীকৃতি পেলে উৎসাহটা আরো বেড়ে যায়। টেলিসিনেকে ধন্যবাদ আমাকে ভালো কাজ করার ক্ষেত্রে উৎসাহ দেয়ার জন্য। আপনি চলচ্চিত্রের কাজ কমিয়ে দিলেন কেন? হাবিব বলেন, আসলে এটা অনেকেই প্রশ্ন করেন। কিন্তু চলচ্চিত্রে কোনো কাজ করার পর তার মনমতো চিত্রায়ন পাচ্ছি না। যার কারণে গানের সাড়াও কম। এটা গত কয়েক বছর ধরে হচ্ছে। এর চেয়ে নিজে গান করে সেটা মনমতো ভিডিও করার পর অনেক বেশি সাড়া পাচ্ছি। আর সে কারণেই চলচ্চিত্রের গান করা কমিয়ে দিয়েছি।