উপসাগরীয় দেশ কাতারের বিরুদ্ধে আরো অবরোধ আরোপের বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশী দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের একজন রাষ্ট্রদূত। রাশিয়ায় নিযুক্ত আমিরাতের দূত ওমর গোবাশ গার্ডিয়ান পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, শুধু উপসাগরীয় দেশগুলোর সংগঠন জিসিসি থেকে বহিষ্কারই নয়, কাতারের বিরুদ্ধে অন্যান্য অবরোধ আরোপেরও চিন্তাভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে, কাতারের বাণিজ্যিক অংশীদারদের বিরুদ্ধেও অবরোধ আরোপ করা হতে পারে। তিনি বলেন, ‘কাতার যদি আমাদের দাবি মেনে না নেয়, তাহলে ‘বিদায় কাতার’ বলার সময় এসেছে। তোমাকে আমাদের তাঁবুতে আর দরকার নেই।’ এই দাবিগুলোর মধ্যে কাতারের অর্থায়নে চালিত আল জাজিরা টিভি নেটওয়ার্ক বন্ধের দাবিটি কতটা যৌক্তিক, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকার কথা দাবি করি না। আমরা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ধারণা প্রচার করি না। বাকস্বাধীনতার বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা আছে। আমাদের অঞ্চলে এই কথাবার্তার বিশেষ পূর্বাপর প্রসঙ্গ রয়েছে। শুধু কিছু কথার কারণে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ মুহূর্তেই সহিংস হয়ে উঠতে পারে।’
তবে আল জাজিরা বন্ধ করার দাবির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যম নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো। কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ নিউ ইয়র্ক টাইমস ও গার্ডিয়ানের সম্পাদকীয় পর্ষদ এই দাবির নিন্দা জানিয়েছে।
সৌদি আরব ও আমিরাতসহ ৪ আরব দেশের দেওয়া এই ১৩ দফা দাবিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ ও প্রমাণ-ভিত্তিক নয় বলে আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে কাতার। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনের সঙ্গে ওয়াশিংটনে সাক্ষাৎ শেষে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বলেছে এই সংকটের যৌক্তিক সমাধানের পথে হাঁটা উচিত। এই বক্তব্যের সঙ্গে কাতার একমত। কিন্তু সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল বলেছেন, এই তালিকা নিয়ে কোনো দরকষাকষি চলবে না। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছি। আমরা সামনে এক ধাপ এগিয়েছি। এখন কাতারিদেরকে নিজেদের আচরণ সংশোধন করতে হবে। অন্যথায়, তাদেরকে বিচ্ছিন্নই থাকতে হবে।’
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েল পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে না ঠেলতে সকল পক্ষকে প্রত্যক্ষ আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভাদ জারিফের সঙ্গে ৯০ মিনিটের আলোচনা শেষে তিনি বলেন, ‘কাতারকে ঘিরে এই সংকট যত প্রলম্বিত হবে, সংঘাত তত গভীর ও শক্ত হবে।’ অপরদিকে জারিফ বলেছেন, এই সংঘাতের একটি রাজনৈতিক সমাধানে কাজ করতে তিনি আগ্রহী। তার মতে, চাপ, নিষেধাজ্ঞা ও অবরোধ এক্ষেত্রে উত্তর হতে পারে না।