নড়াইলে ঈদের নামাজ আদায় করেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তিনি ঈদের দিন সকাল ৮টায় শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি নামাজ পড়তে সঙ্গে নিয়ে আসেন জুনিয়র মাশরাফি সাহেলকে (মাশরাফির ছেলে সাহেল)। নামাজ শেষে পিতা-পুত্র ঈদের কোলাকুলি করেন। পর্যায়ক্রমে সাংবাদিক, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় স্বজন ও ভক্তদের সঙ্গে তিনি কোলাকুলি করেন। নড়াইলের জেলা প্রশাসক মো. এমদাদুল হক চৌধুরী, পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম, জেলা পরিষদ প্রশাসক অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর বিশ্বাসসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকেরা জেলার এই প্রধান জামায়াতে নামাজ আদায় করেন। মাশরাফি রোববার সকালে ভক্তদের সঙ্গে ঈদ ভাগাভাগি করতে নাড়ির টানে জন্মস্থান নড়াইলে পৌঁছান। ওই দিন তিনি বলেন, নাড়ির টানে নড়াইলে ঈদ করতে আসা। বাড়ি না এলে মনে হয় ঈদটা ঠিকমতো করতে পারলাম না। ঈদের সময় পরিবার, আত্মীয় ও বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে না পারলে বড্ড খালি খালি লাগে। ঈদের দিন নড়াইলে থাকতে পারলেই যেন ঈদ আনন্দ সার্থক হয়। তিনি সুখে দুঃখে প্রিয় নড়াইলবাসীর পাশে থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করে সবার দোয়া কামনা করেন।
ঈদের দিন বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন নড়াইল শহরে মামা বাড়িতে। মাশরাফি ভক্তরা দলে দলে সেখানে ছুটে যান। স্ত্রী সন্তানদের রেখে বারবার ছুটে আসতে থাকেন বাসার বাইরে। কতবার যে তাকে বাইরে আসতে হয়েছে, তার শেষ নেই। তার পরও কোনো রকম বিরক্তি বোধ করেননি। ভক্তরা তার সঙ্গে ছবি তুলেছেন। অনেকে সেলফি তুলেছেন। ধৈর্যের সঙ্গে সবার আব্দার পূরণ করেছেন। বাসার সামনে এসে ডাক দিলে আর দেরি করেননি। সঙ্গে সঙ্গে বের হয়ে চলে এসেছেন।
মাশরাফি নড়াইলে ঈদ করায় তার বন্ধু-বান্ধবী এবং ভক্তদের মধ্যে অন্য রকম উচ্ছ্বাস কাজ করেছে। বাঁধ ভাঙা জোয়ারের মতো ছুটে এসেছে বন্ধুরা। তাই বাসার সামনে ঈদের দিন ছিল উপচে পড়া ভিড়। আত্মীয়স্বজনরা কেউ কেউ বিরক্তি বোধ করলেও, মাশরাফি সর্বদা হাস্যোজ্জ্বল ছিলেন। তবে সকাল থেকে আবহাওয়া বেশ কিছুটা খারাপ থাকায় বাইরে তেমন ঘোরাফেরা করতে পারেননি। স্ত্রী, সন্তান, মা-বাবা, ভাইসহ পরিবারের লোকজন ও নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে ঈদ উপভোগ করেছেন। বঞ্চিত করেননি তার ভক্তদের। পরিচিত কেউ এলেই অকৃত্রিম হাসি দিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরেছেন। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল হতে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে ছুটে আসেন মাশরাফি ভক্তরা।
মাশরাফি ফাউন্ডেশনের সভাপতি মারুফ হাসান বলেন, মাশরাফি ভাইয়াকে মানুষ যে কতো ভালোবাসে তা বোঝা গেছে ঈদের দিন। মানুষ নিজের পরিবার, আত্মীয়স্বজন ফেলে ছুটে এসেছেন একনজর মাশরাফি ভাইয়াকে দেখতে। তার সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করতে। ঈদের দিন গভীর রাত পর্যন্ত তিনি সাধারণ জনগণের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করেন। ঈদে বাড়ি এসে বরাবরের মতো প্রতিবেশীদের খোঁজ নিয়েছেন। অসহায় দরিদ্রদের আর্থিক সহযোগিতা করেছেন।