ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলেছেন ড্রেনের নয়, ঘরের ভেতর জন্ম নেয়া মশায় চিকুনগুনিয়া হচ্ছে। মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে মশা নিধন সিটি করপোরেশনের জন্য  কঠিন কাজ। এটি সম্ভবও না। চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব নিয়ে শুক্রবার গুলশানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মেয়র এসব কথা বলেন। মেয়র বলেন, চিকুনগুনিয়ার প্রাইম রিজন ঘরের ভেতরে জন্ম নেয়া মশা। সে পর্যন্ত পৌঁছানো সিটি করপোরেশনের পক্ষে সম্ভব না। আপনার ঘরের ভেতরে গিয়ে আমি মশারি টানাতে পারবো না। আপনার বাসার চৌবাচ্চায় আমি ওষুধ লাগাতে পারবো না। আপনার ঘরের  ভেতর সামান্য স্বচ্ছ পানিতে যে মশা জন্মাচ্ছে, সেটা আমি মারতে পারবো না। সংবাদ সম্মেলনে মেয়র বলেন, করপোরেশনের যেখানে মশা মারার কথা তার চেয়ে বেশি মারা হচ্ছে। এরপর আর কি করব বুঝতে পারছি না। এ বছর চিকুনগুনিয়া নিয়ে আগাম কোনো পূর্বাভাস পাওয়া যায়নি বলে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন মেয়র। তিনি বলেন, পূর্বাভাস থাকলে চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে আরো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হতো। তবে রাজধানীতে চিকুনগুনিয়া ছড়িয়ে পড়ার জন্য খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিটি করপোরেশনকে দায়ী করলেও সে দায় নিতে রাজি নন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। নগরবাসী চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় দুঃখ ও সমবেদনা প্রকাশ করেন তিনি।  তবে মানুষের এই কষ্ট ও দুর্ভোগের জন্য সিটি করপোরেশন দায়ী নয় বলে উল্লেখ করেন মেয়র। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রোগতত্ত্ব,  রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাবেক এক বিশেষজ্ঞ ও দুজন কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ। তারা বলেন, চিকুনগুনিয়া রোগের জন্য ঘরের বাইরের মশা নয়, বরং ঘরের ভেতরে জন্ম নেয়া মশা দায়ী। বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান, কীটতত্ত্ববিদ ড. তৌহিদ উদ্দীন আহমেদ এবং ডা. মনজুর এ চৌধুরী মশা নিধনের পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। ঢাকায় চিকুনগুনিয়া মহামারীর আকার নিয়েছে কি-না  সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত এ রোগের যেভাবে বিস্তার ঘটেছে,  যে পরিমাণ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে, তাতে অবশ্যই এটা মহামারী। তার এ বক্তব্য সমর্থন করলেও এটি তাদের ব্যক্তিগত মত জানিয়ে ড. তৌহিদ উদ্দীন বলেন, মহামারী কিনা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ বছর বৃষ্টিপাত অনেক আগে হওয়ায় চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব  বেড়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, চিকুনগুনিয়ার ভাইরাস আশেপাশের  দেশগুলো থেকে এসেছে।