কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার দুটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। সড়কগুলোর পাশে নালা না থাকায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। এতে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
গত বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, বৃষ্টিতে উপজেলার পৌর এলাকার জামাইল আখের সেন্টার থেকে দ্বীপেশ্বর গোলচত্বর ও হোসেনপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় হয়ে কুড়িঘাট এলাকা পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার এবং হাসপাতাল চৌরাস্তা মোড় থেকে হোসেনপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক কাদাপানিতে একাকার হয়ে আছে। সড়কগুলোর বিভিন্ন অংশে পিচঢালাই উঠে গিয়ে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে বৃষ্টির পানি জমে আছে। এসব জায়গা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে হেলেদুলে যানবাহন চলাচল করে। প্রায়ই এসব গর্তে যানবাহন আটকে যায়। এতে এখানে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে পশ্চিম দ্বীপেশ্বর এলাকায় সড়কের মাঝের গর্ত থেকে গরুবাহী একটি পিকআপ ভ্যান ঠেলে সরানোর চেষ্টা করেন অনেকেই। এ সময় পেছনে যাত্রীবাহী বাসসহ অনেক যানবাহন আটকে পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
পৌরসভার দ্বীপেশ্বর এলাকার বাসিন্দা সিরাজুল হকসহ কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, তিন বছরের বেশি সময় ধরে এসব সড়ক ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে। প্রতিদিন ঢাকা, কিশোরগঞ্জ ও নান্দাইল এলাকা থেকে বাসসহ সহস্রাধিক যানবাহন এসব সড়ক দিয়ে চলাচল করে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা রোগী ও তাঁদের স্বজনদের এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতের সময় দুর্ভোগে পড়তে হয়। ওই এলাকার দুটি উচ্চবিদ্যালয় ও একটি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও ভোগান্তির শিকার হন।
এলাকার অন্তত ১০ জন বাসিন্দা অভিযোগ করেন, নির্বাচনের আগে মেয়র প্রার্থীসহ কাউন্সিলররা রাস্তাঘাট উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেন। নির্বাচন চলে গেলে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের আর এসব প্রতিশ্রুতি মনে থাকে না। সামান্য বৃষ্টিতে সড়কগুলোতে হাঁটুপানি জমে যায়। এ সময় সড়কে হেঁটে চলাচল করা প্রায় অসম্ভব।
পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. কামাল উদ্দিন বলেন,‘ঘর থেকে বের হলে ভাঙাচোরা সড়ক দেখে নিজেদেরই লজ্জা হয়।’
উপজেলা প্রকৌশলী মো. রকিবুল আহসান বলেন, এই দুটি সড়ক পৌরসভার অধীনে হওয়ায় তাঁদের পক্ষ থেকে কিছু করা যাচ্ছে না।
পৌরসভার মেয়র মো. আবদুল কাইয়ুম বলেন, বরাদ্দের অভাবে সড়কগুলো সংস্কার করা যাচ্ছে না। এই দুটি সড়ক পুনর্নির্মাণ করতে কমপক্ষে ছয় কোটি টাকা প্রয়োজন। পৌরসভার পক্ষে এই টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। তবে এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।