বেশ কিছু দিন থেকে বিরান পড়ে থাকা চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে লেগেছে প্রাণের ছোঁয়া। সকাল ৯টা থেকেই ক্রিকেটারদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে স্টেডিয়াম। শুরুতে ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত অনুশীলন থাকলে সেই অনুশীলন শেষ হয় বিকাল পাঁচটায়। পুরোটা সময় জুড়েই চলেছে ব্যাটিং- বোলিং কঠিন অনুশীলন। প্রধান কোচ হাথুরুসিংহের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন হাই পারফরম্যান্সের (এইচপি) কোচ মিজানুর রহমান ও সোহেল ইসলাম। মাঠের মাঝখানে সেন্টার উইকেটে চলছে ব্যাটিং-বোলিং অনুশীলন। চট্টগ্রামে জাতীয় দলের ক্যাম্পের প্রথম দিন কিপিং আর ফিল্ডিং অনুশীলনের সঙ্গে ট্রেইনারের সঙ্গে দৌড়াচ্ছেন দু-একজন। মূলত মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম এখনো প্রস্তুত না হওয়াতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট মিশনের আসল প্রস্তুতিটা সেরে নিতেই বেছে নেয়া হয়েছে চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামকে। প্রথম দিনের অনুশীলন নিয়ে কোচ বলেন, ‘ছেলেরা তো ঘেমে-নেয়ে একাকার, দারুণ প্র্যাকটিস হচ্ছে।’
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি দলের বোলিং নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনার অন্ত নেই। কেমন হবে বোলিং আক্রমণ? স্পিনারদের সঙ্গে পেসারদের ভূমিকা কেমন হবে? তিন পেসার থাকছে নাকি দু’জন? এমন সব প্রশ্নের শেষ নেই। ২২ বছরের তাসকিন আহমেদ টেস্ট খেলেছেন মোট চারটি। তবে দেখেছেন তো অনেক। তার সঙ্গে মোস্তাফিজুর রহমান, কামরুল ইসলাম রাব্বি, শুভাশিষ রায়দের ম্যাচ খেলা খুব একটা পার্থক্য নেই। তাই দলে জায়গা পেতে মরিয়া হয়েছেন প্রত্যেকেই। চট্টগ্রামে বোলিং কোচ ওয়ালশের সঙ্গে তাই প্রস্তুতি পর্বটা ভালভাবে সেরে নিচ্ছেন সবাই। টেস্ট নিয়ে তাসকিন বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেটের উইকেট এখন অনেক বেশি ফ্লাট, এখানে ফাস্ট বোলারদের সফলতা পাওয়া অনেক কঠিন। সফলতা পেতে হলে ফাস্ট বোলারদের অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হবে, ভিন্ন কিছু করতে হবে। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে টেস্ট খেলার জন্য আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, সেই সঙ্গে সফলতা পাওয়ার জন্যও। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা পরবর্তী হোম সিরিজগুলোতে সফলতা পেতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে।’
অন্যদিকে ২৯ সদস্যের প্রাথমিক দলে ছিলেন না সঞ্জিত সাহা ও নাঈম হাসান। তবে চট্টগ্রামের অনুশীলন ক্যাম্পে রাখা হয়েছে দুই তরুণ অফ স্পিনারকে। শুধু এই দুজনই নন, প্রথম দিনের অনুশীলনে নেট বোলারদের মধ্যেও অফ স্পিনারের ছড়াছড়ি। সবই একজনকে মাথায় রেখে, নাথান লায়ন! বাংলাদেশ সফরের অস্ট্রেলিয়া দলে নেই মিচেল স্টার্ক। শুরুতে দলে রাখা হলেও চোট-সতর্কতায় পরে সরিয়ে নেয়া হয় জেমস প্যাটিনসনকে। জশ হেজেলউড ও প্যাট কামিন্স অবশ্য আছেন। তবে এই কন্ডিশনে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হতে পারেন অফ স্পিনার লায়ন। এই বছর ৫ টেস্টে ২৪ উইকেট নিয়ে অজিদের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি এ অফস্পিনার। ইংল্যান্ড সিরিজের সাফল্য মাথায় রাখলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও হয়তো টার্নিং ট্র্যাক বানাবে বাংলাদেশ। সেক্ষেত্রে নিতে হবে লায়নকে সামলানোর চ্যালেঞ্জও। উইকেট যদি ইংল্যান্ড সিরিজের মতোও হয়, তবু এখানকার উইকেটে লায়নের টার্ন ও বাউন্স বাংলাদেশের জন্য হতে পারে ভোগান্তির কারণ। তাকে নিয়ে চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেন, ‘অবশ্যই লায়নের কথা আমাদের মাথায় আছে। যে দুজন অফ স্পিনারকে আনা হয়েছে, দুজনই মোটামুটি লম্বা, উইকেট থেকে বাউন্স আদায় করতে পারে। লায়নও বেশি ভয়ঙ্কর বাউন্স পেলেই। ওরা দুজনই বেশ ভালো স্পিনার, দারুণ প্রতিশ্রুতিশীল মনে হয়েছে।’