উত্তর কোরিয়ার উপর সর্বসম্মতিক্রমে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। জুলাই মাসে দু’টি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জবাব হিসেবে শনিবার এই নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয় দেশটির উপর। নতুন এই নিষেধাজ্ঞায় ১০০ কোটি ডলার কমে যেতে পারে দেশটির বার্ষিক রপ্তানি রাজস্ব। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি খসরা রেজুলেশন অনুসারে, উত্তর কোরিয়ার কয়লা, লোহা, লৌহ আকরিক, লেড, লেড আকরিক, সিফুডের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এছাড়াও এখন থেকে জাতিসংঘের সদস্যদেশগুলোকে নতুন করে উত্তর কোরীয় শ্রমিক নিতেও নিষেধ করা হয়েছে । এমনকি উত্তর কোরিয়ার সাথে কোনো যৌথ প্রকল্প শুরু করতে ও চলতি প্রকল্পগুলোতে নতুন করে বিনিয়োগ করতেও দেশগুলোকে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি এ বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই এটা ভাবা উচিৎ না যে, আমরা সমস্যার সমাধান করে ফেলেছি। আমরা সমাধানের ধারেকাছেও পৌঁছাইনি। আমাদের উপর থেকে উত্তর কোরিয়ার হুমকি সরে যায়নি। বরং এটি ব্যাপক দ্রুত গতিতে আরো বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এ বিষয়ে আরো পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে আমাদেরকে (যুক্তরাষ্ট্র) ও আমাদের মিত্রদের রক্ষা করতে দূরদর্শী পদক্ষেপ নিয়ে আসছে এবং ভবিষ্যতেও নিবে।’ তিনি যোগ করেন, ‘ওয়াশিংটন দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ বার্ষিক সামরিক প্রশিক্ষণ অব্যাহত রাখবে।’ প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক অনুশীলনের মাধ্যমে উত্তেজনা বৃদ্ধি করার অভিযোগ করেছে উত্তর কোরিয়া। এমনকি উত্তর কোরিয়ার প্রধান দুই মিত্র চীন ও রাশিয়াও দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘থাড প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা’ মোতায়নের বিষয়ে নিন্দা প্রকাশ করেছে। এদিকে শনিবার রাতে এক টুইটের মাধ্যমে জাতিসংঘে উত্তর কোরিয়ার উপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের সবার সম্মতি প্রকাশের কথা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রামপ। তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এইমাত্র উত্তর কোরিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিয়ে ১৫-০ ভোট দিয়েছে। রাশিয়া ও চীনও আমাদের পক্ষ হয়ে ভোট দিয়েছে। (এটা) একটি বিশাল আর্থিক প্রভাব (ফেলবে)।’ পরবর্তীতে হোয়াইত হাউস এক বিবৃতিতে বলেছে, রেজুলেশনটি পাস করাতে রাশিয়া ও চীনের সহযোগিতাকে স্বাগত জানিয়েছেন ট্রামপ। হোয়াইট হাউস বিবৃতিতে বলেছে, ‘উত্তর কোরিয়ার উপর কূটনৈতিক ও আর্থিক চাপ সৃষ্টি করে দেশটির ভীতিপ্রদর্শক ও অস্থিতিশীল ব্যবহার বন্ধ করতে, মিত্র ও সহযোগীদের সঙ্গে কাজ করা অব্যাহত রাখবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।