1. ccadminrafi@gmail.com : Writer Admin : Writer Admin
  2. 123junayedahmed@gmail.com : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর
  3. swadesh.tv24@gmail.com : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম
  4. swadeshnews24@gmail.com : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর: : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর:
  5. hamim_ovi@gmail.com : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  6. skhshadi@gmail.com : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান: : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান:
  7. srahmanbd@gmail.com : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  8. sumaiyaislamtisha19@gmail.com : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান
নারায়ণগঞ্জে ফাইভ মার্ডার নীরব ঘাতক মাহফুজের ফাঁসি - Swadeshnews24.com
শিরোনাম
‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলেই বিএনপি বলে বিরোধীদল দমন’ এবার বুবলী-শাকিবের ‘কোয়ালিটি টাইম’ নিয়ে মুখ খুললেন অপু বাংলাদেশের সফলতা চোখে পড়ার মতো: সিপিডির রেহমান সোবহান চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে যা বললেন নিপুণ তালিকা দিতে না পারলে ফখরুলকে ক্ষমা চাইতে বললেন ওবায়দুল কাদের প্রকাশিত হলো দিদারের ‘বৈশাখ এলো রে এলো বৈশাখ’ আ.লীগের মতো ককটেল পার্টিতে বিশ্বাসী নয় বিএনপি: রিজভী হৃদয় খানের সঙ্গে জুটি ন্যান্সিকন্যা রোদেলার শাকিব ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পুরুষকে ভাবতে পারি না: বুবলী শাকিবের এমন সময় আমাদেরও ছিল: ওমর সানী কত টাকা সালামি পেলেন জায়েদ খান, দিতে হলো কত লাখ? শাকিব খানের সঙ্গে বিয়ে,দেনমোহর, বিচ্ছেদসহ নানা বিষয় নিয়ে মুখ খুললেন বুবলী দেশের আকাশে চাঁদ দেখা যায়নি, বৃহস্পতিবার ঈদ বাড়তি ভাড়া চাওয়ায় ‘যাত্রীদের মা’র’ধরে’ বাসচালক ও হেলপার নি’হ’ত ওমরাহ পালনে সৌদি আরবে সাকিব

নারায়ণগঞ্জে ফাইভ মার্ডার নীরব ঘাতক মাহফুজের ফাঁসি

  • Update Time : মঙ্গলবার, ৮ আগস্ট, ২০১৭
  • ৫৩৮ Time View

নারায়ণগঞ্জে একই পরিবারের দুই শিশুসহ একে একে ৫ জনকে নৃসংশভাবে হত্যার দায়ে নীরব ঘাতক মাহফুজকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে রায়ে। দণ্ডিত মাহফুজ নিহত পরিবারের সম্পর্কে ভাগ্নে। গতকাল বেলা পৌনে ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ বেগম  হোসনে আরা আকতারের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় ফাইভ মার্ডার মামলার একমাত্র আসামি মাহফুজ আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এসএম ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, মামীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কের জের ধরে ২০১৬ সালের ১৬ই জানুয়ারি রাতে শিলপুতা দিয়ে আঘাত করে ও শ্বাসরোধের মাধ্যমে মা ও দুই শিশুসহ ৫ জনকে একাই হত্যা করে ভাগ্নে মাহফুজ। ওই মামলায় ২০১৬ সালের ১৪ই জুন আদালতে চার্জ গঠন করা হয়। মোট ৩০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন উচ্চ আদালতের অনুমোদনে ৫টি খুনের জন্যই তাকে পৃথকভাবে ফাঁসির রশিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হোক। তবে যে কোনো একটি হত্যার ঘটনাতে ফাঁসি কার্যকর হলে অন্যগুলো রহিত হয়ে যাবে।
পিপি আরো জানান,  একটা সময় বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের অনাস্থা ছিল। তবে আলোচিত ৭ খুন ও ৫ খুনের বিচার দ্রুততম সময়ে প্রচলিত আইনে সম্পন্ন হওয়ায় বিচার ব্যবস্থার উপর মানুষের আস্থা ফিরে এসেছে। আমি মনে করি দেশের সকল আদালতেও এভাবে স্বচ্ছতার সঙ্গে বিচার কার্যক্রম চললে মানুষ ন্যায় বিচার পাবে।
মামলার বাদী দণ্ডিত মাহফুজের মামা শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা এ রায়ে সনু্তষ্ট। তবে আমরা ফাঁসির রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানাচ্ছি।
মাহফুজের বাবা সাইফুল ইসলামের উদ্ধৃতি দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষে নিযুক্ত আসামিপক্ষের আইনজীবী সুলতানুজ্জামান বলেন, স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী হিসেবে যতটুকু আইনগত সহায়তা দেয়া প্রয়োজন ততটুকুই করেছি। আসামিপক্ষ মনে করে সে প্রকৃত ন্যায় বিচার পায়নি। আসামিপক্ষ মনে করে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করলে ন্যায় বিচার পাবে। তার বাবা সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
ফ্ল্যাশ ব্যাক: নারায়ণগঞ্জ শহরের দুই নং বাবুরাইলের খানকা শরীফ সংলগ্ন ১৩২/১১ আমেরিকা প্রবাসী ইসমাইল হোসেনের বাড়ির নিচতলার একটি ছোট ফ্ল্যাটের দু’টি রুমে বসবাস করতো শফিকুল ইসলাম, তার স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৩৫), তার মেয়ে সুমাইয়া (৫), ছেলে শান্ত (১০)। সঙ্গে থাকতো ছোট ভাই শরীফ হোসেন ও তার স্ত্রী লামিয়া আক্তার (২৫)। ঢাকায় এক ব্যক্তির প্রাইভেট কার চালানোর সুবাদে শফিকুল ইসলাম ঢাকার কলাবাগানে থাকতো। সপ্তাহের বৃহস্পতিবার সে বাসায় আসতো। আবার শনিবার কাজে চলে যেত। তার ছোটভাই শরীফও মাঝে-মধ্যে কাজের চাপে বাসায় আসতো না। ছোট দু’টি রুমের প্রথম রুমে (কোনো খাট নেই) ফ্লোরে ঘুমাতো শফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সন্তান। আর ভেতরের দ্বিতীয় রুমে (খাট আছে) থাকতো শরীফ ও তার স্ত্রী লামিয়া। যেদিন শফিক বাসায় আসতো না সেদিন বড় বোনের সঙ্গে থাকতো ছোট ভাই মোশারফ ওরফে মোর্শেদুল। বাসার পাশেই একটি হোসিয়ারী কারখানা ছিল মোশারফের।
আদালতে মাহফুজের জবানবন্দির তথ্যমতে, ২০১৬ সালের ১৫ই জানুয়ারি শুক্রবার মাহফুজ নিশ্চিত হয় তার বড় মামা ও ছোট মামা বাসায় নেই। তাই সে মাগরিবের নামাজের আগ মুহূর্তে বড় মামা (শফিকুল ইসলাম)’র বাসায় আসে। দরজা নক করতেই তা খুলে দেয় শফিকুলের ছেলে শান্ত। এ সময় বাসার ভেতরে থাকা শফিকুলের স্ত্রী তাসলিমা ও মেয়ে সুমাইয়া এবং শরীফুলের স্ত্রী লামিয়া ভেতরের রুমে টিভি দেখছিল। তারা টিভি দেখায় মনোযোগ থাকায় বাসায় কে এসেছে তা টের পায়নি। এদিকে ঘরের ভেতরে ঢুকেই মাহফুজ পকেট থেকে ১০ টাকার একটি নোট বের করে শান্তর হাতে দিয়ে বলে ভাইয়া যে এসেছি তুমি কাউকে বলো না। ছোট মানুষ শান্ত অতটা চিন্তা করেনি। ভাইয়া এসেছে তাতে কী। তাই কাউকে সে কিছু বলেনি। এদিকে মাহফুজ গিয়ে লামিয়ার খাটের নিচে লুকিয়ে থাকে। রাত ১০টার দিকে তাসলিমার ভাই মোশারফ বাসায় আসে। খাওয়া-দাওয়া করে সবাই আগের মতোই টিভি দেখতে থাকে। মোশারফ বাইরে যায় সিগারেট আনতে। সে একটা সিগারেট খেয়ে আরেকটি সিগারেট নিয়ে এসে লামিয়ার রুমে খাটের উপর রাখে। ওদিকে টিভি দেখতে দেখতে লামিয়া একসময় তাসলিমার রুমেই ঘুমিয়ে পড়ে। ফলে লামিয়ার রুমে ছোটভাই মোশারফকে ঘুমানোর জন্য তাসলিমা বিছানা করে দেয়। মোশারফ শুয়ে শুয়ে নিজের মোবাইলে নেটের মাধ্যমে হিন্দি ছবি দেখতে থাকে। খাটের নিচে বসে তা আঁচ করতে পারে মাহফুজ। রাত গভীর হয় কিন্তু মোশারফ ঘুমাচ্ছে না। রাত ২টার দিকে তার প্রস্রাবের বেগ হয়। কিন্তু খাটের নিচ থেকে সে বের হতে পারছে না। এক সময় বুঝতে পারে মোশারফ মনে হয় ঘুমিয়ে গেছে। তখন সে খাটের নিচ থেকে বের হতে গেলে মাথার আঘাতে খাটে শব্দ হয়। শব্দ পেয়ে মোশারফ লাইট জ্বালিয়ে খাটের নিচে মাহফুজকে দেখতে পেয়ে বকাঝকা করে। এবং বোন তাসলিমাকে ডেকে আনে। তাসলিমা রাতের কথা চিন্তা করে বলে কী আর করা তোর (মোশারফ) সঙ্গে শুইয়ে রাখ। সকালে দেখা যাবে। পরে মাহফুজ বাথরুম থেকে এসে মোশারফের পাশে শুয়ে পড়ে। কিন্তু মোশারফ ঘুমাচ্ছে না। সে এপাশ-ওপাশ করতে থাকে। একসময় মাহফুজের মনে হলো মোশারফ ঘুমিয়ে পড়েছে। সে উঠে আবার বাথরুমে যায়। বাথরুম থেকে এসে খাটের উপর রাখা মোশারফের স্টার সিগারেটটা নিয়ে রান্না ঘরে যায়। সেখানে সিগারেট খেয়ে রান্নাঘর থেকে মসলা বাটার পুতা (শিল) নেয়। এবং মোশারফের পাশে এসে পুতা নিয়ে শুয়ে থাকে। তার কাছে মনে হচ্ছে মোশারফ পুরো পুরি ঘুমায়নি। রাত ৩টার দিকে মাহফুজ খাটের উপর উঠে বসে। এবং পুতা দিয়ে সজোরে মোশারফের মাথায় আঘাত করে। চারদিকে রক্ত ছিটিয়ে পড়ে। তার শরীরেও রক্ত লেগে যায়। এ সময় মোশারফ চিৎকার দিলে শব্দ বাইরে যাওয়ার আগেই তার মুখ চেপে ধরে মাহফুজ। প্রচণ্ড রক্তক্ষরণে আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে গোঙাতে থাকে মোশারফ। তখন পাশ থেকে একটা শার্ট এনে মোশারফের গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে মাহফুজ। কিন্তু পরোক্ষণে মোশারফের রক্তাক্ত মুখ দেখে ভয় পেয়ে যায় মাহফুজ। তখন কী করবে বুঝে উঠতে না পেরে রুমের মধ্যে পায়চারী করতে থাকে। পরে লাশটা একটি কাঁথা দিয়ে ঢেকে রেখে বাথরুমে যাওয়ার সময় দেখে কেউ টের পেয়েছি কী না? পরে আবার রান্না ঘরে যায়।  রান্না ঘর থেকে সয়াবিন তেল নিয়ে কিছুটা নিজের মাথায় দেয় মাথা যেন ঠাণ্ডা হয়। কিছু তেল নিয়ে লাশের কাঁথার উপর ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে আবার দ্রুত নিভিয়েও ফেলে। যদি পুরো ঘরে আগুন লেগে যায় এই ভয়ে। এরপর শোকেসে দেখে মাথা ঠাণ্ডা করার তেল। তা নিয়ে আবার নিজের মাথায় দেয়। আবার পায়চারী করে। আর চিন্তা করে আমি কী করলাম? কেউ দেখলে কী অবস্থা হবে। পায়চারী করতে করতে ফজরের নামাজের সময় হয়ে যায়। তখন টের পায় কেউ একজন বাথরুমে গেছে। পরে বুঝতে পারে শান্ত বাথরুম থেকে আবার গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। কখনো পায়চারী কখনো বসে মাহফুজ। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ঘড়িতে অ্যালার্ম বেজে উঠে। তখন তাসলিমা ঘুম থেকে জেগে যায় এবং শান্তকে বলে উঠো স্কুলে যেতে হবে। তাসলিমা রান্না ঘরে যায়। ছেলেকে খাবার খাইয়ে রেডি করে স্কুলে পাঠায়। মাহফুজ টের পায় বড় মামী (তাসলিমা) আবার শুয়ে পড়েছে। তখন সে পুতা হাতে নিয়ে দরজাটা একটু ভিড়িয়ে দিয়ে বের হয়। বড় মামীর (তাসলিমা) কাছে গিয়ে আস্তে আস্তে তাকে ডেকে ঘুম থেকে তোলে। এবং বলে মোশারফ আপনাকে ডাকে। তাসলিমা উঠে মোশারফের রুমের সামনে গিয়ে বলে, এই মোশা! মোশা। ভাইয়ের শব্দ না পেয়ে দরজা ধাক্কা দিয়ে ভেতরে দেখে খাটের উপর কাঁথা দিয়ে ঢাকা মোশারফ ঘুমিয়ে আছে। এ সময় কিছু বুঝে উঠার আগেই মুহূর্তেই পেছন থেকে তাসলিমার মাথায় পুতা দিয়ে আঘাত করে মাহফুজ। লুটিয়ে পড়ে তাসলিমা। রক্ত ঝরতে থাকে। দ্রুত একটা নেকড়া (কাপড়ের টুকরা) এনে গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাসলিমার মৃত্যু নিশ্চিত করে মাহফুজ। লাশ পড়ে থাকে। তখন সে চিন্তা করে আমি দুইটা খুন করে ফেললাম? এরপর মাহফুজ রক্তমাখা হাতে পুতা নিয়ে লামিয়ার রুমে যায়। বিছানার পাশে দাঁড়িয়ে দেখে লামিয়া এপাশ-ওপাশ করছে। হঠাৎ লামিয়া চোখ মেলে দেখে মাহফুজ রক্তমাখা শরীরে তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। সে চিৎকার দিতে দিতেই মাহফুজ পুতা ছুড়ে মারে লামিয়ার মাথায়। মাথা ফেটে রক্ত পড়তে থাকে। লামিয়া খাটের উপর দাঁড়িয়ে যায়। তখন ঘরের মধ্যে দড়ি খুঁজতে থাকে মাহফুজ। একপর্যায়ে পুতা নিয়ে মাহফুজের উপর ছুড়ে মারে লামিয়া। মাহফুজ সরে গেলে সেই পুতা গিয়ে পড়ে ঘুমিয়ে থাকা তাসলিমার মেয়ে সুমাইয়ার মাথায়। আঘাত পেয়ে সে কাঁদতে থাকে। এদিকে মাহফুজ পুতা নিয়ে পুনরায় ঝাঁপিয়ে পড়ে লামিয়ার উপর। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে লামিয়া বাঁচার জন্য খামচে ধরে মাহফুজকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেকে রক্ষা করতে পারেনি। পুতা দিয়ে লামিয়ার মাথায় একাধিকবার আঘাত করে মাহফুজ। অনেকটা নিস্তেজ হয়ে পড়লে খাটের উপর শুইয়ে নেকড়া (কাপড়ের টুকরা) দিয়ে গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে লামিয়ার মৃত্যু নিশ্চিত করে মাহফুজ। ওদিকে রক্তক্ষরণে অচেতন হয়ে পড়ে সুমাইয়া। পরে তার গলায় প্যান্ট পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মাহফুজ। ওদিকে স্কুল থেকে বাসায় আসে শান্ত। সে বাইরে থেকে মা মা বলে ডাকতে থাকে। তখন মাহফুজের সম্বিত ফিরে আসে। হায়! ঘায়!! আমি এতোগুলো খুন করে ফেলেছি? তখন সে দ্রুত তাসলিমার লাশ টেনে মোশারফের রুমে নিয়ে যায়। এবং সাদা চাদর দিয়ে ভাই-বোনের লাশ ঢেকে রাখে। দরজা ভিড়িয়ে দিয়ে মেঝের রক্ত কিছুটা মুছে ফেলে। পরে দরজা খুলে দিলে শান্ত ঘুরে ঢুকে। মাহফুজ তাকে বলে কী হয়েছে? মাকে ডাকছো কেন? এ সময় মেঝেতে রক্ত দেখতে পেয়ে শান্ত বলে ‘ভাইয়া’ এত রক্ত কেন? তখন মাহফুজ শান্তকে দেয়ালের সঙ্গে জোরে ধাক্কা মারে। এতে আঘাত পেয়ে অচেতন হয়ে পড়ে শান্ত। পরে গলা টিপে ও পুতা দিয়ে মাথায় আঘাত করে শান্তকে খুন করে মাহফুজ। সবাইকে হত্যার পর বাথরুমে গিয়ে হাত-মুখ ধৌয়। পরে পুতা ধুয়ে রান্না ঘরে রেখে দেয়। এবং রক্তমাখা কাপড় পাল্টিয়ে মোশারফের কাপড় পরে ঘরের তালা চাবি নেয়। বাইরে থেকে তালা বন্ধ করে দিয়ে চাবি বাড়ির রিজার্ভ পানির ট্যাংকির ভেতর ফেলে দিয়ে বাসার পাশে মোশারফের কারখানায় গিয়ে ঘুমিয়ে থাকে। এভাবেই মাহফুজ তার হত্যা মিশন শেষ করে।
শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে যখন প্রচার পেয়ে যায় তালাবদ্ধ ঘরের ভেতর ৫ জন খুন হয়েছে। তখন স্বজনদের সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে মাহফুজ। এবং রাতেই মাহফুজকে সন্দেহজনকভাবে আটক করে পুলিশ।
যে কারণে হত্যাকাণ্ড?
নিহতদের পারিবারিক তথ্যমতে, শফিকুল ইসলামের বড় বোন আছিয়া বেগমের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে মাহফুজ সবার বড়। ২ সন্তান ও স্বামী শরফুল মিয়াকে নিয়ে আছিয়া বেগম শহরের পাইকপাড়া এলাকায় বাস করেন। মাহফুজের বাবা শরফুল মিয়া ঝালমুড়ি বিক্রেতা। শফিক-তাছলিমা দম্পতি যখন ঢাকার কলাবাগানে বসবাস করতেন তখন মাহফুজও ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পিয়ন হিসেবে কাজ করতো। দুই বছর আগে শরীফ বিয়ে করেন লামিয়াকে। শরীফ ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করে। ঢাকার কলাবাগানে থাকাকালীন একদিন ফাঁকা ঘরে মামী লামিয়াকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় মাহফুজ। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে সালিশ হয়। সালিশে তাসলিমা ভাগ্নে মাহফুজকে জুতা পেটা করে। এবং তাদের বাসায় আসতে নিষেধ করে। এতে ক্ষুব্ধ হয় মাহফুজ। ঘটনার দিন মাহফুজ জানতো দুই মামা (শফিকুল-শরীফ) বাসায় নেই। রাতে লামিয়া একা তার রুমে থাকবে। সুযোগ কাজে লাগাতে গোপনে ঘরে ঢুকে মাহফুজ। এবং লামিয়ার খাটের নিচে লুকিয়ে থাকে। কিন্তু লামিয়া টিভি দেখতে দেখতে যখন তাসলিমার রুমে ঘুমিয়ে পড়ে, তখনই মাহফুজের ছক উলোট-পালোট হয়ে যায়। তারপরও নিজেকে কিছুটা সামলে নিলেও মোশারফ তাকে দেখে ফেলায় নতুন করে ভয় জন্মায় তার মধ্যে। কারণ ১৫ দিন আগে তাকে জুতাপেটা করে শাসিয়ে দিয়েছিল বড় মামী (তাসলিমা)। আজ আবার ধরা পড়ে গেছে। সকালে কী জানি হয়। এই থেকে সে মোশারফকে হত্যা করে। মোশারফকে হত্যার পর মাথায় ঢুকে পালিয়ে গেলেও সবাই জানবে আমিই খুন করেছি। তাই সে পর্যায়ক্রমে বাসার ভেতরের সবাইকে হত্যা করে। যাতে কোনো সাক্ষী না থাকে। সবাইকে হত্যার পূর্ব কোন পরিকল্পনা তার ছিল না। যা করেছে উপস্থিত পরিস্থিতিতে এমনটাই বলেছে সাইলেন কিলার মাহফুজ।
১৬ই জানুয়ারি রাতে নিজ ফ্ল্যাট থেকে তাসলিমা বেগম (৩৫), তার মেয়ে সুমাইয়া (৫), ছেলে শান্ত (১০), ছোটভাই মোশারফ ওরফে মোর্শেদুল (২২) ও জা লামিয়া (২৫) এর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 SwadeshNews24
Site Customized By NewsTech.Com