সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চারমাস আগে যশোরের চৌগাছা পৌর এলাকায় অবৈধ পশুর হাট বসানো হয়। পৌর এলাকার জিওলগাড়ি গ্রামে অবস্থিত হাটটির কারণে পাশের ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার পুড়াপাড়া পশুর হাটের ইজারাদার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। হাটের ইজারাদারের অভিযোগের ভিত্তিতে বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশে মঙ্গলবার সকালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে এ অবৈধ পশুর হাট উচ্ছেদ করা হয়েছে। যশোর জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমানের নেতৃতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার ও নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমান বলেন, ‘সরকারী নিয়ম-নীতি না মেনে অবৈধভাবে এখানে হাট বসানো হয়েছিল। সরকারি পেরিফেরিভুক্ত নয় এবং ইজারাও হয়নি। এজন্য সরকারি নির্দেশে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে অবৈধ পশুর হাট উচ্ছেদ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, উচ্ছেদ অভিযানের সময় অবৈধ পশুর হাটের পক্ষে চৌগাছা পৌর মেয়র নুর উদ্দিন আল মামুন হিমেল এসেছিলেন। তিনি উচ্ছেদে আপত্তি জানান। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত তার স্বপক্ষে বৈধ কাগজপত্র দেখাতে বলেন। কিন্তু মেয়র তার স্বপক্ষে কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এরপর উচ্ছেদ করা হয়। জানতে চাইলে চৌগাছা পৌরসভার মেয়র নুর উদ্দিন আল মামুন হিমেল বলেন, চৌগাছা পশুর হাট অনেক পুরনো। সেটি জায়গা স্বল্পতার কারণে জিওলগাড়ি এলাকায় স্থানান্তর করা হয়েছিল। তবে স্থানান্তর ও পেরিফেরিভুক্ত করার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু এখনও আদেশ হয়নি। এজন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত আদালত হাটকে অবৈধ হিসেবে উচ্ছেদ করেছে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আইনি প্রক্রিয়া শেষে আবার হাট চালু করার চেষ্টা করবো। ভ্রাম্যমাণ আদালত ও স্থানীয় সূত্র জানায়, চৌগাছার পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার পুড়াপাড়ায় একটি পশুর হাট রয়েছে। চলতি বছরে ওই পশুর হাট ১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ইজারা মূল্যে ডেকে নিয়েছে একটি পক্ষ। হাটের ইজারা না পেয়ে দীর্ঘদিন যাবত ওই হাটে ইজারা ব্যবসায় জড়িত ডাবলু দেওয়ান চলতি বছরের ৪ এপ্রিল চৌগাছা পৌরসভার মেয়র নূর উদ্দিন আল মামুন হিমেলের সহযোগিতায় পৌর এলাকার জিওলগাড়ীতে একটি পশুর হাট স্থাপন করেন। পুড়াপাড়া পশুর হাটের দিনের সাথে মিল রেখে রোববার ও বুধবার অবৈধ এই পশুর হাট চালু করা হয়। বিষয়টি নিয়ে পুড়াপাড়া হাটের ইজারাদার খুলনার বিভাগীয় কমিশনার বরাবর অভিযোগ করেন। একই সাথে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। এরপর বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশে অবৈধ হাটটি পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ করে দেন চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নার্গিস পারভীন। তখন হাটের ইজারাদার চৌগাছা কাঁচা (সবজি) বাজারে পশুর হাট স্থানান্তর করেন। সেখানে হাটটি চালিয়ে যেতে থাকেন। পরবর্তীতে পুড়াপাড়া হাটের ইজারাদার রিট আবেদনটি প্রত্যাহার করে নিলে আবারো জিওলগাড়ীতে হাটটি চালু করা হয়। সপ্তাহে রোববার ও বুধবার হাটের দিন নির্ধারণ করা হলেও মঙ্গলবার থেকে ঈদুল আযহা পর্যন্ত প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা হাটটি চালু রাখার ঘোষণা দেয় হাট কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে হাট উচ্ছেদ করা হয়েছে। অভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন- র্যাব-৬ এর উপ-পরিচালক (ডিএডি) সোহেল আহমেদ, সার্জেন্ট মোজাম্মেল হোসেন, চৌগাছা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আকিকুল ইসলামসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব ও আনসার বাহিনীর সদস্য।