মিস্টার ডিপেনডেবল- ব্যাট হাতে মুশফিকুর রহীমের নামের পাশে শব্দটি বেশ ভালোভাবেই জারি হয়ে গেছে। মুশফিকের কাছ থেকে সেরা ব্যাটিং পেতে তার ওপর থেকে অনেক চাপই সরিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তিন ফরমেটের অধিনায়কত্বের চাপ কমিয়ে তাকে দেয়া হয় শুধু টেস্টের নেতৃত্ব। উইকেট কিপিং করে ব্যাটিং করতে সমস্যা হতে পারে ভেবে তাকে সেখান থেকেও সরানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে মুশফিক গ্লাভস ছাড়া নিজেকে ভাবতে রাজি হননি। তার মতে তিনি দুই দায়িত্ব পালন করলে একজন বাড়তি বোলার বা ব্যাটসম্যানও খেলানো যায়। মুশফিকও তার ওপর আস্থার প্রতিদান রেখে যাচ্ছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টে দল যখন বিপদে তার ব্যাট থেকে এসেছিল ৪১ রানের লড়াকু ইনিংস। এমনকি চট্টগ্রাম টেস্টেও দলের বিপদে ব্যাট হাতে দারুণ লড়াই করলেন। ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের ১৮তম টেস্ট ফিফটি। তিনি এতটাই সাবধানী ছিলেন যে ১৬৬ বল খেলে ৬৮ রানের ইনিংসে হাঁকিয়েছেন মাত্র ৫টি চারের মার। প্রথম দিন তিনি ৫০ রান করেছিলেন ১২৪ বল ও চারের মারে।
চট্টগ্রাম টেস্টে ৮৫ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেছিলেন অধিনায়ক মুশফিক। সেখান থেকে প্রথমে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ৩২, এরপর সাব্বিরকে নিয়ে ১০৫ ও নাসিরকে নিয়ে ৪৩ রানের জুটি গড়ে দলকে বিপদ থেকে উদ্ধার করেন। ৬ষ্ঠ উইকেটে এখন পর্যন্ত শতরানের জুটি ৬টি। এর মধ্যে চারটিতেই মুশফিক। এর আগে ৬ষ্ঠ উইকেটে নাসিরকে নিয়ে মুশফিকই ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার গলে শেষ শতরানের (১০৬) জুটি বেঁধেছিলেন। এই উইকেটে ১৯১ রানের সর্বোচ্চ জুটিতে ২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে মুশফিকের পার্টনার ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। এরপর ২০১০ সালে এই চট্টগ্রামেই ১৬৭ রানের জুটিতে মুশফিকের সঙ্গী ছিলেন জুনায়েদ সিদ্দিকী। অবশ্য তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৪৪ রানের জুটি ছিল সাকিব ও নাসিরের। এরপর চতুর্থ সর্বোচ্চ ১১৭ রানের জুটিতে মুশফিকের সঙ্গী ছিলেন নাসির ২০১১ সালে।
প্রথম দিন শেষ বেলাতে সাব্বির আউট হলে গতকাল নাসিরকে দিয়ে দিন শুরু করেছিলেন মুশফিক। আগের দিন করা ৬২ রানের সঙ্গে অবশ্য দ্বিতীয় দিন ৬ রান যোগ করেন। তবে তাতেই তিনি খরচ করেন ৪২ বল। কারণ একটাই যতক্ষণ তিনি ক্রিজে থাকবেন ততই বাড়বে দলের বড় সংগ্রহের সম্ভাবনা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নাথান লায়নের নিচু হয়ে যাওয়া বলটি সামনে পা বাড়িয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করলেও ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে তা ভেঙে দেয় তাঁর স্টাম্প। ঢাকা টেস্টের মতো এবারও তার আক্ষেপ হয়ে থাকে দুর্ভাগ্যজনক আউট।