রায়হান কবির,স্বদেশ নিউজ ২৪.কমঃ মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমরা মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। অবিলম্বে সেখানে সেনা অভিযান বন্ধ করতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস। বুধবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক পরিস্থিতি বিপর্যয়কর অবস্থায় পৌঁছেছে। রোহিঙ্গা গ্রামবাসীদের উপর নিরাপত্তা বাহিনীর হামলা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। এছাড়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সাধ্যমত যেকোনো মানবিক সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান তিনি।গুতেরেস বলেন, ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে পড়েছে রোহিঙ্গারা। গত সপ্তাহে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ২৫ হাজার। কিন্তু বর্তমানে এটা বেড়ে ৩ লাখ ৮০ হাজারে দাঁড়িয়েছে।শরণার্থী শিবিরে দুরবস্থায় থাকা শরণার্থীদের বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন অস্থায়ী তাঁবুতে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা কোনো মতে টিকে আছে। অধিকাংশ নারী ও শিশু ক্ষুধার্ত এবং তারা অপুষ্টিতে ভুগছে।উল্লেখ্য, মিয়ানমার বাহিনীর অবরোধের মুখে গত ২৪ আগস্ট মধ্যরাতের পর রোহিঙ্গা যোদ্ধারা অন্তত ২৫টি পুলিশ স্টেশনে হামলা ও একটি সেনাক্যাম্পে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। এতে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়।এরপর রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। একের পর এক রোহিঙ্গা গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। অভিযানে হেলিকপ্টার গানশিপেরও ব্যাপক ব্যবহার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। সীমান্তে পুঁতে রাখা হয় স্থলমাইন।মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নির্বিচারে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা এবং নারীদের গণধর্ষণের অভিযোগ উঠে। তাদের হত্যাযজ্ঞ থেকে রেহাই পায়নি বয়োবৃদ্ধ নারী এবং শিশুরাও। নিহত হয়েছেন প্রায় তিন হাজার রোহিঙ্গা।প্রাণ বাঁচাতে স্রোতের বেগে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসতে শুরু করে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) এর কার্যালয় জানায়, গত কয়েকদিনে জাতিগত নিধনযজ্ঞের মুখে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে।