লাইফস্টাইল ডেক্স,হামিম রাফিঃ সব মিলিয়ে মাত্র একশ বছর হয়েছে আমরা বিমানে করে উড়তে শিখেছি। এরই মাঝে সারা পৃথিবী এক সাথে বেঁধে ফেলেছে বিমান। বর্তমান সময়ে এক দিনের ভেতরে পুরো পৃথিবী ঘুরে আসা সম্ভব বিমানে করে। বিমানে চড়েননি এমন মানুষের সংখ্যা দিনে দিনে কমে আসছে। এইতো মাত্র ২০০৫ সালেও মাত্র ২.১৪ বিলিয়ন মানুষ বিমানে চড়েছে এক বছরে। এই ২০১৬ সালে এসে সংখ্যাটা বেড়ে গেছে অনেক বেশি।
বিমানে উঠলে অনেকেই চান জানালার পাশের সীটটা যেন পেতে পারেন। জানালা দিয়ে আকাশ দেখা, সারি সারি সাদা মেঘ আর নিচে খেলনার মত আকারের বাড়িঘর দেখার মজাই আলাদা। এই জানালা দিয়ে তাকাতে হঠাৎ করেই হয়ত আপনার মনে হয়েছে, বিমানের জানালা গোল কেন? আমাদের বাড়িঘর, অফিস, আদালত, যানবাহন সব ক্ষেত্রেই জানালা চারকোনা। তাহলে এখানে কেন ভিন্ন?
বিমান যখন প্রথম তৈরি হল, সেই সময়ে জানালা ছিল চারকোনা। কয়েক দশক সেভাবেই চলেছে কোন সমস্যা ছাড়াই। কিন্তু এর পরে এলো জেট বিমানের যুগ। আরও অনেক বেশি গতিতে আরও অনেক বেশি উচ্চতায় যেতে সক্ষম এই বিমানগুলোতে হয়ে গেল সমস্যা। পর পর দুটো বিমান যখন শুধুমাত্র জানালার কারণে মাঝ আকাশ থেকে মাটিতে পড়ে গেল, তখনই সবার টনক নড়ল। শুরু হল গবেষণা।
চারকোনা জানালার চারটি কোনে বিশেষ চাপ তৈরি হয়, আর তাই ভেঙ্গে যাওয়া বা ফাটল ধরার আশঙ্কা বেশি হয়। ছবি: সংগৃহীত।
বেশ কিছু গবেষণার পরে বেড়িয়ে এলো যে, বিমানে চারকোনা জানালা ব্যবহারের কারণেই এই সমস্যাগুলো তৈরি হচ্ছে। চারকোনা জানালার সমস্যা হল, বিমানের ভেতরে যখন বাতাসের চাপ বেশি থাকে, আর একইসাথে বাড়তে থাকে গতি, সেই সময়ে চারটা কোনায় প্রচণ্ড চাপ তৈরি হয়। এক দুবারে এটা বড় কোন সমস্যা না হলেও বেশ লম্বা একটা সময় পরে সেই জায়গাগুলো ভঙ্গুর হতে থাকে এবং একটা সময় সেগুলো কেবিনের ভেতরের প্রচণ্ড চাপে ভেঙ্গে যায় এবং দুর্ঘটনার কারণ হয়।
গবেষণা করে দেখা গেল, এই সমস্যার সমাধান হওয়া সম্ভব গোলাকৃতি জানালা ব্যবহার করলেই। গোল জানালা হবার কারণে, কেবিনের ভেতরে যে বাতাসের চাপ তৈরি হয়, সেটা সমানভাবে পুরো জানালায় ছড়িয়ে যায় এবং সংযুক্ত দেয়ালে সমানভাবে চাপ তৈরি করে। তাই নির্দিষ্ট কোন জায়গায় বেশি চাপ তৈরি হয় না এবং ভেঙ্গে গিয়ে দুর্ঘটনা হবার কোন আশঙ্কা থাকে না।
এই কারণে এর পর থেকে সব বিমানের জানালা গোল করে তৈরি করা হতে থাকে।
সম্পাদনা: ড. জিনিয়া রহমান।