রায়হান কবির,স্বদেশ নিউজ ২৪.কমঃ জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের জাতিগতভাবে নিশ্চিহ্ন করতে নিধনযজ্ঞ চালানোর অভিযোগ তুলে বলেছেন, রাখাইন রাজ্যে রক্তপাত অং সান সু চির সরকারকে কলঙ্কিত করেছে।
২৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার মিয়ানমার সংকট নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে নিকি হ্যালি এসব কথা বলেন।নিকি হ্যালি মিয়ানমারের বেসামরিক সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, এই সহিংসতার জন্য মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘বার্মিজ কর্তৃপক্ষের কর্মকাণ্ডকে একটি জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষে অব্যাহত নৃশংস অভিযান নামে অভিহিত করার ক্ষেত্রে আমরা ভীত হতে পারি না।’তিনি আরও বলেন, ‘একটি মুক্ত ও গণতান্ত্রিক বার্মার জন্য বহু ত্যাগ স্বীকার করেছেন এমন সিনিয়র নেতৃবৃন্দের এ জন্য লজ্জিত হওয়া উচিত।’
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে সমর্থক, কুটনৈতিক ভাষায় বলার সময় শেষ বলে মন্তব্য করে নিকি হ্যালি বলেন, আমরা এখন নিপীড়ন ও দেশের নাগরিকদের মধ্যে ঘৃণা উসকে দেওয়ার কাজে জড়িত মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জবাবদিহি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত দেশটিতে অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত রাখতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি জনগণের মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান হ্যালি।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর যে সদস্যদের বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে, তাদের নির্দেশনা দেয়ার মতো দায়িত্বশীল পদ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সরিয়ে দিতে হবে। অভিযুক্ত সেনাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।উল্লেখ্য, গত ১১ আগস্টে রাখাইন রাজ্যে সেনা মোতায়েনের পর ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা ‘জাতিগত নিধন’ শুরু করে। ঘটনায় প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে রোহিঙ্গার সংখ্যা ৪ লাখ ৮০ হাজারে গিয়ে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোর সমন্বয় কমিটি।
সারা বিশ্বে ইউএনএইচসিআর কতৃক নিবন্ধিত ১৭.২ মিলিয়ন শরণার্থীর ৩০% এখন বাংলাদেশে। এরই মধ্যে চলমান রোহিঙ্গা ঢল অব্যাহত থাকলে শরণার্থীর এ সংখ্যা ১০ লাখে পৌঁছাতে পারে বলেও সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। এত সংখ্যক শরণার্থীর দায়িত্ব তাদের পক্ষেও নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।