1. ccadminrafi@gmail.com : Writer Admin : Writer Admin
  2. 123junayedahmed@gmail.com : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর
  3. swadesh.tv24@gmail.com : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম
  4. swadeshnews24@gmail.com : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর: : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর:
  5. hamim_ovi@gmail.com : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  6. skhshadi@gmail.com : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান: : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান:
  7. srahmanbd@gmail.com : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  8. sumaiyaislamtisha19@gmail.com : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান
কিলো ফ্লাইটঃ অগ্নি বলাকার মুক্ত ডানা - Swadeshnews24.com
শিরোনাম
গোবিন্দগঞ্জে অটোচালক দুলা হত্যার মূল আসামি আটক চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু পলাশবাড়ীতে উপজেলা নির্বাচনে অনলাইন মনোনয়নপত্র দাখিলের বিষয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলেই বিএনপি বলে বিরোধীদল দমন’ এবার বুবলী-শাকিবের ‘কোয়ালিটি টাইম’ নিয়ে মুখ খুললেন অপু বাংলাদেশের সফলতা চোখে পড়ার মতো: সিপিডির রেহমান সোবহান চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে যা বললেন নিপুণ তালিকা দিতে না পারলে ফখরুলকে ক্ষমা চাইতে বললেন ওবায়দুল কাদের প্রকাশিত হলো দিদারের ‘বৈশাখ এলো রে এলো বৈশাখ’ আ.লীগের মতো ককটেল পার্টিতে বিশ্বাসী নয় বিএনপি: রিজভী হৃদয় খানের সঙ্গে জুটি ন্যান্সিকন্যা রোদেলার শাকিব ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পুরুষকে ভাবতে পারি না: বুবলী শাকিবের এমন সময় আমাদেরও ছিল: ওমর সানী কত টাকা সালামি পেলেন জায়েদ খান, দিতে হলো কত লাখ? শাকিব খানের সঙ্গে বিয়ে,দেনমোহর, বিচ্ছেদসহ নানা বিষয় নিয়ে মুখ খুললেন বুবলী

কিলো ফ্লাইটঃ অগ্নি বলাকার মুক্ত ডানা

  • Update Time : শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
  • ৪৭৯ Time View

বাংলার আকাশ মুক্ত রাখার কঠিন শপথে বলীয়ান হয়ে যে বিমান বাহিনী ২৮শে সেপ্টেম্বর ১৯৭১ ভারতের পূর্বাঞ্চল নাগাল্যান্ড প্রদেশের ডিমাপুর থেকে যাত্রা শুরু করেছিল তার পটভুমি এবং ইতিহাস যে কোনো কল্পলোকের রূপকথার দুঃসাহসী চ্যালেঞ্জিং অভিযানকেও হার মানাবে নিঃসন্দেহে, কিন্তু বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জন্ম কোনো রূপকথা নয় বরং বাস্তবিক বীরত্ব গাঁথার এক অমর কাব্য এবং সেই কাব্য রচিত হয়েছিল দেশ প্রেমে উদ্ধুদ্ধ, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নে বিভোর একদল মুক্তি পাগল অকুতোভয়, বৈমানিক, বিমান সেনা ও সংগঠকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গঠনের ইতিকথা বিশ্বের যে কোন সামরিক ইতিহাসের পাতায় একটি বিরল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, কারণ শাসক গোষ্ঠীর অন্যায়, অবিচার, নিস্পেষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে জেগে উঠা একটি জাতি যখন স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র যুদ্ধে লিপ্ত, তখন সময়ের দাবি মেটাতে- একটি স্বাধীন পতাকার জন্য বিদেশ ভূমে জন্ম লাভ করে আমাদের জাতির অহঙ্কার এবং স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের অন্যতম স্তম্ভ সশস্ত্র বাহিনীর এই প্রতিষ্ঠানটি। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে একটি জাতিকে স্বাধীন করার দৃঢ় প্রত্যয়ে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর অনেক বাঙ্গালী সদস্য  সুনিশ্চিত অভিজাত জীবনের সুখ স্বাচ্ছন্দ্য পায়ে ঠেলে পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন এবং মরণপন যুদ্ধ করেন। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান দেশ মাতৃকার টানে ১৯৭১ সালের ২০শে আগস্ট মুক্তিকামী বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতার জন্য নিজ জীবন উৎসর্গ করে দেশপ্রেমের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। অপরদিকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্ববাসীর মনোযোগ ও সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে গৃহীত একটি পরিকল্পনার কথা ফাঁস হয়ে গেলে গ্রেফতার হন ১৯৬৫ সালে পাক ভারত যুদ্ধে এবং ১৯৬৭ সালে আরব ইসরাইল যুদ্ধে অসামান্য সফলতা অর্জনকারী ও সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী টপ গান খ্যাত বিশ্ব বিখ্যাত ফাইটার পাইলট স্কোয়াড্রন লিডার সাইফুল আজম (পরবর্তীতে গ্রুপ ক্যাপ্টেন)। তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় পাক বাহিনীর ইন্টেরোগেশন সেলে।  এছাড়াও একটি স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দু’চোখে ধারন করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর তিন জন বাঙ্গালী বৈমানিক – স্কোয়াড্রন লিডার সুলতান মাহমুদ (পরবর্তীতে এয়ার ভাইস মার্শাল এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান), ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট শামসুল আলম, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট বদরুল আলম সহ প্রায় ৫০ জন বিমান সেনা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনের জন্য ভারতে গমন করেন। অর্থাৎ পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে কর্মরত  প্রতিটি বাঙ্গালী সদস্যই তখন একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য যার যার অবস্থান থেকে জীবন বাজি রেখে দায়িত্ব পালনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হন। পাকিস্তান বিমান বাহিনীর বাঙ্গালী সদস্য ছাড়াও পিআইএ এবং প্ল্যান্ট প্রটেকশনের ৬ জন বেসামরিক বাঙ্গালী বৈমানিকও (ক্যাপ্টেন আলমগীর সাত্তার, আকরাম আহমেদ, সাহাবুদ্দিন, আব্দুল খালেক, মুকিত, সরফুদ্দিন) মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের জন্য সেই সময় ভারত গমন করেন।
যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার (পরবর্তীতে এয়ার ভাইস মার্শাল এবং স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিমান বাহিনী প্রধান) বিমান বাহিনী গঠনের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব গভীরভাবে অনুভব করেন কেননা যুদ্ধ ক্ষেত্রে শত্রু পক্ষের উপর প্রভাব বিস্তার করতঃ যুদ্ধের ফলাফল দ্রুত নিস্পত্তির জন্য বিমান আক্রমন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী পন্থা। এই ব্যাপারে গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার প্রবাসী বাংলাদেশী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তথা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ-এর কাছে একটি পরিপূর্ন পরিকল্পনা এবং প্রস্তাব পেশ করেন। অসাধারন ব্যক্তিত্বের অধিকারী, সৎ, নির্ভীক দেশপ্রেমিক, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন তাজউদ্দিন আহমদ মনোযোগ সহকারে গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকারের প্রস্তাবনা শুনেন এবং ভারতের সমসাময়িক ভু-রাজনৈতিক জটিলতা, আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও কুটনৈতিক চাপ এবং আইনের সীমাবদ্ধতার মাঝে অন্য দেশের মাটিতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গঠনের প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত জটিল ও কঠিন হবে জেনেও তিনি তাঁর প্রজ্ঞা ও অসাধারন বিচক্ষনতা দিয়ে বিমান বাহিনী গঠনের গুরুত্ব তৎক্ষণাৎ অনুধাবন করতে সক্ষম হন। তাজউদ্দিন আহমদ একজন বেসামরিক রাজনীতিবিদ হয়েও পেশাদার বিচক্ষন সমর নায়কের মত সময়োচিত সিদ্ধান্ত গ্রহন করে গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকারের প্রস্তাবের সাথে একমত পোষণ করেন এবং এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহনের আশ্বাস দেন। গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার ভারতে অবস্থানরত সকল দক্ষ ও অভিজ্ঞ বাংলাদেশী বৈমানিক ও বিমান সেনাদের পরিপূর্ণ ভাবে কাজে নিয়োজিত করে মুক্তিযুদ্ধের গতিবিধি দ্রুত পরিবর্তনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন এবং ভারত সরকারের সার্বিক সহযোগিতা লাভের প্রত্যাশায় প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের পরবর্তী নির্দেশের অপেক্ষায় থাকেন।
এ প্রসঙ্গে এ কে খন্দকার স্মৃতিচারণ মূলক গ্রন্থ “মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর” (পৃষ্ঠা ৬৪ এবং ৬৫)-এ উল্লেখ করেনঃ “তাজউদ্দিন আহমদ অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে তখন আমার এই কথাগুলো শুনেছিলেন। এর কিছু দিন পর তিনি একদিন আমাকে তাঁর দপ্তরে ডেকে পাঠান। খবর পেয়ে আমি তখনই তাঁর দপ্তরে গেলাম। গিয়ে দেখি তাঁর দপ্তরে কয়েকজন বসে আছেন। কে কে উপস্থিত ছিলেন তা এখন আমার মনে পড়ছেনা, তাঁদের মধ্যে খুব সম্ভবত ভারতীয় প্রতিরক্ষা সচিব কে বি লালও ছিলেন। যাই হোক, তাজউদ্দিন আহমদ আমাকে বললেন ‘উনারা এসেছেন, উনাদের সঙ্গে আপনি আলাপ করেন।’
চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপকালে এ কে খন্দকার বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গঠনের প্রসঙ্গ তোলেন এবং প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদকে বলা কথাগুলো পুনরাবৃত্তি করে তাঁদের অবগত করেন যে এটা চলমান মুক্তিযুদ্ধে অতি কার্যকরী সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজে লাগবে. যা পুরো যুদ্ধের গতিপথকে ঘুরিয়ে দিতে পারবে। প্রতি উত্তরে কে বি লাল জানান যে এই মুহূর্তে কোন বিমান তাঁদের পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়; কেননা তাঁদের নিজেদেরই যুদ্ধ বিমানের স্বল্পতা রয়েছে। তবে তিনি (কে বি লাল) প্রস্তাব করেন যে বাংলাদেশের পাইলটরা ভারতীয় স্কোয়াড্রনে উড্ডয়ন করতে পারেন। কে বি লালের প্রস্তাবের বিপক্ষে এ কে খন্দকার যুক্তি প্রদর্শন করেন যে – পাইলটদের বিমান উড্ডয়নের কিছু নিয়ম আছে, কতগুলো আইনগত ব্যাপার আছে, কতগুলো কোড আছে। বাংলাদেশের পাইলটরা যে ভারতীয় বিমানে উড্ডয়ন করবেন, তখন তাঁরা কোন দেশের কোড ব্যাবহার করবেন- ভারত. নাকি বাংলাদেশের! কে বি লাল বলেন যে, বাংলাদেশী পাইলটদের ভারতীয় কোড ও নিয়মকানুন অনুসরন করতে হবে! ভারত সরকারের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনার পুরো সারমর্ম এ কে খন্দকার প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদকে একান্তে অবগত করেন এবং বলেন যে বাস্তবিক পক্ষে এই প্রস্তাব মেনে নেয়া যায় না। আমরা একটি স্বাধীন দেশ, আমরা অন্য দেশের কোড, নিয়ম কানুন অনুসরন করতে পারিনা। অতঃপর এ কে খন্দকার পুনরায় কে বি লালকে অনুরোধ করে বলেন যে, যদি সম্ভব হয় তবে বাংলাদেশের পাইলটদের যেন কাজে লাগানো হয়, যা চলমান মুক্তিযুদ্ধের জন্য সহায়ক হবে। কিছু দিন পর এ কে খন্দকারকে নির্দেশ দেয়া হয় বিমান বাহিনী গঠনে উদ্যোগ নেয়ার জন্য এবং তাঁকে জানানো হয় যে ভারত সরকার বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গঠনের জন্য তিনটি এয়ারক্র্যাফট প্রদান করবে এবং উড্ডয়ন প্রশিক্ষন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দেয়া হয় ভারতের পূর্বাঞ্চল নাগাল্যান্ড প্রদেশের ডিমাপুর নামক স্থানে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ কালীন সময়ে প্রতিষ্ঠিত একটি পরিত্যক্ত বিমান ক্ষেত্র। উক্ত এলাকাটি ছিল গহীন বন জঙ্গল, উঁচু পাহাড় এবং পঁচিশ থেকে চল্লিশ ফুট উঁচু বৃক্ষরাজি দ্বারা পরিবেষ্টিত, যা বিমান উড্ডয়ন ও অবতরনের জন্য ছিল ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ। অপর দিকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গঠনের জন্য যে তিনটি বিমান প্রদান করা হয়. তার কোনটিই যুদ্ধ বিমান ছিলনা। বরং তা ছিল অত্যন্ত সাধারন মানের পুরনো মডেলের বিমান, তন্মধ্যে একটি ছিল ডি সি-৩ ডাকোটা বিমান, যেটি উপহার হিসেবে প্রদান করেন যোধপুরের মহারাজা, একটি ডি এইচ সি ৩ অটার(de Havilland Canada DHC-3 Otter) সিঙ্গেল ইঞ্জিন বিমান এবং একটি অ্যালুয়েট-থ্রি হেলিকপ্টার। এমতাবস্থায় বাংলাদেশী বৈমানিক ও বিমান সেনাদের যে কয়টি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয় তা হলো- পরিত্যক্ত বিমানক্ষেত্র এবং পারিপার্শ্বিক এলাকা বিমান চলাচলের জন্য অতি দ্রুততর সময়ে উপযোগী করে গড়ে তোলা, আধুনিক বিমান চালনায় অভ্যস্ত বাংলাদেশী পাইলটদের পুরনো এবং ভিন্ন ধরনের বিমানে নিজেদের পরিজ্ঞাত করা এবং সাধারন মানের বিমানকে যুদ্ধ বিমানে রূপান্তরিত করা। কিন্তু অদম্য ইচ্ছা শক্তি, কাঙ্খিত স্বাধীনতা অর্জনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যুদ্ধংদেহী মনোভাব, দেশপ্রেম এবং পেশাদারী একাগ্রতার কাছে সেই সব সীমাবদ্ধতা বা চ্যালেঞ্জ যেন খড় কুটোর মত ভেসে গেল।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গঠনে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা এবং সমন্বয়ের জন্য ভারতীয় বিমান বাহিনী কতৃপক্ষ গ্রুপ ক্যাপ্টেন চন্দন সিং, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সিংলা, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট ঘোষাল, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট রামাকৃষ্ণ সহ আরো বেশ কয়েকজনকে নিয়োগ দেয়। এ ব্যাপারে তৎকালীন ভারতীয় বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল প্রতাপ চন্দ্র (পি.সি) লালের সহযোগিতা ছিল উল্লেখযোগ্য। জনশ্রুতি রয়েছে যে পি.সি লালের শ্বশুর কূলের আদি নিবাস ছিল বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলায়। ২৮শে সেপ্টেম্বর ১৯৭১,  ইতিহাসের পাতায় রচিত হলো এক অন্য রকম ইতিহাস। ডিমাপুর বিমান ক্ষেত্রে একত্রিত হলো মুক্তি পাগল, স্বাধীন দেশের স্বপ্নে বিভোর একদল অগ্নি বলাকা, হৃদয়ে তাঁদের কাঙ্খিত বিজয় ছিনিয়ে আনার উদগ্র বাসনা। এয়ার চীফ মার্শাল পি.সি লাল এইদিন ফিতা কেটে উদ্বোধন করলেন নবগঠিত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জয়যাত্রা, সূচিত হলো বাংলার অগ্নি বলাকাদের দীপ্ত চিত্তে ক্ষিপ্র গতিতে উড়ে চলার ইতিহাস।
গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার নবগঠিত বিমান বাহিনীর পুরো ইউনিটকে বিভিন্ন ভাগে বিন্যস্ত করে তাঁদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে নির্দেশনা প্রদান করেন। শুরু হয় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কার্যক্রম। সেদিন থেকেই প্রতি বছর এই দিনটি (২৮ শে সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ বিমান বাহিনী দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে। গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকারের নেতৃত্বে গঠিত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এই ফরমেশনের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন স্কোয়াড্রন লিডার সুলতান মাহমুদ। শত্রুর উপর শানিত আক্রমন পরিচালনার জন্য শুরু হয় কঠোর প্রশিক্ষন। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে সকাল, বিকাল এবং রাত্রিকালীন উড্ডয়ন কার্যক্রম চলতে থাকে। বাংলাদেশী পাইলটরা জানতেন যে পূর্ব পাকিস্তানে অবস্থিত পাকিস্তান বিমান বাহিনীর রাত্রিকালীন বিমান যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে রয়েছে কিছু সীমাবদ্ধতা এবং দুর্বলতা। আর তাই পরিকল্পনা গ্রহন করা হয় ঢাকা সহ শত্রু পক্ষের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় রাত্রিকালীন বিমান আক্রমনের। আক্রমনের লক্ষ্যে স্থির থেকে সদ্যজাত বিমান বাহিনীর অকুতোভয় যোদ্ধারা দিবা রাত্রি প্রশিক্ষনে নিমগ্ন রইলেন এবং উত্তেজনায় অপেক্ষা করতে থাকলেন শত্রু দিগন্তে বিভীষিকা হয়ে উদিত হবার মুহূর্তটির জন্য। বিমান হামলার মুল পরিকল্পনার প্রথম ভাগে সিদ্ধান্ত হয় ডি সি-৩ ডাকোটা বিমানে ৫০০ পাউন্ডের বোমা বহন করা হবে এবং অ্যালুয়েট হেলিকপ্টার ও অটার বিমানে রকেট পড সংযোজন করে এই ধরনের সাধারন মানের ও পুরনো মডেলের বিমানগুলোকে যুদ্ধ বিমানে রূপান্তরিত করা হবে। কিন্তু প্রায় পনের দিন উড্ডয়ন প্রশিক্ষন শেষে ডি সি-৩ ডাকোটা বিমানকে আক্রমন পরিকল্পনা থেকে বাদ দেয়া হয় এই জন্য যে উক্ত বিমানটিকে পুরো মাত্রার গতিতে চালাতে গেলে বিমানের পিস্টন ইঞ্জিনের ধোঁয়ার সাথে নির্গমন পাইপ দিয়ে আগুনের ঝলক/শিখা (Flame) নির্গত হয়, যা রাতের অন্ধকারে শত্রু পক্ষের কাছে সহজে চিহ্নিত লক্ষ্য  বস্তুতে পরিনত হতে পারে। অ্যালুয়েট  হেলিকপ্টার এবং অটার বিমান চালনার জন্য পাইলটদের দুইটি ভাগে বিন্যস্ত করা হয়। হেলিকপ্টারের ক্যাপ্টেন হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন স্কোয়াড্রন লিডার সুলতান মাহমুদ এবং কো-পাইলট হিসেবে নিয়োজিত হন যথাক্রমে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট বদরুল আলম ও ক্যাপ্টেন সাহাবুউদ্দিন, অপরদিকে টুইন অটার বিমানে ক্যাপ্টেনের দায়িত্বে ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট শামসুল আলম এবং কো-পাইলট হিসেবে ক্যাপ্টেন আকরাম ও ক্যাপ্টেন শরফুদ্দিন। প্রবল উৎসাহ নিয়ে বাংলাদেশী বিমান যোদ্ধারা বিপদসংকুল পরিস্থিতিতে প্রশিক্ষন কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকে– লক্ষ্য  তাঁদের একটিই- স্বাধীনতা এবং কেবলই স্বাধীনতা। আকাশ থেকে ভূমিতে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে গোলাবর্ষণের অনুশীলনের জন্য উঁচু উঁচু পাহাড়ের ঢালু পথে কিংবা গাছ গাছালির উপর বিমান থেকে প্যারাসুট ফেলে এবং ছড়িয়ে দিয়ে সেগুলোকে এইমিং টার্গেট বানানো হয়। অ্যালুয়েট হেলিকপ্টারের দুই পাশে ফাইটার বিমানের রকেট পড সংযোজন করা হয় যার প্রতিটিতে সাতটি করে রকেট বহন করা যায়। এছাড়াও হেলিকপ্টারের বাঁ দিকের স্লাইডিং দরজা খুলে সেখানে সাইড ফায়ারিং এর জন্য টুইন ব্যারেল ব্রাউনিং  মেশিনগান স্থাপন করা হয়। রকেট পড থেকে  রকেট গুলো জোড়ায়  জোড়ায় কিংবা এক সঙ্গে সবগুলো ছোঁড়ার(In pairs or salvo) বেবস্থা করা হয় এবং সিলেকশন সুইচ ও ফায়ারিং সুইচ পাইলটের কন্ট্রোল স্টিক এ সংযোজন করা হয়. সফল ভাবে সমরাস্ত্র সংযোজনের পর হেলিকপ্টারটি ৮ই অক্টোবর ১৯৭১ ভারতের জোড়হাটে আনা হয় এবং পরবর্তীতে জোড়হাট থেকে উড়িয়ে ডিমাপুরে আনা হয়। হেলিকপ্টারটির সিরিয়াল নাম্বার ছিল ৩৬৪। হেলিকপ্টারটির ভারটিক্যাল স্টেবিলাইজারে ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রতীক চিহ্ন মুছে স্বাধীন বাংলার জন্য নকশাকৃত প্রথম পতাকাটি অঙ্কন করা হয়, যা নবগঠিত বিমান বাহিনীর সদস্যদের মাঝে এক নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি করে। অপরদিকে অটার বিমানের দুই উইং এর নীচে দুইটি রকেট পড এবং একই কায়দায় বিমানটির একটি  দরজা খুলে সেখানে সাইড ফায়ারিং এর জন্য টুইন ব্যারেল ব্রাউনিং থ্রি-নট-থ্রি মেশিনগান স্থাপন করা হয়, তবে অতিরিক্ত ব্যবস্থা হিসেবে বিমানটির পেছনে ২৫ পাউন্ডের বোমা রাখার জন্য  বোম্ব রেক (Rack) বসানো হয়, যাতে উড়ন্ত বিমান থেকে শত্রু পক্ষের লক্ষ্যবস্তুর উপর হাত দিয়ে বোমা ফেলা যায়।  এছাড়াও  বাড়তি নিরাপত্তার জন্য পাইলটদের  পায়ের নীচের অংশে  এক ইঞ্চি পুরো ইস্পাতের পাত লাগানো হয়। অটার বিমানেও স্বাধীন বাংলার জন্য নকশাকৃত প্রথম পতাকাটি অঙ্কন করা হয়। উড্ডয়ন ইতিহাসের সকল নিয়ম কানুন ও আইনের  চরম ব্যত্যয় ঘটিয়ে বিমানগুলোতে এইরুপ আদিম পন্থায় সমরাস্ত্র সংযোজন ও বিমানের কাঠামোগত পরিবর্তনের দরুন বিমানের স্বাভাবিক উড্ডয়ন আচরন, আকৃতি ও প্রকৃতিতেও অনেক পরিবর্তন ঘটে, যা বিমান উড্ডয়নের ক্ষেত্রে হয়ে উঠে আরো বিপজ্জনক, কিন্তু একটি স্বাধীন অখন্ড বাংলাদেশ সৃষ্টির নেশায় উন্মুখ বিমানযোদ্ধারা সকল বিপদ ও চ্যালেঞ্জকে তুচ্ছ করে এগিয়ে যেতে থাকেন নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে।
অক্লান্ত পরিশ্রম ও বিরামহীন প্রশিক্ষন শেষে দুঃসাহসী বৈমানিক ও বিমানসেনারা চুড়ান্ত মুহূর্তটির জন্য অধীর আগ্রহ ও সীমাহীন উত্তেজনা নিয়ে অপেক্ষায় থাকেন। প্রথম পর্বে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারী এবং নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল  জ্বালানী তেলের ডিপোকে আক্রমনের লক্ষ্য বস্তু হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। এইরূপ লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণের পেছনে যে যুদ্ধ কোশল বা ভাবনাটি কাজ করেছিল তা হলো যুদ্ধকালীন সময়ে যে কোনো পক্ষের সৈন্য বাহিনীর দ্রুত মুভমেন্ট কিংবা বিমান সহ অন্যান্য যুদ্ধ সামগ্রী সচল রাখা ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে জ্বালানী তেল অন্যতম জীবনি শক্তি হিসেবে কাজ করে। কাজেই এই শক্তিকে ধ্বংস করতে পারলেই যুদ্ধক্ষেত্রে বহুবিধ আশানুরূপ ফলাফল লাভ করা সম্ভব হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী স্কোয়াড্রন লিডার সুলতান মাহমুদের নেতৃত্বে অ্যালিউট-৩ হেলিকপ্টার ভারতের তেলিয়ামোড়া  বিমান ক্ষেত্র  এবং ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট শামসুল আলমের নেতৃত্বে অটার বিমানটি বাংলাদেশের শমশের নগরের উল্টো পাশে ভারতীয় সীমান্তে অবস্থিত কৈলাসশহর ফরোওয়ার্ড বিমানক্ষেত্রে ২৬ শে নভেম্বর ১৯৭১  অবস্থান গ্রহন করে এবং ২৮শে নভেম্বর ১৯৭১ পাক বাহিনীর উপর প্রথম বিমান আক্রমনের দিন নির্ধারণ করা হয়।  পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়- নারায়নগঞ্জে গোদনাইল জ্বালানী তেলের ডিপো আক্রমন করা হবে হেলিকপ্টার দ্বারা এবং চট্টগ্রাম ইস্টার্ন রিফাইনারিতে আক্রমন করা হবে অটার বিমান দিয়ে। আক্রমনের লক্ষ্যে স্থির থেকে সদ্যজাত বিমান বাহিনীর অকুতোভয় যোদ্ধারা পূর্ণ প্রস্তুতি শেষে প্রতীক্ষায় রইলেন শত্রু দিগন্তে বিভীষিকা হয়ে উদিত হবার মুহূর্তটির জন্য। ইতিহাস সৃষ্টিকারী এই মিশনের নামকরন করা হয় মুক্তিযুদ্ধের উপ অধিনায়ক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকারের নামের প্রথম অক্ষর ‘K’ দিয়ে – “অপারেশন কিলো ফ্লাইট”। প্রতীক্ষিত মুহুর্তটি যতই নিকটবর্তী হচ্ছিল, “কিলো ফ্লাইট” এর প্রতিটি সদস্যের শিরা, উপশিরা, রক্ত কনিকা যেন এক অপূর্ব উত্তেজনায় ঝংকৃত হচ্ছিল। কিন্তু না- তাঁদের সকলকে হতাশ করে ২৮ শে নভেম্বর ৭১ দিল্লী থেকে উক্ত মিশন বাতিলের নির্দেশ এলো। চরম হতাশা এবং দুঃখবোধ নিয়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্যদের সময় অতিবাহিত হতে লাগল। অবশেষে এলো সেই মহেন্দ্রক্ষণ, ৩রা ডিসেম্বর ১৯৭১, পাক বাহিনী বিকেল ৪ ঘটিকায় ভারতের উপর বিমান আক্রমন শুরু করে। এই অতর্কিত বিমান হামলার দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেয়ার জন্য কিলো ফ্লাইট এর সদস্যদের কাছে নতুন নির্দেশ আসে এবং তাঁদের বলা হয় যে আক্রমন হবে পূর্ব পরিকলপনা অনুযায়ী। ৩রা ডিসেম্বর ১৯৭১ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় কৈলাসশহর থেকে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট শামসুল আলম তাঁর কো পাইলট আকরাম আহমেদ সহ দুইজন বিমানসেনাকে নিয়ে অটার বিমানের অভিযাত্রা  শুরু করে  তাঁদের লক্ষ্যস্থল চট্টগ্রাম ইস্টার্ন রিফাইনারীর উদ্দেশ্য। তাঁদের সঙ্গে ছিলনা দিক নির্ণয় বা লক্ষ্য বস্তু সহজে খুঁজে পাবার জন্য কোনো আধুনিক নেভিগেশনাল ইন্সট্রুমেন্ট। প্রশিক্ষনলব্ধ জ্ঞান, সাহস এবং অগাধ দেশপ্রেমই ছিল তাঁদের অনুপ্রেরণা ও বিজয় ছিনিয়ে আনার মূল মন্ত্র । অটার বিমানের  উড্ডয়নের   অনেকটা সময়  পরে তেলিয়ামোড় বিমান ক্ষেত্র থেকে  নারায়ণগঞ্জ লক্ষ্যস্থলের দিকে স্কোয়াড্রন লীডার সুলতান মাহমুদ,  ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট   বদরুল আলম, ক্যাপ্টেন সাহাবুদ্দিন এবং  এয়ার গানার ট্রেডের  বিমানসেনা সহ  অ্যালিউট-৩ হেলিকপ্টারে  যাত্রা শুরু করেন । এ যেন  জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে  মৃত্যু ভয়কে উপেক্ষা করে সকল অন্ধকারের বুক বিদীর্ণ করে এক ঝাঁক অগ্নিবলাকার  ছুটে চলা -নতুন আলো, নতুন সূর্যের সন্ধানে। এই ছুটে চলার মানে ছিল একটি- হয় বিজয়, নয়ত মৃত্যু। । ভারতের  উপর পাক বাহিনীর বিমান আক্রমনের প্রথম পাল্টা জবাব দেয় সদ্য গঠিত বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। “কিলো ফ্লাইট”এর সদস্যরা অত্যন্ত সফলভাবে চট্টগ্রাম ইস্টার্ন রিফাইনারী এবং নারায়ণগঞ্জ তেল ডিপোর উপর বিমান হামলা চালিয়ে পাক বাহিনীকে হতবিহ্বল করার পাশাপাশি তাঁদের যুদ্ধ চালিয়ে যাবার সক্ষমতা অনেকাংশে নিঃশেষ করে দেয়। নিজ জীবনের মায়া তুচ্ছ করে দুঃসাহসী বিমান যোদ্ধারা শত্রু দিগন্তে বিভীষিকা ছড়িয়ে যখন ফিরে আসছিল তখন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠা  আগুনের লেলিহান শিখা অন্ধকারের বুক ছিঁড়ে যেন কাঙ্ক্ষিত আলোকবর্তিকা ছড়িয়ে দিচ্ছিল সবখানে – এ যেন হাজার বছরের নিপীড়ন আর বঞ্চনার আঁধার ছিন্ন করা উদিত এক নতুন লাল সূর্য-মুক্তির বারতা। বাংলাদেশ বিমান বাহিনী কতৃক বিমান আক্রমনের মাত্র তের দিন পর বিশ্বের মানচিত্র সংশোধিত হয় আরেকবার, সংযোজিত হয় এক নতুন রাষ্ট্র, একটি জাতি, একটি স্বাধীন পতাকা, একটি দেশ, নাম তাঁর- বাংলাদেশ। আজ বাংলাদেশ বিমান বাহিনী দিবসে সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রধানমন্ত্রী শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ, গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার সহ সকল বাঙ্গালী বৈমানিক ও বিমানসেনাদের- যাঁদের সুচিন্তিত ভাবনা ও পরিকল্পনা, সময়োচিত পদক্ষেপ, অকৃত্রিম দেশপ্রেম এবং অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে গঠিত হয় আজকের বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। শ্রদ্ধাঞ্জলি  সকল শহীদের আত্মার প্রতি, যাঁদের আত্মত্যাগে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন মানচিত্র, একটি নির্মল মুক্ত নীলাকাশ-যে আকাশের সীমা পরিসীমার নিরাপত্তা, মর্যাদা  ও নির্মলতা  রক্ষা করে  স্বাধীনভাবে মুক্ত ডানা মেলে উড়ে বেড়াবে আজ ও আগামী দিনের অগ্নি বলাকারা। শুভ জন্মদিন বাংলাদেশ বিমান বাহিনী।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 SwadeshNews24
Site Customized By NewsTech.Com