চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনুরা রেলওয়ে জংশনে যুগ যুগ ধরে ট্রেনের ইঞ্জিন থেকে তেল চুরির জমজমাট ব্যবসা চলে আসছে। মাঝে মাঝে র্যাব সদস্যরা অভিযান চালিয়ে তেল চোরদের গ্রেপ্তার করলেও জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারো জড়িয়ে পড়ছে তেল চুরির ব্যবসায়। জানা গেছে, আমনুরা রেলওয়ে জংশন এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে সংঘবদ্ধ দুটি গ্রুপের সমঝোতায় চলছে এই তেল চুরি। রুট ভাগ করে তারা ট্রেনের ইঞ্জিন থেকে তেল চুরির কাজ করে। সম্প্রতি র্যাবের সদস্যরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে কয়েক দফা অভিযান চালিয়ে তেলসহ কয়েকজন চোরকে কয়েক দফায় গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে রাজশাহী জিআরপি থানায় একাধিক তেল চুরির মামলা রয়েছে। কিন্তু জামিনে মুক্তি পেয়ে দুই গ্রুপের তেল চোররা একত্রিত হয়ে ১২ সদস্যের একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে। তেল চুরি সিন্ডিকেটের সদস্যরা হলেনÑ আমনুরা বাজারের সোহেল, জনতাপাড়ার আজিজুল, সাইফুল, কুলিপাড়ার সাহারুল, মাস্টারপাড়ার বাবু, আমনুরা বাজারের হিমেল, মাসুম, ইমাম ও মালেক, কানপাড়ার জামাল, কলোনীপাড়ার জাহাঙ্গীর, বালিকাপাড়ার দুলাল। সিন্ডিকেটের সদস্যরা সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ট্রেনের ইঞ্জিন থেকে নিয়মিত তেল চুরি করে আসছে। রেলের একটি সূত্র জানায়, ইঞ্জিন থেকে তেল চুরি হওয়া ট্রেনগুলো হচ্ছেÑ লোকাল মহানন্দা ৫৮৫, লোকাল ৫৮২, লোকাল বাইপাস ৫৬৬, লোকাল ৫৮১, লোকাল ৫৬৪৪, লোকাল ৫৬৩, লোকাল বাইপাস ৫৬৫, মহানন্দা ১৫ আপ এক্সপ্রেস মেইল, ৫ আপ রাজশাহী এক্সপ্রেস বাইপাস মেইল, ১৬ মহানন্দা এক্সপ্রেস, ৬ রাজশাহী এক্সপ্রেস বাইপাস, দুটি আন্তঃনগর কমিউটার ট্রেন, ৫৮ কমিউটার ও ৭৮ কমিউটার। সূত্রটি আরো জানায়, তেল চুরির সিন্ডিকেটের সদস্যদের সঙ্গে ট্রেনের চালক, গার্ড, জিআরপি পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের যোগসাজশে তেল চুরি হয়ে আসছে। এছাড়াও রাত কিংবা দিনে তেল চুরিকালীন সময়ে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত অবস্থায় থাকায় ওইসব চোরদের বিরুদ্ধে কেউই কথা বলার সাহস পান না। অন্যদিকে চলন্ত ট্রেনের গতি থামিয়ে সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেটের সদস্যরা ড্রাম বা প্লাস্টিক ব্যাগে তেল ভর্তি করে নামিয়ে নেয়। সংঘবদ্ধ তেল চোররা অনেক সময় পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ট্রেনের চালক কিংবা গার্ডদের মোবাইল ফোন বা বিশেষ ইশারায় ট্রেন দাঁড় করিয়ে তেল নামিয়ে থাকে। অপর একটি সূত্র জানায়, ট্রেনের ইঞ্জিন থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার চুরি হওয়া ডিজেল ভ্যানে করে পার্শ্ববর্তী রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার এক প্রভাবশালী ব্যক্তির পেট্রল পাম্পে চলে যায়।