জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় জামিন পেলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দুই মামলায় জামিন নিতে গতকাল রাজধানীর বকশীবাজারের কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতে হাজির হন তিনি। শুনানি শেষে এক লাখ টাকা মুচলেকা এবং দুজন জিম্মাদারের অধীনে তার জামিন মঞ্জুর করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান। এরপর বিদেশে গেলে আদালতের অনুমতি নিয়ে যেতে হবে বলে আদেশে উল্লেখ করেন বিচারক। জামিন পাবার পর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারা অনুযায়ী অসমাপ্ত আত্মপক্ষ সমর্থন করে প্রায় এক ঘণ্টা বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, বিচার বিভাগের হাত পা বাঁধা।শাসকগোষ্ঠী বিভিন্নভাবে এই মামলার বিচারকাজকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। বিচারের আগেই আমাকে অসম্মানিত করা হচ্ছে। আমি হয়রানি, পেরেশানি ও হেনস্থার স্বীকার হচ্ছি। আমি কার কাছে এর প্রতিকার চাইব? তিনি বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা কাল্পনিক ও বানোয়াট। সমস্ত অভিযোগ স্ববিরোধী বক্তব্যে ভরপুর। এই ট্রাস্টের একটি টাকাও আমি তছরুপ করিনি। মামলার বিচার নিয়ে শাসক দলের নেতা ও মন্ত্রীদের বক্তব্যে মামলার ন্যায়বিচারের বিষয়ে আস্থাহীনতা ও সংশয় প্রকাশ করেন খালেদা জিয়া।
প্রায় তিন মাস যুক্তরাজ্য সফর শেষে বুধবার দেশে ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। যুক্তরাজ্যে থাকাবস্থাতেই তার বিরুদ্ধে ঢাকা ও কুমিল্লায় নাশকতা, দুর্নীতি ও মানহানির পাঁচটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন সংশ্লিষ্ট আদালত। গত ১২ই অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাজধানীর বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতে সকাল ১১টা ২০ মিনিটে হাজির হন। আদালতের কার্যক্রম শেষে দুপুর ১টা ২৫ মিনিটের দিকে আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন তিনি। আদালতে খালেদা জিয়ার হাজিরাকে কেন্দ্র করে নিশ্ছিদ্র ও কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে খালেদার পক্ষে জামিনের আবেদন করেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার। এ সময় সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, আবদুর রেজাক খান, এজে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদিন, মাহবুব উদ্দিন খোকন, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। একই সঙ্গে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কারাগারে থাকা আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান ১ লাখ টাকা মুচলেকা ও দুজন জিম্মাদারের অধীনে খালেদা জিয়ার জামিন মঞ্জুর করেন। এ ছাড়া আবারো বিদেশে গেলে আদালতের অনুমতি নিয়ে বিদেশে যেতে হবে বলে আদেশে উল্লেখ করেন আদালতের বিচার। আর কাজী সালিমুল হক কামাল ও সরফুদ্দিন আহমেদের জামিন বাতিল করেন বিচারক। এরপর বিচারক খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) আত্মপক্ষ সমর্থন করে কোনো বক্তব্য দেবেন কিনা? খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা সম্মতি জানালে আদালত ১৫ মিনিটের বিরতিতে যান। বিরতি শেষে খালেদা জিয়া তার লিখিত বক্তব্য পাঠ শুরু করেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা গতকাল আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালতে দেয়া বক্তব্যে বিএনপি নেত্রী বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা করা হয়েছে। এই মামলার সমস্ত অভিযোগ কল্পনাপ্রসূত ও বানোয়াট। মামলার সকল অভিযোগ স্ববিরোধী বক্তব্যে ভরপুর। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনগত কর্তৃত্ব ও এখতিয়ারের বাইরে এই মামলা করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই ট্রাস্টের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আমি এবং আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে প্রধানমন্ত্রীর কোনো সম্পর্ক ছিল না। খালেদা জিয়া বলেন, এমন একটি ভিত্তিহীন মামলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে দায়ের করা মামলায় বিচারের নামে দীর্ঘ দিন ধরে আমি হয়রানি পেরেশানি ও হেনস্তার স্বীকার হচ্ছি। আমার স্বাভাবিক জীবন যাপন ব্যাহত হচ্ছে। বিঘ্নিত হচ্ছে আমার রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম। দেশ জাতি ও জনগণের জন্য, তাদের স্বার্থ ও কল্যাণে নিয়োজিত আমার প্রয়াস ও পরিকল্পনা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আর এমন সব মিথ্যা মামলার কারণে দলের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী জনগণের বিরাট একটি অংশকে থাকতে হচ্ছে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার মধ্যে। বিচার বিভাগ স্বাধীন ও স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না- উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এমন ধারণা প্রবল যে ন্যায়বিচারের উপযোগী সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক পরিবেশ পরিস্থিতি এখন নেই। শাসক মহলের নানামুখী তৎপরতা ও প্রভাব বিস্তারের কারণে বিচারকগণ আইন অনুযায়ী ও বিবেকশাসিত হয়ে বিচার করতে পারছেন না। বিচারকদের রায়, সিদ্ধান্ত ও নির্দেশের ক্ষেত্রে প্রশাসনকে তোয়াক্কা করতে হচ্ছে। ক্ষমতাসীনরা কিসে তুষ্ট আর কিসে রুষ্ট হবেন সে কথা মাথায় রেখে চলতে হচ্ছে। বিচারকদের পদোন্নতি, বদলির ক্ষমতা রয়ে গেছে ক্ষমতাসীনদের হাতে। নিম্ন আদালতের পরিস্থিতি আরো প্রকট। খালেদা জিয়া বলেন, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে তার অনুপস্থিতিতে একজন বিচারক তাকে বেকসুর খালাস দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই অপরাধে শাসক মহল সেই বিচারককে হেনস্তা ও হয়রানির উদ্দেশ্যে এমন সব তৎপরতা শুরু করে যে তাকে আত্মরক্ষার জন্য সপরিবারে দেশ ত্যাগ করতে হয়। খালেদা জিয়া বলেন, এই একটিমাত্র উদাহরণই ন্যায়বিচার ব্যাহত করতে এবং ব্যক্তি বিচারকদের নিজস্ব নিরাপত্তা ও বোধের ব্যাপারে শঙ্কিত করার জন্য যথেষ্ট। আর এসব কারণেই দেশে ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, এসব কারণেই সর্বোচ্চ আদালতের সঙ্গে শাসক মহলেও বিরোধ প্রায় প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। বিএনপি নেত্রী বলেন, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা সম্প্রতি প্রকাশ্যে বলেছেন যে, বিচার বিভাগের হাত পা বাঁধা। বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। খালেদা জিয়া বলেন, এসব কারণেই আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় ন্যায়বিচার হবে কিনা তা নিয়ে জনমনে ব্যাপক সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। চরম উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা বাসা বেঁধেছে। বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা প্রাঙ্গণে মামলার বিচারকাজ চলায় এ বিষয়ে ক্ষোভ মেশানো কণ্ঠে আদালতের উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়া বলেন, আপনি কোথায় বসে এ মামলার বিচারকাজ পরিচালনা করছেন। কোথায় স্থাপন করা হয়েছে এজলাস। আপনার এজলাস এটা কি কোর্টের কোনো এজলাস? আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বিচারের জন্য বিশেষ আদালত বসেছে আলিয়া মাদরাসা প্রাঙ্গণে। এর সঙ্গে বিচার ও কোর্ট কাচারির কোনো সম্পর্ক আছে কি? এখানে এলেই আমার মনে পড়ে ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিনের অবৈধ ও অসাংবিধানিক শাসন আমলের কথা। তখন দেশের নেতানেত্রী ও রাজনীতিবিদদের হেনস্তা ও হয়রানির উদ্দেশে আইন আদালত এলাকার বাইরে জাতীয় সংসদের ভবন এলাকায় স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল ও এজলাস বসিয়ে গণতন্ত্র সংসদ ও জনপ্রতিনিধিদের হেয় করাই ছিল তাদের সেদিনের কার্যকলাপের উদ্দেশ্য। কিন্তু আজো কেন তারই ধারাবাহিকতা চলবে?
বকশীবাজারের অস্থায়ী এই আদালতে বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যা মামলার বিষয়টি উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহ, বিদ্রোহ হত্যার বিচারের জন্য এই এজলাস স্থাপন করা হয়েছিল। সেখানে আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় বিচার কেন করা হচ্ছে? আমার বিরুদ্ধে কেন এই ন্যক্কারজনক ব্যতিক্রম? আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামানের উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়া বলেন, আমরা সকলে জানি এর জন্য আপনি দায়ী নন। এই সিদ্ধান্ত আপনি নেননি। আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বিচারকাজ কোথায় বসে পরিচালিত হবে, এজলাস কোথায় হবে সেটি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে শাসক মহলের অভিপ্রায় জড়িত। আমার বিচারের জন্য শাসক মহলের ইচ্ছাতেই এখানে এজলাস বসানো হয়েছে। খুন, বিদ্রোহের অভিযোগে যাদের বিচার হয়েছে সেখানে এজলাস বসিয়ে আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বিচারের আয়োজন তারাই করেছে। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্য এর মাধ্যমে বিচারের আগেই বিচার চলাকালে আমাকে জনসম্মুখে হেয় করা, অপমান অপদস্ত করা। এটাও বিচার প্রক্রিয়ার এক ধরনের পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপ এমন একটি ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি করেছে যার কারণে জনমনে ন্যায়বিচার সম্পর্কে চরম সন্দেহ সৃষ্টি করেছে। এর মাধ্যমে বিচারের আগেই আমাকে অসম্মানিত করা হচ্ছে। এর প্রতিকার আমি কার কাছে চাইবো?
ক্ষমতাসীন সরকার বিচারকে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া আদালতে বলেন, ক্ষমতাসীনরা আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বিচারকে প্রভাবিত করার এবং বিচারাধীন বিষয়ে বল্গাহীন মন্তব্য করছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা প্রসঙ্গে এ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কিছু বক্তব্যের উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, বিচারাধীন মামলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর এমন মানহানিকর উক্তির আমি কি জবাব দেব। তিনি প্রকাশ্যেই এমন উক্তি করেছেন। তার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) বিরুদ্ধেও দুর্নীতি ও আত্মসাতের মামলা ছিল। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর সেই মামলাগুলো একে একে প্রত্যাহার ও নিষ্পত্তি করা হয়েছে। কিন্তু আমরা কখনো এমন কুৎসিত মন্তব্য করিনি। সরকারি দলের নেতা-মন্ত্রীদের দিকে ইঙ্গিত করে খালেদা জিয়া বলেন, এখনও তাদের দুর্নীতি, লুটপাট ও বিদেশি ব্যাংকে বিপুল অর্থের সম্ভার দেশবাসী জানতে পেরেছে। তারাই আবার কাচের ঘরে বসে অন্যের দিকে ঢিল ছুড়ছে।
আদালতের বিচারকের উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়া বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার অভিযোগ ও আনুষঙ্গিক কাগজপত্র আপনি নিশ্চই দেখেছেন। আপনি নিশ্চই ইতিমধ্যে জেনেছেন যে জিয়াউর রহমানের নামে এতিমখানা স্থাপনের জন্য বিদেশ থেকে অনুদানের যে অর্থ এসেছিল তার একাংশ দিয়ে এতিমখানার কল্যাণ সাধিত হচ্ছে। সেই অর্থের বাকি অংশ ব্যাংকে গচ্চিত ছিল। এর প্রতিটি পয়সা রক্ষিত রয়েছে। ব্যাংকের সুদযুক্ত হয়ে এই টাকার পরিমাণ এখন আর এর একটি পয়সাও তছরুপ হয়নি। বিচারকের উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়া আরো বলেন, আমি বিশ্বাস করতে চাই আপনার এই আদালত আইনের দ্বারা পরিচালিত। এই আদালতে আমাদের উপস্থিতি ও হাজিরা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত আপনি স্বাধীনভাবে গ্রহণের অধিকার রাখেন বলেই আমি মনে করি। শাসক দলের নেতা, মন্ত্রীরা বিচারাধীন মামলার বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিয়ে বিচারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন, এই মামলার রায় কি হবে সেটিও তারা প্রকাশ্যে বলছেন। এই অপতৎপরতা ও বেআইনি প্রচারণা বন্ধে কোনো উদ্যোগ না থাকায় মামলায় ন্যায়বিচার নিয়ে আমাদের ও দেশবাসীর মনে প্রবল আস্থাহীনতা, ঘোর সন্দেহ ও সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে। প্রায় এক ঘণ্টা বক্তব্য শেষে পরবর্তী সময়ে বাকি বক্তব্য শেষ করতে বিচারকের কাছে অনুমতি চান খালেদা জিয়া। আদালত খালেদার আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ২৬শে অক্টোবর এ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।
আদালত অঙ্গনে খালেদার আইনজীবীদের হাতাহাতি
টিভি ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো নিয়ে হাতাহাতি, মারামারিতে জড়ালেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। গতকাল সকাল ১১টা ২০ মিনিটে রাজধানীর বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে জামিন নিতে আসেন খালেদা জিয়া। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় তাকে জামিন দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান। এরপর ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দিয়ে দুপুর ১টা ২৫ মিনিটের দিকে আদালত অঙ্গন ত্যাগ করেন খালেদা জিয়া। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই আদালতের কার্যক্রম সাংবাদিকদের অবহিত করতে বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে ক্যামেরার সামনে হাজির হন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। কিন্তু কে আগে সামনে থাকবে এ নিয়ে বেশক’জন তর্ক ও ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। এ সময় ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলমকে ধাক্কা দেন বিএনপিপন্থি আইনজীবী মির্জা মোহাম্মদ। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। ঢাকা বারের সভাপতির সঙ্গে এমন আচরণ মেনে নিতে পারেননি তার অনুসারীরা। একপর্যায়ে খোরশেদ আলমের অনুসারীরা আদালতের বারান্দার সামনে মির্জা মোহাম্মদকে মারধর করেন এবং বেশক’জন আইনজীবী হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। পরে সিনিয়র আইনজীবী ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ঢাকা বারের সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, ওই আইনজীবী সরকারের দালাল। ওর কত বড় সাহস! ঢাকা বারের সভাপতিকে ধাক্কা দিয়েছে। এজন্যই পরিস্থিতি এমন হয়েছে।