বল হাতে দারুণ সব কীর্তি গড়লেন হাসান আলী। অভিষেক ম্যাচে ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি করলেন ইমাম-উল-হক। আর এ দুইজনের দুর্দান্ত পারফরমেন্সে দুই ম্যাচ হাতে রেখে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিলো পাকিস্তান। আবুধাবিতে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কাকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ৩-০তে সিরিজ নিজেদের করে নিলো তারা।
পাকিস্তানের বিপক্ষে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা খারাপ ছিল না শ্রীলঙ্কার। বরং একপর্যায়ে ২ উইকেটেই ১১২ রান তুলে ফেলেছিল উপুল থারাঙ্গার দল।থারাঙ্গা নিজেই করেছেন ৬১ রান। লঙ্কান ইনিংসে এটাই ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। এরপর হাসান আলীর ঝড়ে এরপর রীতিমত লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় শ্রীলঙ্কার ইনিংস। বাকি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে কেউই হাফ সেঞ্চুরির দেখা পাননি। শেষদিকে থিসারা পেরেরার ৩৭ বলে ৩৮ রান করলে ২০৮ রানের সংগ্রহ দাঁড়ায় শ্রীলঙ্কার। পাকিস্তানের পক্ষে ৩৪ রানে ৫টি উইকেট নিয়েছেন হাসান আলী। শাদাব খান ২টি এবং জুনায়েদ খান আর মোহাম্মদ হাফিজ নিয়েছেন ১টি করে উইকেট।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন হাসান আলী। ভারতের বিপক্ষে ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে শিরোপা জয়ে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এবার স্বদেশী ওয়াকার ইউনুসের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন এই তরুণ বোলার। ২৪তম ওয়ানডেতে ৫১ উইকেট হলো হাসান আলীর, যা পাকিস্তানিদের মধ্যে দ্রুততম। এর আগে ২৭ ম্যাচে ৫০ উইকেটের রেকর্ডটা ছিল ওয়াকার ইউনুসের। এদিকে ২০১৭ সালে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারিদের তালিকায় এককভাবে শীর্ষে উঠে এসেছেন হাসান আলী। চলতি বছর মাত্র ১৭ ওয়ানডেতে নিয়েছেন ৪১ উইকেট। আবুধাবিতে এর পরের ইতিহাসটুকু লিখেছেন ইমামুল হক। চাচা ইনজামাম-উল-হক পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছেন, দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু ভাতিজা ইমামুল হকের চেয়ে ইনজামাম পিছিয়ে পড়লেন একটি জায়গায়। ওয়ানডে অভিষেকেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন ইমামুল। ইনজামামের যেটি পেতে খেলতে হয়েছিল ছয়টি ওয়ানডে। আবুধাবিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে ইমাম সেঞ্চুরি করেছেন। ১২৫ বল খেলে ১০০ রানের ইনিংসটি দিয়ে ইনজামামকে খুব করেই মনে করালেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। অভিষেকে সেঞ্চুরি করা ব্যাটসম্যানদের তালিকায় ইমামের অবস্থান ১৩তম। দ্বিতীয় পাকিস্তানি হিসেবে তিনি এই কীর্তি গড়লেন। এর আগে ১৯৯৫ সালে এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই গুজরানওয়ালায় ওয়ানডে অভিষেকে সেঞ্চুরি করেছিলেন সেলিম ইলাহী। ২১ বছর বয়সী ইমাম অবশ্য এই কীর্তি থেকে বঞ্চিত হলেও হতে পারতেন। সেঞ্চুরি থেকে ১১ রান দূরে থাকতে (৮৯) লাহিরু গামাগের বলে উইকেটের পেছনে নিরোশান ডিকভেলাকে ক্যাচ দিয়েছিলেন। কিন্তু টেলিভিশন আম্পায়ার রিচার্ড কেটেলবোরো রিপ্লে দেখে সেই ক্যাচ বাতিল করে দেন। ডিকভেলা বলটি ধরার আগে সেটি মাটি স্পর্শ করেছিল। অভিষেকে সেঞ্চুরির কীর্তিটা যেন ইমামের কপালে লেখাই ছিল। নতুন জীবন পেয়ে আর ১১টি রান তুলে নিতে কোনো বেগ পেতে হয়নি তার।
ওয়ানডে অভিষেকে সেঞ্চুরি করা ক্রিকেটাররা
নাম প্রতিপক্ষ সাল
ডেনিস অ্যামিস (ইংল্যান্ড) অস্ট্রেলিয়া ১৯৭২
ডেসমন্ড হেইনস (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) অস্ট্রেলিয়া ১৯৭৮
অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার (জিম্বাবুয়ে) শ্রীলঙ্কা ১৯৯২
সেলিম ইলাহী (পাকিস্তান) শ্রীলঙ্কা ১৯৯৫
মার্টিন গাপটিল (নিউজিল্যান্ড) ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০০৯
কলিন ইনগ্রাম (দক্ষিণ আফ্রিকা) জিম্বাবুয়ে ২০১০
রব নিকোল (নিউজিল্যান্ড) জিম্বাবুয়ে ২০১১
ফিল হিউজেস (অস্ট্রেলিয়া) শ্রীলঙ্কা ২০১৩
মাইকেল লাম্ব (ইংল্যান্ড) ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০১৪
মার্ক চ্যাপম্যান (হংকং) আরব আমিরাত ২০১৫
লোকেশ রাহুল (ভারত) জিম্বাবুয়ে ২০১৬
টেম্বা বাভুমা (দক্ষিণ আফ্রিকা) আয়ারল্যান্ড ২০১৬
ইমাম উল হক (পাকিস্তান) শ্রীলঙ্কা ২০১৭