ইতালির এক নারীকে গণধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা করেছেন এক বাংলাদেশি ফুল বিক্রেতা। ইতালির নর্দান তুস্কান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ খবর প্রকাশ করেছে ডেইলি মেইল। সম্ভাব্য এ গণধর্ষণের শিকার থেকে বেঁচে যাওয়া নারীর নাম গিয়া গুরানত্তা (২৫)। তিনি পেশায় ফটোগ্রাফার। তিনি জানান, রাত সাড়ে এগারোটার দিকে একা রাস্তায় হাঁটছিলেন।হঠাৎ করে ২৫ জন মাতাল দুর্বৃত্তের একটি দল তাকে ঘিরে ধরে । তারা তাকে তাদের পুরো দলের সঙ্গে যৌনকর্ম করার কুপ্রস্তাব দেয়। তিনি এ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তারা ক্ষেপে যায়। তারা তার দিকে থুতু ছুড়ে এবং নানারকম অশালীন কথা বলতে থাকে। একপর্যায়ে তিনি পালিয়ে যাবার চেষ্টা করলে মাতালের দলটি তাকে টেনেহিঁচড়ে একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে যেতে চেষ্টা করে। এ ঘটনা নজরে পড়ে সে এলাকায় বসবাসরত ৫৮ বছর বয়সী প্রবাসী বাংলাদেশি ফুল বিক্রেতা হোসেন আলমগীরের। তিনি একাই সাহসিকতার সঙ্গে মাতালের দলটিকে তাড়া করে তাদের কবল থেকে গিয়াকে উদ্ধার করেন। এ লোমহর্ষক ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা করে গিয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন সেদিন রাত সাড়ে এগারটায় আমি রাস্তায় একা হাঁটছিলাম। আমার রাতের শহরে হেঁটে বেড়াতে ভালো লাগে। কিন্তু সে রাতটি আমার জীবনের এক দুঃসহ রাতে রূপ নেয়। অকস্মাৎ ২৫ জন মাতালের একটি দল আমাকে ঘিরে ধরে। তারা আমাকে তাদের সবার সঙ্গে যৌনকর্মে লিপ্ত হবার আহ্বান জানায়। তারা বলতে থাকে, এসো ফুর্তি করি। আমরা ২৫ জন মিলে তোমাকে একটি স্মরণীয় রাত উপহার দেবো। ২৫ জন পুরুষের বাহুডোরে বাঁধা পড়ার আনন্দময় অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই আগে হয়নি তোমার। তুমি নিশ্চিতভাবে এটি উপভোগ করবে। এরপর দুর্বৃত্তের দলটি আমার হাত খামচে ধরে, চশমা খুলে নেয়। তারা আমাকে একটা নির্জন রাস্তা দিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। এমন সময় আলমগীর নামের এক ফুল বিক্রেতার নজরে পড়ে আমার এই দুরবস্থা। সে একাই আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে। তার সাহসি আক্রমণে দুর্বৃত্তের দলটি আমায় ফেলে পালাতে বাধ্য হয়। এ সময় আমি স্নায়বিক চাপে ভেঙে পড়েছিলাম। সহৃদয় আলমগীর আমাকে উদ্ধার করে একটি নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়। আমি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে এলে সে আমাকে প্রথমে খাবার খাওয়ায় এবং তারপর পরিষ্কার হবার জন্য তোয়ালে দেয়। ফিরে আসার সময় উপহার হিসেবে সে আমাকে একটি গোলাপ দেয়। গিয়া গুরানত্তা নামের এই নারী আরো বলেন, পৃথিবীকে ধন্যবাদ যে এর বুকে আলমগীরের মতো সাহসী মানুষেরা বিচরণ করে; যারা নিঃস্বার্থভাবে মানুষের বিপদে এগিয়ে আসে কোনো রকম প্রতিদানের আশা ছাড়াই। তার (আলমগীরের) নিষপাপ সুন্দর মুখটির কথা আমি কোনোদিনও ভুলবো না। পৃথিবীতে এখনো নারী জাগরণ এবং সচেতনতার প্রয়োজন স্পষ্ট প্রতীয়মান বলে মত দেন তিনি। উল্লেখ্য, হোসেন আলমগীর নামের ঐ প্রবাসী বাংলাদেশি ফুল বিক্রেতা ২০০৫ সাল থেকে ইতালিতে বসবাস করছেন।