গ্রুপের তিন ম্যাচে বাজে হারের পর পঞ্চম-ষষ্ঠ স্থান নির্ধারণী ম্যাচে চীনের বিপক্ষে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। ৩-১ গোলে পিছিয়ে পড়ে ওই ম্যাচে নির্ধারিত সময়ে ৩-৩ গোলে ড্র করে স্বাগতিকরা। পরে শুট আউটে ৪-৩ গোলে ম্যাচ জিতে এশিয়া কাপ নিশ্চিত করে তারা। ২৪ ঘণ্টার কম সময় ব্যবধানে জাপানের বিপক্ষে আবার সেই হতশ্রী স্বাগতিক শিবির। প্রবল বৃষ্টির মাঝে মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে বাংলাদেশ হারে ৪-০ গোলে। জাপানের কাছে বড় ব্যবধানে হারলেও এশিয়া কাপে এটিই বাংলাদেশের সেরা অর্জন।২০০৩ ক্লাসিফিকেশন রাউন্ড শুরু হওয়ার এই প্রথম ষষ্ঠ হয়ে এশিয়া কাপ শেষ করলো মাহবুব হারুনের শিষ্যরা। মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপের গত আসরে সপ্তম হয়েছিল বাংলাদেশ।
সকাল থেকে প্রবল বৃষ্টিতে নির্ধারিত সময়ে হয়নি চীন ওমানের মধ্যকার সপ্তম-অষ্টম স্থান নির্ধারণী ম্যাচ। এই ম্যাচ শুরু হয় রাত সাড়ে ৮টায়। বাংলাদেশ জাপান ম্যাচ শুরু হতেও দেরি হয়েছে ৪০ মিনিট। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে শুরুতে বলের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও গোলের সুযোগ বেশি তৈরি করে জাপান। অষ্টম মিনিটে প্রথম পেনাল্টি কর্নার ফিরিয়ে বাংলাদেশের ত্রাতা গোলরক্ষক আবু সাইদ নিপ্পন। প্রথম কোয়ার্টারের শেষ দিকে জাপানের কিতাজাতো কেন্তির হিট বাইরে দিয়ে যায়। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশকে ৩-১ গোলে হারানো জাপান দ্বিতীয় কোয়ার্টারের শুরুতে পাওয়া পেনাল্টি কর্নার কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যায় (১-০)। প্রথম হিট ফেরার পর ইয়ামাদা সোতার ফিরতি হিট ঠিকানা গোললাইনে থাকা ডিফেন্ডার মামুনুর রহমান চয়নের পাশ দিয়ে ঠিকানা খুঁজে পায়। ভুল পাসে ভরা বাংলাদেশের খেলাতে ছিলো না কোনো প্রাণ। বলার মতো কোনো আক্রমণও শানাতে পারছিল না স্বাগতিকরা। অধিনায়ক জিমি দু’ তিনবার বল দিলেও তা থেকে গোল করার মতো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি মিলন, মিমেরা। ৩৮ মিনিটে মুরাতা কাজুমার রিভার্সহিট ফিরিয়ে দেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক। চীনের বিপক্ষে তৃতীয় কোয়ার্টার পর্যন্ত ৩-১ গোলে পিছিয়ে ছিলো জিমি-চয়নরা। শেষ কোয়ার্টার দারুণ ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচটিই জিতে নিয়েছিল বাংলাদেশ। গতকাল জাপান ম্যাচ থেকেই অনুপ্রেরণা খুঁজছিল মাঠে উপস্থিত হাজার খানেক দর্শক। কোচ মাহবুব হারুনও আগের ম্যাচের উজ্জীবনী শক্তি কাজে লাগানোর অনুরোধ করেছিলেন শিষ্যদের। মাত্র ২২ ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি ম্যাচ হওয়াতে রিকোভারির সময় পায়নি খেলোয়াড়রা। তার উপর বৃষ্টির মধ্যে খেলতে হয়েছে জিমিদের। ম্যাচে হারার এটাও একটা বড় কারণ দেখছেন হারুন।
শেষ কোয়ার্টারে ১-০তে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। উল্টো চতুর্থ কোয়ার্টারে তিন গোল হজম করে হারের ব্যবধানই বাড়িয়েছে। এই কোয়ার্টারে ম্যাচের একমাত্র পেনাল্টি কর্নার পেয়েও তা থেকে গোল আদায় করতে পারেনি স্বাগতিকরা। চতুর্থ কোয়ার্টারের শুরুতে তানজি তানাকার বাড়ানো বলে কেনজির হিট ঠিকানা খুঁজে পায় (২-০)। ৪৯ মিনিটে কাজুমার ফ্রিহিটে নিশানা খুঁজে পেলে জাপানের ব্যবধান দাঁড়ায় ৩-০তে। ৫২ মিনিটে তানাকার শট নিপ্পন ফিরিয়ে দিলেও শেষ রক্ষা হয়নি। ওই তানাকাই বাংলাদেশের জালে শেষ পেরেককুটু ঠুকে দেন।
পাকিস্তানের কাছে ৭-০ গোলে হারে আসর শুরু করে বাংলাদেশ। পরের ম্যাচের ভারতের সঙ্গে হারে একই ব্যবধানে। গ্রুপের শেষ ম্যাচে জাপানের কাছে ৩-১ গোলে হেরে গ্রুপে চার দলের মধ্যে চতুর্থ হয় স্বাগতিকরা। স্থান নির্ধারণী ম্যাচে চীনকে হারিয়ে সরাসরি এশিয়া কাপে খেলার টিকিট কাটে বাংলাদেশ।