দ্বিতীয় মেয়াদে জাপানের প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন শিনজো আবে। রোববারের আগাম নির্বাচনের বুথফেরত জরিপে আবে’র নিরঙ্কুশ বিজয়ের আভাস মিলছে। বিবিসি ও জাপান টাইমসের খবরে বলা হয়, উত্তর কোরিয়াসহ আরো বেশকিছু ইস্যুতে জাপানের চলমান সংকট নিরসনে নেয়া উদ্যোগের সমর্থন বাড়াতে আগাম নির্বাচনের আয়োজন করেন আবে। এ নির্বাচনে বর্তমানে ক্ষমতাসীন আবের রাজনৈতিক জোট দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। এ বিজয়ের ফলে জাপানে সংবিধান সংশোধন করার পথ সুপ্রশস্ত হলো প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের জন্য। কিছুদিন আগে তিনি জাপানে আনুষ্ঠানিকভাবে সেনাবাহিনী গঠনের একটি অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন।এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। আবে বলেন যে, জাপানের প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করার জন্য এমন একটি উদ্যোগ নেয়ার প্রয়োজন। অবশ্য সমালোচকরা তার এ সিদ্ধান্তকে জাপানকে পুনঃসামরিকীকরণের নামান্তর বলছেন। বুথ ফেরত জরিপের পরে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আবে আরো বলেন, নির্বাচনে দেয়া প্রতিজ্ঞা অনুসারে আমার প্রথম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে- উত্তর কোরিয়াকে মোকাবিলা করা। এ জন্য শক্ত কূটনৈতিক অবস্থানের প্রয়োজন। টোকিওতে অবস্থানরত বিবিসি’র সাংবাদিক রুপার্ট উইংফিল্ড বলেন, সামপ্রতিককালের উত্তর কোরিয়া ইস্যু আবের জয়ে মূল অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে। দুইমাস আগে দুটি রাজনৈতিক কেলেংকারির জেরে আবের জনপ্রিয়তায় তুমুল ধস নামে।
কিন্তু সামপ্রতিককালে পিয়ংইয়ং-এর উদ্ধত আচরণে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। তারা জাপানের হোক্কাইডো দ্বীপের উপর দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে মারে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে নেয়া বেশকিছু সিদ্ধান্তের ফলে আবে তার হারানো জনপ্রিয়তা ফিরে পেতে সক্ষম হন। জাপানের স্থানীয় সংবাদ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, আগাম নির্বাচনে জাপানের সংসদের উভয়কক্ষের ৪৬৫ আসনের মধ্যে ৩১২ আসন পাওয়া আবের নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক জোটের হাতে এখন সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা আছে। আবে আগেও একবার যুদ্ধ পরিহার করা সংক্রান্ত আর্টিকেল-৯ নামের সংবিধানের একটি ধারা সংশোধন করার অভিমত ব্যক্ত করেছিলেন। এমনটা করা হলে তা হবে জাপানের সেনাবাহিনীকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়া, যেটি বর্তমানে আন্তঃপ্রতিরক্ষা বাহিনী হিসেবে স্বীকৃত। তিনি আরো বলেন, তিনি ২০২০ সালের মধ্যে সংবিধানের এই ধারা পরিবর্তনের বাস্তবায়ন করতে চান, যাতে তিনি বাদানুবাদপূর্ণ সময়ে যতবেশি সম্ভব লোকের সমর্থন পান। তবে, এ ধরনের সংশোধনী প্রস্তাব বাস্তবায়নের আগে রেফারেনডামের মধ্য দিয়ে গণভোটের আয়োজন করতে হবে। জনমত এর পক্ষে গেলে তবেই আবে এই সংশোধনীর প্রয়োগ করতে পারবেন। অবশ্য এ ধরনের কাজে আগেও সফল হয়েছেন তিনি। দু’বছর আগেও বিদেশের মাটিতে সৈন্য পাঠানোর ব্যাপারে তিনি জনসমর্থন আদায়ে সক্ষম হন। অবশ্য, বিবিসির সাংবাদিকদের মতে, জাপানের বিরোধী দলগুলোর অভ্যন্তরীণ কোন্দল আবের এই নিরঙ্কুশ বিজয় ত্বরান্বিত করেছে।