হামিম রাফি , নিউজ ডেস্কঃ সৌম্য সরকার, তাসকিন আহমেদ, এনামুল হক বিজয়, শুভাশীষ রায়, সানজামুল ইসলাম। বাংলাদেশ জাতীয় দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারই চিটাগং ভাইকিংসে খেলছেন। তারপরও বিপিএলে বাজে অবস্থায় রয়েছে দলটি। মিসবাহ উল হক, লুক রঞ্চি, দিলশান মুনাবিরা, সিকান্দার রাজা, লুইস রিসের মতো বিদেশি ক্রিকেটার নিয়েও ম্যাচের পর ম্যাচ হেরে চলছে চিটাগং কিংস। এত ভালো দল নিয়েও কেন হারছে ভাইকিংসরা, উত্তর জানা নেই সমর্থকদের!
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষে ৮ উইকেটে হেরে এবারের বিপিএল পর্বটা শুরু করে চিটাগং ভাইকিংস। পরের ম্যাচে অবশ্য রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ম্যাচটা জিতেছিল মিসবাহ উল হকের দল। পরের ম্যাচে খুলনা ও দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে আবার কুমিল্লার বিপক্ষে হারে চিটাগং ভাইকিংস। বৃষ্টির কারণে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচটা অবশ্য পরিত্যক্ত হয়েছে।
গত পাঁচ ম্যাচে চিটাগং ভাইকিংস দলের পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে, ব্যাটিংয়ে ‘ওয়ান ম্যান’ দলে পরিণত হয়েছে দলটি। একাই দলের ব্যাটিং দায়িত্ব সামলাচ্ছেন লুক রঞ্চি। আসরের সেরা ২০ রান সংগ্রাহকের তালিকায় ১৯তম স্থানে রয়েছেন দলের দ্বিতীয় সেরা রান সংগ্রাহক মিসবাহ উল হক!
এবারের বিপিএলে চিটাগং ভাইকিংসের জন্য ‘গলার কাঁটা’ হয়ে দাঁড়িয়েছেন অধিনায়ক মিসবাহ উল হক। টুর্নামেন্টে সবচেয়ে খারাপ স্ট্রাইক রেট এই পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানের ৯১.২০! প্রথম ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে করেছিলেন ১১ বলে মাত্র ৬ রান। সেই ম্যাচে চিটাগং ভাইকিংস করেছিল মাত্র ১৪৩ রান। পরের ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে করেন ৩২ বলে ৩১ রান। মিসবাহর ধীর ব্যাটিংয়ের কারণেই খুলনার বিপক্ষে ম্যাচটা হেরে যায় চিটাগাং। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের খুলনার ১৭০ রানের জবাবে ১৫২ রানে শেষ হয় চিটাগং ভাইকিংসের ইনিংস। সেই ম্যাচে ৩৭ বলে মাত্র ৩০ রান করেন মিসবাহ।
ভাইকিংসের দুর্দশার অপর নামগুলো হলো সৌম্য সরকার, এনামুল হক বিজয়, দিলশান মুনাবিরা ও লুইস রিস। চার ম্যাচে মাত্র ৩৮ রান করেন এনামুল! দেশি ভালো ক্রিকেটার না থাকায় তাঁকেই ম্যাচের পর ম্যাচ খেলাতে হচ্ছে চিটাগংকে। এরপরই রয়েছেন রিস। ইংলিশ এই ক্রিকেটার তিন ম্যাচে করেন ৪২ রান। স্ট্রাইক রেট ৯৭! মুনাবিরা ৪ ম্যাচে ৭০, সৌম্য সরকার ও সিকান্দার রাজা উভয়েই ৭৫ ও অধিনায়ক মিসবাহ করেছেন ৮৩ রান। দলের প্রথম পাঁচজন ব্যাটসম্যানের রানের অঙ্কটা দেখে চিটাগং ভাইকিংসের অবস্থাটা সহজেই অনুমান করা যাচ্ছে!
চিটাগংয়ের বোলাররা অবশ্য ভালো করছেন। তাসকিন আহমেদ, সানজামুল ইসলাম, শুভাশীষ রায়, দিলশান মুনাবিরা দুর্দান্ত বল করেছেন এবাবের আসরে। সবারই বোলিং গড়টা ২০ থেকে ২৩-এর মধ্যে। তাসকিন ছয়টি, সানজামুল পাঁচচ ও শুভাশীষ নিয়েছেন চার উইকেট। এ ছাড়া মুনাবিরা নিয়েছেন তিন উইকেট। বোলারদের সাফল্যটা চাপা গড়ে গেছে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায়।
বর্তমান অবস্থা থেকে দ্রুতই পরিত্রাণ পেতে হবে চিটাগং ভাইকিংসকে। বিশেষ করে ব্যাটসম্যানদের রানে ফেরাটা খুবই জরুরি। ওপেনিংয়ে সৌম্য সরকারকে হাল ধরতে হবে। এনামুলকেও নিজের নামের সুনাম রাখতে হবে। এ ছাড়া অধিনায়ক মিসবাহর, মুনাবিরা, রিসদের রানে ফেরাটা খুবই জরুরি চিটাগং ভাইকিংসের জন্য।
আগামীকাল শুক্রবার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে খুলনা টাইটানসের বিপক্ষে মাঠে নামবে চিটাগং ভাইকিংস। এই ম্যাচে দলের জয় চান ভাইকিংস সমর্থকরা। বিপিএলে অস্তিত্ব বাঁচাতে হলে ম্যাচটা জেতা খুবই দরকার চিটাগংয়ের। কী হবে আর হবে না সেটা জানতে শুক্রবারের ম্যাচে চোখ রাখছেন ভাইকিংস সমর্থকরা।