প্রয়াত প্রিন্সেস ডায়ানা ও প্রিন্স চার্লসের ছোট ছেলে প্রিন্স হ্যারির বিয়ে! বৃটিশ রাজপরিবারে বেজে গেছে বিয়ের বাদ্য। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়েছে, প্রিন্স হ্যারি বিয়ে করতে যাচ্ছেন মেগান মার্কেলকে। রাজপরিবারের বিয়ে মানে বৃটেনজুড়ে আনন্দ উৎসব। সেই রঙ যেন ছড়িয়ে পড়ছে সারা বৃটেনে। এরই মধ্যে গোপনে প্রিন্স হ্যারি ও মেগানের মধ্যে এনগেজমেন্ট হয়ে গেছে। এ খবরে সয়লাব বৃটিশ মিডিয়া। বিশেষ করে ট্যাবলয়েড পত্রিকাগুলোর পাতা উল্টালেই এর পক্ষে প্রমাণ মিলবে। পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা এ নিয়ে এক্সক্লুসিভ রিপোর্ট। কার চেয়ে কে বেশি রিপোর্ট করতে পারে তাদের মধ্যে এ নিয়ে যেন এক অঘোষিত যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। তবে প্রিন্স হ্যারি যাকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন তার সম্পর্কে সবারই কমবেশি জানা থাকার কথা। বিশেষ করে যারা হলিউডের ছবি দেখেছেন বা দেখেন তাদের কাছে তিনি পরিচিত মুখ। তিনি হলেন যুক্তরাষ্ট্রের অভিনেত্রী, মডেল, মানবাধিকার কর্মী র্যাচেল মেগান মার্কেল। প্রিন্স হ্যারির সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠার আগে তিনি বিয়ে করেছিলেন হলিউড প্রযোজক ট্রেভর এঙ্গেলসনকে (৪১)। তবে সে বিয়ে টেকে নি।
বিয়েরর পর ২০১৩ সালে তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। ওই সময়ে তাদের বিয়েকে টিকিয়ে রাখতে উভয় পক্ষ যারপরনাই চেষ্টা করে। মেগান চলে যান টরোন্টোতে। অবশেষে তাদের বিচ্ছেদ চূড়ান্ত রূপ নেয় ২০১৩ সালের আগস্টে। এ বছরের শুরুর দিকে মেগানের সৎভাই থমাস মারকেল জুনিয়র ওই বিয়ে বিচ্ছেদের জন্য হলিউডের চাপকে দায়ী করেন। এ বিষয়ে ওরিগন রাজ্যে বসবাসকারী মারকেল জুনিয়র বলেন, ট্রেভর খুব ভাল মানুষ। তাদের মধ্যে কি হয়েছিল তা আমি জানি না। তারা তো কয়েক বছর একে অন্যকে ছাড়া থাকতে পরতো না। এখন কেন তারা বিচ্ছেদে গেলেন তা পরিষ্কার নয়। আমার মনে হয় হলিউডে কাজ করার ক্ষেত্রে যে চাপ রয়েছে তা সামাল দিতেই তারা এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে। মেগানের এনগেজমেন্টের খবর যখন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে সোমবার তখন ট্রেভর এঙ্গেলসন লস অ্যানজেলেসে। তার সাবেক স্ত্রীর এনগেজমেন্টের খবরে কোনো বিকার দেখা যায় নি তার মধ্যে। তিনি কাজ করেন ‘আন্ডারগ্রাউন্ড ফিল্মস’-এ। মেগানের এনগেজমেন্ট বা বিয়ের খবরে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি।
২০০৪ সালে তার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাত হয় মেগানের। তখন মেগান মার্কেলের বয়স ২৩ বছর। এরপর ৬ বছর তারা চুটিয়ে বাধাহীন প্রেমে মজে যান। এরপর ২০১০ সালে তাদের এনগেজমেন্ট হয়। পরে বিয়ে হয়। বিয়ে করতে তারা আয়োজন করেছিলেন বোহেমিয়ান অনুষ্ঠান। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ওই বিয়ের অনুষ্ঠান করা হয়েছিল ওকো রাইওস-এ জ্যামাইকা ইন-এ। তবে অনুষ্ঠানের স্থায়িত্ব ছিল মাত্র ১২ মিনিট। আর বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা ছিল ৪ দিনের। বিয়ের অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মেগানের মা ডোরিয়া (৬১)। এ সময়ে ট্রেভর ও মেগানকে সমুদ্র সৈকতে হলুদ বিকিনি পরা অবস্থায় ক্যামেরাবন্দি হতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু ২০১৩ সালে এসে তারা দু’জনে চলে যান দু’মেরুতে। কিন্তু কেন তাদের মধ্যে এই বিচ্ছেদ এ বিষয়ে কেউই পরিষ্কার করে কথা বলেন নি। যে মেগানের প্রেমে ডুবে ছিলেন বিয়ের আগে ৬ বছর তারই এখন এনগেজমেন্ট হয়েছে প্রিন্স হ্যারির সঙ্গে, এ খবর শুনেও তিনি রূঢ় হাসেন। লস অ্যানজেলেসের অফিসে পৌঁছে আইস কফিতে ঠোঁট ভিজান। অবশ্য পরনে তার কালো পোশাক। স্কিনি ট্র্যাক প্যান্ট। আর চোখে রে-ব্যান ব্রান্ডের সানগ্লাস। সোমবার এভাবে অফিসে পৌঁছে হাত নাড়েন। কিন্তু প্রিন্স হ্যারি-মেগান মার্কেল এনগেজমেন্ট? নো কমেন্ট। উল্লেখ্য, ট্রেভরের সঙ্গে মেগানের বিচ্ছেদের পর তিনি আবার কানাডার সেলিব্রেটি শেফ কোরি বিটিয়েলিওর সঙ্গে ডেটিং করেন। তারপর ২০১৬ সালের মে মাসে প্রিন্স হ্যারির সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন বন্ধু মিশা নোহু। এরপর গোপনে ৬ মাস তারা দু’জন চুটিয়ে প্রেম করতে থাকেন। অবশেষে গত নভেম্বরে তাদের এই লুকোচুরির খবর প্রকাশ পায়। আর তারই এখন স্বীকৃতি দিচ্ছে বৃটিশ রাজপরিবার। আগামী বছর তাদের বিয়ে। সে উপলক্ষ্যে লস অ্যানজেলেসের বাড়ি থেকে লন্ডনে উড়ে আসতেই হবে মেগানের মা ডোরিয়াকে।